ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বৃহস্পতিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৪ কার্তিক ১৪৩২
ই-পেপার বৃহস্পতিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




শিক্ষকতা : একটি ঊন-পেশার ইতিবৃত্ত
মো. আলমগীর কবির
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:৩৭ পিএম আপডেট: ০৭.১০.২০২৫ ১০:৪৭ পিএম  (ভিজিটর : ৪৯৮)
কোনো একটি পেশা (Profession) এবং সেই পেশায় নিযুক্ত ব্যক্তি (Professional) — এ দুটি ধারণা এক নয়। কিন্তু আমাদের দেশে এই দুটি বিষয় প্রায় অভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়; বিশেষত, শিক্ষক ও শিক্ষকতা পেশার ক্ষেত্রে। ফলে আমরা অনেক সময় শিক্ষকের ব্যক্তিগত মর্যাদা ও শিক্ষকতা নামক পেশার মর্যাদাকে আলাদা করে দেখতে পারি না।

আমরা সাধারণত কোনো পেশার মর্যাদাকে মাপি কয়েকটি মানদণ্ডে— ঐ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তির আর্থিক সুবিধা, ক্ষমতাকাঠামোয় তার অবস্থান, নিজস্ব অধিক্ষেত্র বা কর্মপরিধিতে নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের এখতিয়ার এবং সেই অর্থ, ক্ষমতা ও এখিয়ার থেকে উৎসারিত সামাজিক-রাষ্ট্রীয়  সম্মান। এই মাপকাঠিতে যদি আমরা ব্যক্তি-শিক্ষক ও পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে মূল্যায়ন করি, তবে একটি স্পষ্ট ব্যবধান চোখে পড়বে। বর্তমান প্রবন্ধে সেই ব্যবধান অনুসন্ধানের প্রয়াস নেওয়া হবে। অতীত ও বর্তমানকে একত্রে বিবেচনায় এনে আমরা দেখার চেষ্টা করব, পেশা হিসেবে শিক্ষকতা কতটা মর্যাদাবান হতে পেরেছে এবং সময়ের প্রবাহে তা কতটা ক্ষয়প্রাপ্ত বা বিকৃত হয়েছে। থাকবে দেশ ও জাতির কল্যাণে ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে ইঙ্গিত। 

প্রবন্ধের শিরোনামে ব্যবহৃত ‘ঊন-পেশা’ ধারণাটি ধার করা হয়েছে ডেভিড লিভিংস্টোন স্মিথ-এর 'Less than Human' গ্রন্থ থেকে। সেখানে স্মিথ দেখিয়েছেন, কীভাবে শ্রেণি-বৈষম্য বা বর্ণ-বৈষম্যকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য মানুষ অন্য মানুষকে — বা একটি গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীকে — মানবেতর বা বিমানবিকীকরণ (De-humanization) করে তোলে। এই প্রক্রিয়ায় মানুষকে ‘ঊন-মানুষ’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

আমরা এই প্রবন্ধে সেই ধারণাটিকেই প্রতিসংযোগ করব শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে। দেখানোর চেষ্টা করব, অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত নানা প্রক্রিয়ায় — কখনো সচেতনভাবে, কখনো অজ্ঞাতসারে — কীভাবে শিক্ষকতা একটি  পূর্ণাঙ্গ Profession হিসেবে বিকশিত হওয়ার বদলে  De-professionalization-এর দিকে অগ্রসর হয়েছে।

প্রাচীন বাংলায় শিক্ষাব্যবস্থা ছিল গুরু-শিষ্য পরম্পরাকেন্দ্রিক। গুরুগৃহে গুরুর আশ্রয়ে শিষ্য শিক্ষা লাভ করত। বিনিমযয়ে শিষ্য তার গুরুর গৃহস্থালি কাজ, কৃষি কাজ করে দিত। শিক্ষা সমাপনে 'গুরুদক্ষিণা' ছিল গুরুভক্তির নিদর্শন বা উপহারস্বরূপ কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। কিন্তু শিক্ষকতা বেতনভিত্তিক কোনো প্রথাবদ্ধ পেশা ছিল না। প্রাচীন বৈদিক সাহিত্য, মহাভারত, রামায়ণ, উপনিষদ ঘেটে শিক্ষকতার যে চিত্র পাওয়া যায় তা হল শিক্ষকতা একটি ব্রত; অর্থাৎ  শিক্ষা দান একটি পবিত্র দায়িত্ব, আধ্যাত্মিক কর্ম। শিক্ষকরা জাগতিক বিনিময় প্রত্যাশার চেয়ে আধ্যাত্মিক প্রাপ্তিকে প্রাধান্য দিতেন। 

