যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্স বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, কারণ তারা এইচ-১বি কর্মসংস্থান ভিসার আবেদনের ফি এক লাখ ডলার-এ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভিসা প্রোগ্রামে পরিবর্তন এনে তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন।
চেম্বার বলেছে, কংগ্রেস অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও চিন্তাভাবনা করে এই ভিসা প্রোগ্রামের ফি নির্ধারণ করেছে, যার মূল লক্ষ্য ছিল অত্যন্ত দক্ষ বিদেশি কর্মীদের আকর্ষণ করা।
মামলায় বলা হয়েছে এই ঘোষণাপত্র (Proclamation) শুধু ভুলনীতি নয়, এটি সরাসরি বেআইনি। প্রেসিডেন্টের বিদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর যথেষ্ট ক্ষমতা থাকলেও, এই ক্ষমতা আইন দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং তা কংগ্রেসের পাস করা আইনকে সরাসরি লঙ্ঘন করতে পারে না।
মামলায় আরও বলা হয়েছে এই ঘোষণাপত্র সেটাই করছে এটি নির্লজ্জভাবে কংগ্রেস কর্তৃক নির্ধারিত এইচ-১বি প্রোগ্রামের ফি লঙ্ঘন করছে এবং কংগ্রেসের সেই বিবেচনার বিরোধিতা করছে, যেখানে বছরে সর্বোচ্চ ৮৫,০০০ জন বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রে এনে তাদের প্রতিভা দিয়ে আমেরিকান সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প গত মাসে একটি ঘোষণা স্বাক্ষর করেন, যেখানে এইচ-১বি ভিসার ফি এক লাখ ডলার-এ উন্নীত করা হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল কোম্পানিগুলোকে আমেরিকান কর্মীদের নিয়োগে উৎসাহিত করা।
এই পরিবর্তনের ফলে প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়, কারণ এই খাতটি বিদেশি প্রতিভার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। প্রাথমিক বিভ্রান্তির সময়, একাধিক বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের এইচ-১বি ভিসাধারী কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রেই থাকতে বা অবিলম্বে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়।
পরে প্রশাসন পরিষ্কার করে জানায়, এই নতুন ফি বর্তমানে যাদের ভিসা রয়েছে বা যারা যাতায়াত করছেন তাদের উপর প্রযোজ্য নয়।
যদিও এই ব্যাখ্যায় প্রাথমিক বিভ্রান্তি দূর হয়, তবুও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে এই নতুন ফি অনেকের জন্য, বিশেষ করে ছোট ব্যবসাগুলোর জন্য, অত্যধিক ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে এবং বিদেশ থেকে প্রতিভা আনা কঠিন করে তুলবে যা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় সুবিধা ছিল।
এই উদ্বেগগুলোই চেম্বার অব কমার্সের মামলায় প্রতিফলিত হয়েছে। মামলায় বলা হয়েছে, এই ফি অনেকের, বিশেষ করে ছোট ব্যবসার, জন্য 'অর্থনৈতিকভাবে অকার্যকর' করে তুলবে এই ভিসা প্রোগ্রামকে। এটি কোম্পানিগুলোকে হয় “ব্যাপকভাবে মজুরি খরচ বাড়াতে” বাধ্য করবে অথবা এমন বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ কমাতে হবে, যাদের সহজে বিকল্প পাওয়া সম্ভব নয়।