ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বৃহস্পতিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৪ কার্তিক ১৪৩২
ই-পেপার বৃহস্পতিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




মুক্তিযুদ্ধপন্থি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির অভ্যূদয় এখন সময়ের দাবি
মোঃ কামরুজ্জামান কামরুল
প্রকাশ: বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫, ২:১৪ পিএম  (ভিজিটর : ৪১৯)
          
বাতাস ছাড়া যেমন প্রাণীকুল বাঁচে না, রাজনীতি ছাড়াও দেশ বাঁচে না। আর রাজনীতি ধারণ ও চর্চা করে রাজনৈতিক দল। অরাজনৈতিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী রাজনীতি চর্চা করতে গেলে বিপর্যয় ঘটে।   বাংলাদেশ এখন রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে একটি অরাজনৈতিক গোষ্ঠি। মূল ধারার দলগুলো তাদের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তারা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে। ক্ষমতাসীন অরাজনৈতিক গোষ্ঠিটি রাজনীতি চর্চার চেষ্টা করছে। ফলে চারিদিকে বিপর্যস্ত অবস্থা। তারা তাদের কর্মপরিধি এতোটাই বাড়িয়ে ফেলেছে যে, সব তালগোল পাকিয়ে গেছে। সাধারন মানুষ হতাশ, আতঙ্কিত এবং রাজনীতিবিমূখ হয়ে পড়েছে। সমাজ, রাজনীতি, অর্থ-বানিজ্য, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি - সর্বত্রই বিশাল শূন্যতা বিরাজ করছে। 

বিদ্যমান নেতৃত্ব সমাজের কোন আকাংখাই পূরন করতে পারছে না। মানুষের মনের ভাষা কেউ বুঝতে পারছে না। গনআকাংখা আস্থায় নিয়ে নতুন উদ্যোগের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে এই শূন্যতা পূরন হতে পারে। এটাই এখন ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তা, সময়ের দাবি। এমন কিছু না হলে দেশের ভবিষ্যৎ তমসাচ্ছন্ন। এই উপমহাদেশে এমন ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তা ইতিপূর্বে একাধিকবার দেখা দিয়েছিল। সেই প্রয়োজন মেটাতে গৃহিত বেশির ভাগ উদ্যোগ সফলও হয়েছে। 

ব্রিটিশ ভারতে উপমহাদেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে কোন রাজনৈতিক শক্তি ছিল না। সেই শুন্যতা পুরনের জন্য ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। অবসরপ্রাপ্ত আই সি এস এ্যালান অক্টাভিয়ান হিউমের নেতৃত্বে জাতীয় কংগ্রেসে সমবেত হয়েছিলেন ভারতের অভিজাত শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ। তারপর এই দল অতি দ্রুত বিস্তার লাভ করতে থাকে এবং বৃটিশ ভারতের জনগনের একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই দল তখন সাময়িকভাবে ভারত উপমহাদেশের রাজনৈতিক শুন্যতা পূরণে সক্ষম হয়েছিল।

 ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে হিন্দু, মুসলিম সকলে থাকলেও কিছুদিনের মধ্যেই এলিট শ্রেণীর মুসলমান সম্প্রদায় ভাবতে থাকলো, তারা বঞ্চিত হচ্ছে, তাদের নিজেদের একটি দল দরকার। ফলে ১৯০৬ সালে ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লা বাহাদুরের নেতৃত্বে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর খুবই অল্প সময়ের মধ্যে মুসলিম লীগ সর্ব ভারতীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী দলে পরিনত হয়। এই উদ্যোগও ছিল তখনকার বাস্তবতায় রাজনৈতিক শুন্যতা পূরণ। 