তবে জাগতিক প্রাপ্তি যে একেবারে ঘটতো না তা নয়। গুরুকে রাখা হতো দেবতার আসনে। যেমন, উপনিষদে বলা হয়েছে, "মাতৃ দেবো ভব, পিতৃ দেবো ভব, আচার্য দেবো ভব।" অর্থাৎ মা, বাবা ও আচার্য (গুরু) দেবতুল্য। ঋগ্বেদে গুরুভক্তিকে ধর্মীয় আচার হিসেবে দেখানো হয়েছে। গুরুর প্রতি গুরুদক্ষিণার কৃতজ্ঞতায় আমৃত্যু আবদ্ধ থাকা শিষ্যের পবিত্র দায়িত্ব। 

মহাভারত-রামায়ণে আশ্রম কেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় দেখা যায়, গুরুরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পেতেন। রাষ্ট্রীয় নীতি গ্রহণে তাদের অংশগ্রহণ ছিল কাঙ্ক্ষিত ও সমাদৃত।  
মুসলিম আমলে গুরুভক্তি বা শিক্ষকের মর্যাদার ধারণায় কিছুটা পরিবর্তন আসে৷  আগের দেবতা তুল্যের জায়গা থেকে সরে আসে। তবে শিক্ষকতা পেশাকে আগের মতো ধর্মীয় ও আধ্যাতিক দায়িত্ব হিসেবেই দেখা হতো।  

মুসলিমদের মক্তব ও হিন্দুদের টোল পদ্ধতিতে শিক্ষাদান প্রচলিত হয়। এখানেও শিক্ষকতা বেতনভিত্তিক কাঠামোবদ্ধ কোনো পেশা নয় বরং পরকালীন প্রাপ্তির প্রত্যাশায় পবিত্র দায়িত্ব পালন। ছাত্রদের 'মুষ্টিচাল', দান, ওয়াকফ বা বিত্তশালীর দয়া দাক্ষিণ্য এবং শুধু থাকা-খাওয়ার বিনিময়ে মৌলভী মুন্সী, পন্ডিতরা শিক্ষকতার 'মহান দায়িত্ব' পালন করতেন। সুত্র: উইলিয়াম অ্যাডামের রিপোর্ট (১৮৩৫-৩৮)। সুতরাং দেখা যায়. প্রাচীন ও মধ্যযুগে শিক্ষকতা পেশা হিসেবে স্বীকৃত ছিল না বা স্বীকৃতির প্রয়োজনও ছিল না।

 ইংরেজ আমলে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, হিন্দু কলেজ এবং পূর্ববঙ্গে ঢাকা কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষকতা বেতনভিত্তিক পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সূচনা হয়। কিন্তু দেখা যায় ইংরেজ শিক্ষকরা শিক্ষকতাকে  পেশা হিসেবে নিলেও বাঙালি শিক্ষকরা নিজেদের পন্ডিত বলে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। তারা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে না নিয়ে আগের পরম্পরায় নতুন সংযোজন সমাজসংস্কারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রামমোহনরা শিক্ষকতাকে মহান দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেন। তদের কাছে বৈষয়িক প্রাপ্তি মুখ্য নয়, বরং সমাজের আধুনিকায়ন ও সমাজ পরিবর্তনই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। 

পাকিস্তান আমলের শেষের দিকে শিক্ষকরা জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দেশ মাতৃকাকে বাঁচানোকে প্রাধান্য দেন। গড়ে তোলেন বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। শিক্ষকতা পেশা না হয়ে হয়ে ওঠে রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচারের হাতিয়ার। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের শিক্ষকদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেতে থাকে, একই সাথে কমতে থাকে আগের দেবতা তুল্য সম্মান-মর্যাদা। 

এর পরিবর্তে গ্রামীণ সমাজে শিক্ষকরা হয়ে ওঠেন পরামর্শদাতা, বিবাদ মীমাংসাকারী, বিপদে সাহায্যকারী ও সদাচারের প্রতীক। ক্রমে শিক্ষকদের এই বৈশিষ্ট্যগুলো রাজনীতিতে তাকে জনপ্রিয় করে তোলে। ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে মাস্টার ও জাতীয় রাজনীতিতে অধ্যাপক পদবী গুরুত্ব পেতে থাকে। মনে হতে পারে শিক্ষকদের রাজনৈতিক মাঠে আগমন শিক্ষকতা পেশার শ্রীবৃদ্ধি করেছে। কিন্তু একটু গভীর দৃষ্টিতে দেখলে দেখা যাবে, এতে পেশা হিসেবে রাজনীতির গ্লোরিফিকেশন হয়েছে; শিক্ষকতার নয়। ব্যক্তি-শিক্ষক রাজনীতির কল্যাণে সমাদ্রিত হলেও শিক্ষকতা পেশায় এর কোনো আঁচ পড়েনি। ফলে ক্রমে মাস্টারমশাই একটি তাচ্ছিল্যের সম্বোধনে রূপ নেয়। 

