ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বৃহস্পতিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৪ কার্তিক ১৪৩২
ই-পেপার বৃহস্পতিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




ঐক্যমত কমিশনের সুপারিশ ক্ষুদ্ধ বিএনপি, সতর্ক জামায়াত-এনসিপি
সুজন দে:
প্রকাশ: বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৩৪ পিএম  (ভিজিটর : ৫৬)
সরকারকে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫ জারির সুপারিশ করেছে কমিশন। মঙ্গলবার জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে সুপারিশমালা হস্তান্তর করেন।

সুপারিশে বলা হয়েছে, সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর পক্ষ থেকে “গণভোট” জাতীয় নির্বাচনের দিনে করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও এটি তার আগেই করা যেতে পারে বলে অভিমত দিয়েছে জাতীয় ঐক্যমত কমিশন। 

সুপারিশে আরো বলা হয়েছে, আগামী সংসদের সংবিধান সংস্কার পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন না করলে অন্তর্বর্তী সরকারের তৈরি করে রেখে যাওয়া সংবিধান সংশোধনের খসড়া বিল পাস হলে গণ্য হবে। সুপারিশে যুক্ত আদেশের দ্বিতীয় খসড়ায় বলা হয়েছে, পরিষদ ২৭০ দিনে জাতীয় সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করবে। অপর দিকে ১৭ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষরিত জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) অন্তর্ভুক্ত করা হলেও আদেশের খসড়ায় তা নেই। 

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ সরকারকে দিয়েছে, তা নিয়ে  রাজনৈতিক অঙ্গনে স্পষ্টই বিভাজন দেখা দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট মেনে নেবে না বিএনপি। এই ধরণের সুপারিশে ক্ষুদ্ধ হয়েছে দলটির নেতারা। তবে জামায়াত ও এনসিপি চায় জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট। তবে তারা সর্তক প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। 

এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট ও ৫ দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে স্বারকলিপি দেয়ার কর্মসূচি ঘোষণাও করেছে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন সহ আরো আটটি ইসলামী রাজনৈতিক দল। 

এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারকে ঐক্যমত কমিশনের দেয়া প্রস্তাব নিয়ে বুধবার সারাদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের দলীয় অবস্থান তুলে ধরেছে। জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন  সহ আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল সুপারিশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে বিএনপি, ১২ দলীয় জোট, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, সিপিবি, বাসদ গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঐক্যমত কমিশনের সুপারিশ নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। অনেকেই  ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) কমিশন সরকারকে যে সুপারিশ দিয়েছে, তাতে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। 

গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি। ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল এখন একই পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যা রেফারির নিরপেক্ষ ভূমিকার পরিপন্থী। রেফারিকে আমরা কখনও গোল দিতে দেখিনি। 

কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিএনপি হতাশ বলে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কমিশন ও সরকারের পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে বিএনপির প্রত্যাশা মেলে না। 

জুলাই সনদের যে দলিল স্বাক্ষর হয়েছে, তার সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বলা হলো ৪৮টি দফার ওপর গণভোট করা হবে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি। এতদিন কেন এত আলোচনা, এত কসরত করা হলো, তা প্রশ্নবিদ্ধ।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের  বলেন, ঐকমত্য কমিশন নির্বাচনের দিন বা এর আগে গণভোটের সুপারিশ করেছে সরকারের কাছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটই সঠিক সিদ্ধান্ত। কারণ, গণভোট হবে সংস্কারপ্রক্রিয়ার ওপর। আর জাতীয় নির্বাচন হবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নির্ধারণের জন্য। দুটোর চরিত্র আলাদা।  

তিনি বলেন, কোনো কারণে যদি জাতীয় নির্বাচন সঠিক সময়ে নাও হতে পারে, আমরা আশা করি, সঠিক সময়ে ইনশা আল্লাহ হবে, তখনো তো জুলাই সনদ তো আমাদের পাস করতে হবে। জুলাই সনদ তো একটা সংস্কারও। সুতরাং দুটোকে একসঙ্গে জুড়ে দেওয়াটা এটা আমরা কোনোভাবেই সঠিক মনে করি না। এবং এটা জুলাই সনদকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যেতে পারে। 

আর বিএনপি গণভোট বানচাল করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, গণভোটের পর বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানকে ভিত্তিমূল ধরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাইনে একটি আদেশ জারি করতে হবে। যে আদেশের অধীনে একটি গণভোট হবে। টাইম ফ্রেম নিয়ে আমরা নির্দিষ্ট কোনো অবস্থান নিচ্ছি না।

তবে জুলাই সনদের নামে এখন রাজনীতিতে বৈষম্য ও বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।  তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নামে ড. ইউনূস তিনটি দলকে এ ক্যাটাগরিতে স্থাপন করে ছোট দলগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার দাবি, এনসিপির কয়েকজন ছাত্রনেতা ছাড়া পুরো ছাত্রসমাজকে দূরে ঠেলে দিয়েছেন ড. ইউনূস। 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচিত সরকার বৈধতা না দেওয়া পর্যন্ত জুলাই সনদ বৈধতা পাবে না। তিনি বলেন, নোট অব ডিসেন্ট কেন জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে ঐকমত্য কমিশনকে। সাকি আরো সতর্ক করেন, যদি কারো ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কা তৈরি হবে।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : bhorerdakonline@gmail.com, adbhorerdak@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : bhorerdakonline@gmail.com, adbhorerdak@gmail.com