সাতচল্লিশের ভারত ভাগের পর পুর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালী জনগণ বঞ্চনার শিকার হলো পশ্চিম পাকিস্তানিদের দ্বারা। তখন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সামসুল হক, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ শে জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে নতুন একটি দলের জন্ম হয়। পরবর্তিতে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে অসাম্প্রদায়িক চরিত্র ধারণ করতে নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ উঠিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ নাম ধারন করে এই দলটি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই দল তৎকালীন পূর্ব বাংলার বাঙালী জনগনের অভূতপূর্ব সমর্থন লাভ করে। প্রতিষ্ঠার মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় যুক্তফ্রন্টের অংশীদার হিসেবে আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপুর্ন স্থান করে নেয়। আওয়ামী লীগের জন্মও ছিল তৎকালীন বাস্তবতায় সফলভাবে রাজনৈতিক  শূন্যতা পূরণ। এই দলটির নেতৃত্বে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের আইউব বিরোধী গণঅভ্যুত্থানসহ অজস্র আন্দোলন সংগঠিত হয়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে এবং আজও আওয়ামী লীগ দেশের অন্যতম প্রধান দল। 

সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা এক শ্রেণীর মানুষের চিন্তাধারাকে আওয়ামী লীগ ধারণ করতে পারছিল না। তৈরি হলো নতুন বাস্তবতা। তখন ১৯৫৭ সালের ২৫ জুলাই ঢাকার রুপ মহল সিনেমা হলে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে প্রগতিশীল শক্তির সমন্বয়ে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠিত হয়। ন্যাপ গঠনের এক বছরের মধ্যে দেশে সামরিক শাসন জারি হয়। তারপরও এক বিশাল জনগোষ্ঠী ন্যাপের পতাকাতলে জড়ো হয়। ন্যাপ হয়ে ওঠে দেশের অন্যতম শক্তিধর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে এটিও ছিল একটি সফল উদ্যোগ।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনায় সীমাহীন ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। তখন কোন কার্যকর বিরোধী দল না থাকায় দেখা দেয় প্রচন্ড রাজনৈতিক শূন্যতা। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাড়ে দশ মাসের মাথায় ১৯৭২ সালের ৩১শে অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল - জাসদ জন্ম লাভ করে। জন্মের পর উল্কা গতিতে দলটি সম্প্রসারিত হয়। দেশের যুব সমাজ জাসদের পতাকাতলে এক হয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঐতিহাসিক প্রয়োজনে রাজনৈতিক শূন্যতা পুরনের এক অনন্য উদাহরণ ছিল জাসদ গঠন।

জেনারেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি গঠিত হয় ১৯৭৮ সালে ১লা সেপ্টেম্বর। যদিও রাষ্ট্রীয় শক্তির তত্বাবধানে বিশেষ করে সামরিক পৃষ্ঠপোষকতায় দলটির জন্ম, তবুও বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করে এবং অদ্যাবধি দেশের অন্যতম শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে। রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণকল্পে জন্ম নেওয়ায় বিএনপি সফল এবং টেকসই দলে পরিনত হয়।

উদাহরন আর দীর্ঘ করবো না। আমার মূল বক্তব্য হলো, উল্লেখিত দলগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রাজনৈতিক শুন্যতা পুরনে - সময়ের দায় মেটাতে। অবশ্য দায় কতটুকু মেটাতে পেরেছে তা ইতিহাস বিচার করবে। 

কখনো কখনো দেশে বিপুল কর্মি-সমর্থকবেষ্টিত বড় বড় দল থাকা সত্বেও সমাজে রাজনৈতিক শুন্যতা তৈরী হতে পারে। যদি বিদ্যমান দলগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ গণমানুষের আকাংখা ধারন করতে ব্যার্থ হয়, তখন মানুষ বিকল্প পথ খোঁজে। আবার একথাও সত্য যে, জনগনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট কোন দল যতই জনপ্রিয় হোক না কেন, সাধারন মানুষের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হলে অর্থাত সঠিক রাজনীতি দিতে না পারলে জনগন তাদের প্রত্যাখ্যান করে।  এক্ষেত্রে মুসলিম লীগ, ভাসানী ন্যাপ, জাসদ এবং জাতীয় পার্টির উদাহরন প্রাসঙ্গিক।