আবার প্রশাসনিক দিক দিয়ে শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ডে ডিজি, ডিরেক্টর, চেয়ারম্যান হিসেবে কিছু শিক্ষকের পদায়নের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি শিক্ষক থেকে প্রশাসক হয়েছেন। অর্থাৎ কিছু ব্যক্তি অপেক্ষাকৃত ছোট, ধূসর, মলিন পেশা শিক্ষকতা ছেড়ে বড়, উজ্জ্বল, চাকচিক্যময়, মর্যাদাপূর্ণ পেশা প্রশাসনে গেছেন। এতে শিক্ষকতা পেশার মর্যাদা বাড়েনি। শিক্ষকতা তার অমর্যাদাকর কর্মপরিবেশে মলিন, দীন, তাচ্ছিল্যপূর্ণ পেশা হিসেবেই রয়ে গেছে। (বলে রাখা ভালো, শিক্ষাসংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারণী জায়গায় বা শিক্ষাপ্রশাসনে শিক্ষকদের থাকা উচিত কিনা তা ভিন্ন আলোচনা। আমাদের আলোচনার লক্ষ্য পেশা হিসেবে শিক্ষকতার অবস্থান নির্ধারণ।)

অপরদিকে পুঁজিবাদের বিকাশে গ্রামীণ সমাজে পুঁজিপতিদের কদর বাড়তে থাকে। অর্থের চাকচিক্যে সমাজের পরামর্শদাতা, বিবাদ মীমাংসা, সাহায্যকারীর চেয়ারে বসতে থাকে পুঁজিপতিরা। ফলে রাজনীতিতেও প্রাধান্য পেতে থাকে অর্থবিত্ত। পুঁজিপতিদের চাকচিক্যের বিপরীতে অর্থকষ্টে জর্জরিত, রোগে-শোকে ক্লান্ত, মলিন চেহারার মাস্টারমশাইরা হয়ে ওঠেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। শিক্ষকতা হয়ে ওঠে একটি অনুন্নত, ছোট পেশা বা ঊন-পেশা। আজ আদর্শ শিক্ষক শব্দগুচ্ছের প্রতিরূপ কল্পিত ছবিটি (Signified) হল রোগে-শোকে অর্থকষ্টে ভুগতে থাকা দরিদ্র অথচ নীতিবান এক অতি নম্র মানুষ। 

অন্যদিকে অতীত দেবতুল্য 'ব্রতী', 'আধ্যাত্মিক নেতার' ধূসর স্মৃতি শিক্ষককে তাড়া করে বেড়ায়। ফলে শিক্ষক দিবসে তাকে সম্মানের ভাঙ্গা থালা হাতে বসতে হয় ক্লাসে, সভা-সেমিনারে, চায়ের দোকানে। এদিন অন্য পেশার লোকেরা 'ব্রত', 'মানুষ গড়ার কারিগর', 'মহান পেশা' ইত্যাদি তকমায় নিজ নিজ পূর্বোক্ত 'আদর্শ শিক্ষকের' নাম ধরে ধরে শিক্ষকতাকে মহিমান্বিত করতে চান। সভা-সেমিনারে আদ্র, কম্পিত কন্ঠে বর্ণিত হতে থাকে ছাত্রকে দিয়ে পায়ে অজুর পানি ঢালানোর অপরাধে বাদশা আলমগীরের দরবারে ভয়ার্ত, আতঙ্কিত, নতমস্তক শিক্ষকের দয়াবান, আদর্শ পিতার একান্ত দয়ায় প্রাপ্ত মর্যাদার কাহিনি।

 টিভি, সোশাল মিডিয়ায় বহুজাতিক কোম্পানির বিজ্ঞাপনে দেখা যেতে থাকে মলিন পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা রোগে-শোকে, অর্থকষ্টে ভুগতে থাকা পৌঢ় 'আদর্শ শিক্ষককে' কোট-টাই পরা সুদর্শন সাবেক ছাত্র দামি গাড়ি থেকে নেমে সালাম-প্রণাম করছে। এসব দেখে, শুনে লোকে এবং শিক্ষকরা আহ্লাদিত হয়ে বলে বলে ওঠেন, এই না হলো শিক্ষকের সম্মান! কিন্তু এতে পেশা হিসেবে শিক্ষকতা কি মর্যাদা পেয়েছে? যদি পেত তাহলে আমরা পূর্বোক্ত দামি গাড়িতে চড়া ছাত্রটিকে শিক্ষক হিসেবে কল্পনা করতে পারতাম। আমাদের বিশ্বাস পাঠকদের মধ্যে কেউ এমন ভুল কল্পনা করেননি। 

