প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:৩২ এএম (ভিজিটর : ১৭১)
জাতীয় নির্বাচনের দাবি দিন দিন জোরদার হচ্ছে। এতদিন বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চাইলেও এখন জামায়াতও নির্বাচন চাচ্ছে। এটা খুবই স্বাভাবিক চাওয়া। কারণ দেশে নির্বাচিত সরকারই থাকার কথা। বাঙালি নির্বাচনপ্রিয় জাতি। কিন্তু এখন দেশের যে সার্বিক অবস্থা নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো করার সুযোগ নেই। কারণ অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের এজেন্ডা নিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করলে গণতন্ত্র আবার বিপদে পড়তে পারে। এরকম প্রেক্ষাপটে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেছেন। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। এই কমিশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা নেই। যদি তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করেন তাহলে তারা নির্বাচন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ হযে উঠবেন তখন একটা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান তাদের জন্য সহজ হবে। আমরা ড. তোফায়েল আহমেদের সাথে সহমত। আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করুন, পরে জাতীয় নির্বাচন করুন।
স্থানীয় সরকার উপমহাদেশে প্রাচীণতম প্রশাসনিক কাঠামো। প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রশাসনিক সুবিধা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই জনগণের কাছে পৌঁছায়। বৃটিশ আমলে এমনকি পাকিস্তান আমলেও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান রাজনীতিমুক্ত ছিল। দল করেন এমন কেউ ভোটে দাঁড়াতে পারতেন, কিন্তু নির্বাচিত হলে তিনি আর দলীয় লোক থাকতেন না। তখন তিনি সকলকে সেবা করতেন। সাধারণত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান বা মেম্বারে দাঁড় করিয়ে দেয়া হত। বিগত সরকার দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন করার ব্যবস্থা করে স্থানীয় সরকারকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। সংবিধানে বলা আছে ‘স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হইবে’। আবার বিনা ভোটে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। সব মিলিয়ে স্থানীয় সরকার ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থাও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ‘বিনা ভোট’ ‘রাতের ভোট’ প্রভৃতিতে মানুষ ভোট কেন্দ্র বিমুখ হয়েছিল। অনেক দিন পর দেশে ভোট হবে ভালো ভোট। সেই ভোট স্থানীয় সরকারে নির্বাচনের মাধ্যমে হওয়া উচিত। কারণ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে তো বাঁচাতে হবে। সেই নির্বাচনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটা সুষ্ঠু দল নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন করতে হবে, কারণ দেশটাকে তো বাঁচাতে হবে।