বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার বিরামপুরের ঐতিহাসিক রেলস্টেশনকে আধুনিকায়ন, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে বিরামপুর পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্ট। এ উপলক্ষে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, অপারেশনস উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বিরামপুর রেলস্টেশন প্ল্যাটফর্মে পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্টসহ শহরের বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
তাদের দাবি, বর্তমানে বিরামপুর স্টেশন থেকে মোট ১১টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করলেও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এবং কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন দুটি এখানে যাত্রাবিরতি দেয় না। পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্টের দাবি, এই দুই ট্রেনের যাত্রাবিরতি প্রদান করা হলে রংপুর বিভাগের যাত্রীদের যাতায়াত সহজ হবে এবং বৃহত্তর ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, বাংলাবান্ধা ও ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতায়াত আরও সুবিধাজনক হবে।
এই স্টেশন দিয়ে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনসংখ্যা অপ্রতুল, যা বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার পাঁচটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের জন্য যথেষ্ট নয়। স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে—চলমান ট্রেনগুলোর আসনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনে নতুন ট্রেন চালু করা হোক।
বিরামপুর স্টেশনসংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বের রেলগেট (নং–১০১/ই) অত্যন্ত সংকীর্ণ, যা ট্রাফিকজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্ট দাবি করেছে এই রেলগেটটি সম্প্রসারণ করা হোক, যাতে যানবাহন সহজে চলাচল করতে পারে এবং জনদুর্ভোগ কমে।
বিরামপুর স্টেশন একটি ব্যস্ততম রেলস্টেশন হলেও রাত্রিকালীন সময়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য কোনো পুলিশ ফাঁড়ি নেই। চুরি, ছিনতাই এবং অন্যান্য অপরাধ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্ট অবিলম্বে এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি জানিয়েছে।
বিরামপুর রেলস্টেশন প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্টের দাবি—স্টেশনের উন্নয়ন ও অতিরিক্ত ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে এই আয় দ্বিগুণ করা সম্ভব। স্টেশনটি আধুনিকায়ন করা হলে যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং সরকারের রাজস্বও আরও বাড়বে।
বিরামপুর পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্টের আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, বিরামপুর স্টেশনটি শুধু দিনাজপুরের নয়, বরং রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম। আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা ও নিরাপত্তা অনেক উন্নত হবে।
বিরামপুর রেলস্টেশন মাস্টার কাজি ফয়েজ আলাউদ্দীন জানান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। আমাদের কাছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার জন্য স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। আমরা কর্তৃপক্ষের নিকট স্মারকলিপি পাঠিয়ে দিবো।
এবিষয়ে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে উপজেলাবাসী মানববন্ধন করেছে। একটি স্মারকলিপি দিয়েছে, রেলপথ মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে মহাপরিচালক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া জন্য। যথাসময়ে স্মারকলিপিটি পাঠানো হবে।