 ছাত্রদের শিক্ষককে সালাম-প্রণাম করার এই যে ভক্তি তা আসলে বাঙালি ছেলেদের মাতৃভক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট। ডক্টর হুমায়ুন আজাদ মনে করতেন, বাঙালি ছেলেরা যে মাকে ভালোবাসে তার কারণ সংসারে মা একটি নির্যাতিত চরিত্র। সারাদিন সংসারের সব কাজ করে ভালো ভালো রান্না করে সবাইকে মাছের বড় পিসটা তুলে দিয়ে শেষে নিজের পাতে পড়ে ঝোল আর আলু। পান থেকে চুন খসলে জোটে কটু কথার নির্যাতন। ফলে নির্যাতিতের প্রতি ছেলেদের মনে দয়ার উদ্রেক হয়। এটি দয়াজাত স্বাভাবিক মানবিক টান মাত্র; শ্রদ্ধা নয়। 

একইভাবে পরীক্ষার হলে বা স্কুল পরিদর্শনে দামি গাড়িতে চড়ে সদলবলে, সগৌরবে হঠাৎ উপস্থিত  উন্নতমস্তক ম্যাজিস্ট্রেট বা অফিসারের সামনে লজ্জিত, অনুতপ্ত, নতমস্তক শিক্ষকের করুণ চেহারা ছাত্রদের মনে দয়ার উদ্রেক করে। সেও স্বপ্ন দেখে একদিন দামি গাড়ি চড়ে সদলবলে এসে তার করুণ চেহারার শিক্ষকের পায়ে ধরে সালাম-প্রণাম করবে। একই সাথে তার চোখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এই ভেবে যে, একদিন তার আগমনেও কোনো এক স্কুলের মাস্টারমশাইরা এভাবে নতমস্তকে দাঁড়াবে।  অন্যের চোখে নিজের প্রতি ভয় দেখার নেশা বড়ো নেশা। চাকচিক্য আর ক্ষমতা সবাইকে আকর্ষণ করে।

আজ আর কোনো মেধাবী ছাত্র শিক্ষকতা পেশায় আসতে চায় না। অপেক্ষাকৃত কম মেধার ছাত্ররা জগতে আর কোনো পেশায় যুক্ত হওয়ার যোগ্যতা না-থাকায় একান্ত বাধ্য হয়ে একটু ছোট পেশা শিক্ষকতায় আসে। 

এই কম মেধাবী শিক্ষক তৈরি করে কম মেধাবী ছাত্র। অর্থাৎ, কম মেধাবী প্রাথমিক শিক্ষক তৈরি করে কম মেধাবী মাধ্যমিক ছাত্র, কম মেধাবী মাধ্যমিক শিক্ষক তৈরি করে কম মেধাবী কলেজ ছাত্র,  কম মেধাবী  কলেজ শিক্ষক তৈরি করে কম মেধাবী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র। কম মেধাবী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তৈরি করে (অন্য দেশের তুলোনায়) কম যোগ্য প্রশাসক, কম দক্ষ ডাক্তার, কম দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার, কম বিজ্ঞ বিচারক।

এককালে পেশাকে বৃত্তি বলা হত। বৃত্তি কথাটি এসেছে বৃত্ত থেকে। আমাদের দেশে সব পেশায় অমেধাবীদের এই যে একটি দুষ্ট বৃত্ত তৈরি হয়েছে এই বৃত্তের ভরকেন্দ্র আসলে শিক্ষকতা পেশা। এই ভরকেন্দ্রটি না-ভাঙলে দুষ্ট বৃত্তটি ভাঙবে না। ভরকেন্দ্রটি ভাঙতে হলে কিছু ব্যক্তি-শিক্ষক নয়; শিক্ষকতা পেশাটাকে করতে হবে আলোকিত, চাকচিক্যময়, আকর্ষণীয়। 

আজকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, একদিন এই দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্ররা সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদের কাঙ্ক্ষিত পেশা শিক্ষকতায় আসবে। পেশাভিত্তিক বৃত্তের ভরকেন্দ্র জুড়ে থাকবে দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষকেরা আর একে কেন্দ্র করে চারিদিকে ঘুরবে মেধাবী ডাক্তার, মেধাবী ইঞ্জিনিয়ার, মেধাবী কূটনীতিক, মেধাবী প্রশাসক। সেদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য পাড়ি জমাতে হবে না মালয়েশিয়া,  সিঙ্গাপুর কিংবা ভারত। কোন দেশের কে কোন বিষয়ে নোবেল পেয়েছে তা মুখস্ত করে অফিসার হওয়ার চেয়ে নিজেরাই নোবেল পাওয়ার স্বপ্ন দেখবে।

প্রভাষক, বাংলা
নড়িয়া সরকারি কলেজে, নড়িয়া, শরীয়তপুর
বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা)
 ৩৭ ব্যাচ







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : bhorerdakonline@gmail.com, adbhorerdak@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : bhorerdakonline@gmail.com, adbhorerdak@gmail.com