প্রকাশ: সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:৩১ এএম (ভিজিটর : ৪৮৯)
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আসন্ন নির্বাচন ঘিরে মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ধানের শীষের টিকিট পেতে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা। নানা মানদন্ড জরিপ করে প্রার্থী বাছাই করবে বিএনপির হাইকমান্ড। এরপরই চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে দলটি। অধিকাংশ আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও কিছু আসনে রয়েছেন একক প্রার্থী, যারা দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ও জনপ্রিয়। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য খুব শিগগির একক প্রার্থীদের গ্রিন সিগন্যাল দেবে দলটি।
এদিকে এর আগেও বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে বিএনপি। এখন অনানুষ্ঠানিকভাবে শুধুমাত্র বাছাইকৃত প্রার্থীকে জানিয়ে দেওয়া হবে এবং ওই প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারণায় মাঠে নামবে দলটি। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে বিএনপি। ইতিমধ্যে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠক করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এসব বৈঠকে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিএনপির প্রথম সারির একজন নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি চাচ্ছে তফসিলের আগেই কিছু আসনে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে। সেজন্য গ্রিন সিগন্যাল পাওয়া প্রার্থীদের দায়িত্ব হবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একসঙ্গে নির্বাচনী মাঠে কাজ করা। যদি তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। কারণ বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জামায়াতে ইসলামী ইতিমধ্যে এককভাবে প্রার্থী ঘোষণা করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। তাদের নেতাকর্মীরা মাঠে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তাই অনানুষ্ঠানিকভাবে একক প্রার্থীদের গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকমান্ড। এ মাসের মধ্যেই গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হতে পারে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রত্যেকটি আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছে। প্রত্যেক আসনে পাঁচজন, সাতজন এবং দশজন করে যোগ্য প্রার্থী আছেন। আমরা একটা নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রার্থী সিলেকশনের বিষয়টা দেখছি। এখন কাজটা জেলা এবং বিভাগভিত্তিক করছি। খুব শিগগিরই আসনভিত্তিক একক প্রার্থীকে মাঠে কাজ করার জন্য গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হবে।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে সরকারি, বেসরকারি, সাংগঠনিক এবং মিডিয়ার মাধ্যমে জরিপ করেছে দলটি। এর মধ্যে একটি বিজ্ঞানসম্মতভাবে জরিপ হয়েছে। জরিপ চলাকালীন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারেক রহমান। তাদের বলা হয়েছে, নির্বাচনে একক প্রার্থী দেওয়া হবে। যারা মনোনয়ন পাবেন না তাদের মনোক্ষুণ্ন না হয়ে দলীয় মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচনে বিজয়ী করে আনার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলের এই নির্দেশনা অমান্য করে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে যারা কাজ করবেন তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও মনোনয়নপ্রাত্যাশীদের সতর্ক করেছেন তারেক রহমান।
জানা গেছে, নবীন-প্রবীণের সংমিশ্রনে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের সাথে সম্পৃক্ত, ত্যাগী, দলীয় সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, এলাকায় জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য এবং ক্লিন ইমেজধারীদের প্রাধান্য দেবে দলটি। এই বিবেচনায় মনোনয়নে আসবে চমক, যা তফসিল ঘোষণার পরই চূড়ান্তভাবে জানা যাবে। শতাধিক তরুণ প্রার্থীর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে পারে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া নির্বাচনে দীর্ঘদিনের যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনাদের ৫০টি আসন ছাড়ার চিন্তা করছে দলটি।