চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পুলিশের পাহারা থেকে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ওই ছিনতাইকারী হলেন ইমাম হোসেন আকাশ (২৯)। বুধবার সকাল ১১টার দিকে সীতাকুন্ড উপজেলা থেকে ইমাম হোসেন আকাশকে গ্রেফতার করা হয়।বন্দর অফিসার্স কলোনি গেট এলাকায় চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করার সময় আহত হয়েছিল ইমাম হোসেন আকাশ।
এর আগে সোমবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ পাহারার মধ্যেই ছিনতাইকারী ইমাম হোসেন আকাশ (২৯) পালিয়ে যায়। সে আনোয়ারার দিঘীরপাড় বরুমছড়া এলাকার মো.আনোয়ার হোসেনের ছেলে। বর্তমানে নগরের বন্দর এলাকার আজাদ কলোনির শাহজাহান বাড়িতে ভাড়ায় থাকছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বন্দর থানার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর এক পুরুষ ও দুই নারী মিলে হামলা চালায়। এ সময় এক পুলিশ সদস্যের পায়ে ছুরি মেরে আসামি ইমাম হোসেন আকাশকে ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে ওই দুই নারীর একজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছিল পুলিশ।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পুলিশের পাহারা থেকে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাইকারী ইমাম হোসেন আকাশকে সকাল ১১টায় সীতাকুন্ড উপজেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নগর পুলিশের বন্দর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহমুদুর রহমান জানিয়েছেন, ছিনতাইয়ের শিকার চীনা পুরুষের বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। তিনি চীনের ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা বোঝেন না।
এজন্য তিনি বাংলাদেশে কেন এসেছেন অথবা এখানে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি কিংবা অন্য কোনো পেশায় জড়িত আছেন কিনা, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ একজন পেশাদার দোভাষী ব্যবহার করে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, চীনের ওই নাগরিক মূল সড়ক ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তিনজন ছিনতাইকারী তাকে আটকে মোবাইল-টাকা কেড়ে নিচ্ছিল। তিনি বাধা দিলে ধস্তাধস্তির মধ্যে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে হাতেনাতে এক ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলে। তাকে গণধোলাই দিয়ে সেখানে আহত অবস্থায় ফেলে রাখে।
আরেকজন ছিনতাইকারী পালানোর পথে আহত অবস্থায় চীনা নাগরিক তাকে ধাওয়া দেন। চট্টগ্রাম বন্দরের সিপিএআর জেটিগেটের সামনে ওই ছিনতাইকারীকে স্থানীয় লোকজন ধরে পিটুনি দেয়। তখন সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এ ছাড়া পুলিশ আহত চীনা নাগরিককে বন্দর শ্রমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।পুলিশ আহত দুই ছিনতাইকারীকেও উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।
বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে অভ্যন্তরে চীনা নাগরিক ছুরিকাহত হয়েছেন বলে একটি প্রচারণা চলছে। বিভ্রান্তি এড়াতে আমরা এ বিষয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে ব্যাখা দিয়েছি। এটা বন্দরের সংরক্ষিত এলাকার বাইরে সড়কের একটি ঘটনা।
এদিকে এসি-বন্দর মাহমুদুর রহমান বলেন, চীনের ওই নাগরিককে হাঁটুর নিচে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিল। তবে আঘাত বেশি গুরুতর নয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন আমাদের হেফাজতে আছেন। আহত দুই ছিনতাইকারীর মধ্যে আকাশ নামে একজনের অবস্থা একটু গুরুতর। সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
সাজ্জাদ নামে আরেকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আমাদের হেফাজতে দিয়েছে।চীনের নাগরিকের নাম-পরিচয় নিশ্চিতের পর মামলা করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।