মাঝে এরশাদের ৯ বছরের শাসনামল বাদ দিলে বাংলাদেশ শাসিত হয়েছে দ্বি-দলীয় রাজনীতিতে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি রাজনীতির ময়দানকে যুদ্ধের ময়দান বানিয়ে ছেড়েছিল। দুই দলের দুই পরিবারতান্ত্রিক নেতৃত্ব দেশে নির্বাচিত সংসদীয় একনায়কতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছিল। ’৯০-এর গনঅভ্যুত্থানের পর গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার একটি চমৎকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের ১১ মাসের শাসনামলে গনতন্ত্রের অসাধারণ কিছু নমূনাও দেখা গিয়েছিল। পরবর্তিতে পালাক্রমে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির শাসনামলে সেসব সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে গেছে। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন, ১৮ সালের রাতের নির্বাচন এবং ২৪ সালের ডামি নির্বাচণের পর গনতন্ত্রের চুড়ান্ত মৃত্যুদশা উপস্থিত হয়েছিল। এরপর এলো ২৪ সালের জুলাই গন অভ্যুত্থান। গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি চমৎকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সে সম্ভাবনাও তিরোহিত হতে চলেছে। বহু গণসংগ্রামের ঐতিহ্যে মহিমান্বিত বাংলাদেশ এখন দূর্নীতির উর্বরভূমি। ভঙ্গুর অর্থনীতি, ভেঙ্গে পড়া আইন-শৃংখলা আর অপরাজনীতির নোংরা খেলায় জর্জরিত আজকের বাংলাদেশ। নতুন উৎপাত হিসেবে দেখা দিয়েছে ইউনুস গংয়ের নেতৃত্বে একদিকে বিরাজনীতিকরণের অপচেষ্টা, অপরদিকে একাত্তরের গনহত্যাকারী জামাত ইসলামের নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির আস্ফালন। এই উভয় গোষ্ঠী একাত্তরের স্বাধীনতাকে ম্লান করে দিতে চায়। অসাম্রদায়িক বাংলাদেশ, হাজার বছরের বাঙ্গালীর কৃষ্টি – সংস্কৃতি, উদারনৈতিক মানবিক বাঙ্গালিত্বের চেতনাকে ধারন করে বজ্র হুংকারে এই অপশক্তিকে রেখে দেওয়ার মতো কোন রাজনৈতিক শক্তি এখন মাঠে অনুপস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সরকারী আদেশে নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগের অনেক নেতিবাচক দিক থাকলেও, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাঙ্গালীর কৃষ্টি – সংস্কৃতি রক্ষায় তাদের বিকল্প শক্তি এদেশে এখনো তৈরি হয়নি। ২০২৪-এর গনঅভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এটাই প্রমানিত।

তার মানে, আওয়ামী লীগ না থাকলে মুক্তিযুদ্ধের অর্জন বিপন্ন হবে? এক্ষেত্রে সারা জীবন ক্ষমতার বাইরে থাকা মুক্তিযুদ্ধপন্থি দলগুলি একজোট হয়ে একটি সাচ্চা গনতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে পারতো। আজ ঐতিহাসিকভাবে সেই দায়িত্ব তাদের উপর বর্তেছে। সময় দ্রুত বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দায়িত্ব পালনের কোন নমুনা এখনও দৃশ্যমান নয়। উল্লেখিত এই দলগুলি সবসময় অভিযোগ করে যে, মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন ও কৃতিত্ব আওয়ামী লীগ একাই ভোগ করে। এক্ষেত্রে বলা যায়, বর্তমানে তো আওয়ামী লীগ দৃশ্যমান নেই। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি রাজনীতির মাঠে একচ্ছত্রভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন আপনারা দায়িত্ব নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো রক্ষার জন্য মাঠে শক্তি প্রদর্শন করুন। যদি তা করতে পারেন, তাহলে আওয়ামী লীগ আর ভবিষ্যতে আপনাদের ভাষায় মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতার একক মালিকানা দাবি করতে পারবে না। আর যদি না পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে আপনাদেরও মুক্তিযুদ্ধপন্থি শক্তি শক্তি হিসেবে রাজনীতি করার পরিসর একেবারেই সংকুচিত হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি। একটি বিতর্কিত সরকারী আদেশে এমন একটি দলের কার্যক্রম আজীবন নিষিদ্ধ করে রাখা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। এই বিপর্যয় কাটিয়ে আওয়ামী লীগকে ফিরে এসে যদি মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হয়, তাহলে আপনাদের রাজনীতি করার পরিসর কোথায় থাকে? এ কথাগুলো ১৪ দলভুক্ত শরিকদের জন্যও প্রযোজ্য। ১৪ দলের শরিকদের উপরতো কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। তো আপনারা কেন পথে নামেন না? অফিসে বসে চা-পুরি খাওয়ার ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করার নাম কি রাজনীতি?     

