জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় চলছে আমন ধান কাটার ব্যস্ত মৌসুম। ক্ষেতজুড়ে সোনালি ধানের বাতাসে দোল খাওয়ার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যেন গ্রামের প্রতিটি মানুষের মনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। গত কয়েক দিনে পুরো উপজেলাজুড়ে ধান কাটা-মাড়াইয়ের ধুম পড়ে গেছে। শ্রমিকের হাঁকডাক, কৃষকদের কর্মব্যস্ততা আর ধানবাহী গাড়ির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে গ্রামীণ জনপদ।
চলতি বছরে অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বৃষ্টিপাত এবং কৃষি অফিসারদের পরামর্শ পাওয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। কৃষি কর্মকর্তারাও বলছেন, এবার উৎপাদন বিগত বছরের তুলনায় বেশি, যা ধানচাষে কৃষকদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
কালাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকেই কৃষকরা কাঁচি হাতে ক্ষেতের দিকে ছুটছেন। কেউ কাটছেন, কেউ গুচ্ছ করে বেঁধে রাখছেন, আবার কেউ ভ্যানগাড়িতে কেউবা কাঁধে ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির উঠানে। উদয়পুর, আহম্মেদাবাদ, মাত্রাই, জিন্দারপুর, পুনট ও কালাই পৌরসভাসহ প্রায় সব ইউনিয়নেই এক স্বতঃস্ফূর্ত উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ এর তথ্য মতে,এ উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ১১ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
স্থানীয় কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, “এবার প্রকৃতি আমাদের খুব সহায় হয়েছে। ধানের ফলন ভালো হয়েছে, রোগবালাইও ছিল কম। এমন ফলন দেখে মনটা সত্যিই আনন্দে ভরে গেছে।”
আরেক কৃষক এবার ৭বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছি। রোগ বালাই তেমন না থাকায় ধানের খুব ভাল ফলন হয়েছে।
কৃষক আমাজাদ হোসেন বলেন, মেশিন দিয়ে ধাক কেটে রোদে শুকিয়ে হিসাব করে দেখি প্রতি শতকে ২৮ কেজি ধান হয়েছে। সে ধান ১১৫০ টাকা মন দরে বাজারে বিক্রি করেছি। ভালো ফলন ও দাম পেয়ে ভালো লাগছে।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হারুনুর রশিদ বলেন, জানান, উন্নত জাতের বীজ, প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষকরা এবার যথাসময়ে চাষ করতে পেরেছেন। এর ফলে ফলন বেড়েছে এবং উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাবে আমন ধান।