বাঙ্গালী জাতির আজীবনের সর্ববহৎ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ। কিন্তু অর্জন আজ বিপর্যস্ত। দেশের সংখ্যালঘিষ্ঠ একটি রাজাকার গোষ্ঠী ছাড়া সমগ্র জনগণ মুক্তিযুদ্ধপন্থি। সংখ্যাগরিষ্ঠ এই জনতা কোন অবস্থাতেই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে ধবংস হতে দেবে না। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে জনগন মনেপ্রাণে মুক্তিযুদ্ধপন্থি একটি বিকল্প গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির অভ্যূদয় কামনা করছে। কে নেতৃত্ব দেবে সেই শক্তির, তা জনগণের বিবেচ্য নয়। বিবেচ্য বিষয় হলো, মুক্তিযুদ্ধপন্থি, অসাম্রদায়িক, দেশপ্রেমিক, সৎ, কর্মপটু, আধুনিকমনস্ক একটি দল গঠিত হয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। সেই অনাগত শক্তির আত্নপ্রকাশ এখন সময়ের দাবি।

দেশে এখন অতি প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন পরিকল্পনা, মানবাধিকার নিশ্চিতকরন, সুসাশন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন, বেকার সমস্যা দূরীকরণ -  প্রভৃতী আশু করণীয় কাজগুলো করা। রাজনৈতিক শুন্যতা পূরণ না হলে এই কাজগুলো করা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক শুন্যতা রাজনীতি দিয়েই পূরন করতে হয় - অন্য কিছু দিয়ে নয়। তাই এখন দরকার জনগনের একটি রাজনৈতিক দল। প্রশ্ন হলো, এই সময়ের দবিটি পুরন করতে কেউ কি এগিয়ে আসবেন? উত্তর হলো, আসতেই হবে! শুন্যতা কখনো স্থায়ী হয় না। পুরন হতেই হবে। সে মহা আয়োজন হয়তো সবার অলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

দেশের নষ্ট রাজনীতির ঘূর্নাবর্তে পড়েও কিছু রাজনীতিবিদ এখনও সকল পঙ্কিলতা থেকে নিজেদের দুরে রেখেছেন। জাতি তাঁদের ভূমিকা দেখতে চায়।  সঙ্কীর্ন ব্যাক্তিগত বা গোষ্ঠিগত স্বার্থ উপেক্ষা করে জনগণকে আলোর পথ দেখানোর নেতৃত্ব জনতার মাঝেই আছে। সন্তর্পনে কান পাতলে পায়ের আওয়াজ কিন্তু পাওয়া যায়! রাজপথের সভা-শোভাযাত্রা আর ঠান্ডা ঘরে অনুষ্ঠিত সেমিনার-গোলটেবিলের মেজাজ ক্রমেই পাল্টে যাচ্ছে। অসীম ধৈর্য্য আবার হঠাৎ ধৈর্য্যহানীর সুনাম এবং দুর্নাম উভয়ই আছে বাঙ্গালীর। বেঁচে থাকার দাবি প্রতিষ্ঠা করতে ধৈর্য্যহানী দুর্নামের বিষয় নয় বরঞ্চ সুনামের! আলোর পথের যাত্রীরা কখনো অন্ধকারে বসবাস করতে পারে না। সেই আলোকিত মানুষগুলো দেশকে আলোকিত করতে, সমাজকে আলোকিত করতে বেরিয়ে আসবে জনারণ্যে অচিরেই। শুধু অপেক্ষা ক্ষনকাল।  

লেখকঃ সাংবাদিক, কলামিস্ট







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : bhorerdakonline@gmail.com, adbhorerdak@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : bhorerdakonline@gmail.com, adbhorerdak@gmail.com