প্রকাশ: শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৩:১১ পিএম (ভিজিটর : ১৩৫)
মানুষের অতিরিক্ত ভোগবিলাস পৃথিবীকে ধ্বংসের মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে মানব সভ্যতাকে। বিশ্বের এই মহাসংকট থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তার যুগান্তকারী তিন শূন্য তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনটা শূন্য মানবজাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এই শূন্য হচ্ছে ‘শূন্য জীবাশ্ম জ্বালানি’, ‘শূন্য কার্বন’ এবং ‘শূন্য বেকারত্ব’। এই ৩ শূন্য মানবজাতিকে শুধু রক্ষারই করবে না বরং একটা সুন্দর সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে। শূন্য জীবাশ্ম জ্বালানি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করার মাধ্যমে। আর সব বিদ্যুৎ যদি নবায়ণযোগ্য হয় তাহলে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নেবে আসবে আর বেকারত্ব শূন্যে নামবে তারই আবিষ্কৃত সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে জনরায়ু সংকট সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রফেসর ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্বে দরিদ্র বিমোচনে প্রয়োগ করা হচ্ছে। তার সামাজিক ব্যবসার ধারণা বিশ্ব সাদরে গ্রহণ করেছে। আমরা আশা করব জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তার ৩ শূন্য থিওরিও বিশ্ব গ্রহণ করবে এবং একটা সুন্দর পরিবেশ সহায়ক বিশ্ব গড়ে উঠবে। সবাই যেখানে শান্তিতে বসবাস করবে। গত শতক থেকেই বিশ্বে পরিবেশ আলোচনায় চলে এসেছিল। একবিংশ শতকে এসে জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবজীবনে তার প্রতিক্রিয়া এক ভয়াবহ দুঃসংবাদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। পূঁজিবাদী বিকাশের রূঢ়তর রূপ হচ্ছে এই সংকট। মানুষের অতিরিক্ত ভোগাকাক্সক্ষা থেকে এই মহাসংকটের সূচনা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় ঘুমানো, ভ্রমণ করা, হোম এপ্লায়েন্স ব্যাপক ব্যবহার বেড়ে গেছে। বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে উৎপাদন করা হচ্ছে বিদ্যুৎ, মানুষের ভোগ বেড়ে যাওয়াতে ব্যাপকভাবে শিল্প কারখানা চলছে। এসবের কারণে অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে, যাতে পৃথিবীর ওজোনস্তরের ক্ষতি করছে। বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, পৃথিবীতে লাখ লাখ বছর ধরে জমে থাকা বরফ গলে যাচ্ছে, তাতে সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বেড়ে উপকূলীয় এলাকা ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি তেরি হয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি নাজুক।
সক্রেটিস একদা এথন্সের বাজারে গিয়ে বলেছিরেন, ‘আহা কত জিনিস যা ছাড়াই আমি চলতে পারি।’ বাইবেল কোরাল গীতা সব ধর্মগ্রন্থেই অতিরিক্ত ভোগবিলাসকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু নিষিদ্ধ আপেল খাওয়ার মতো মানুষ ভুল করেই যাচ্ছে যা তাদের নিজেরই ক্ষতি ডেকে আনছে। যুগে যুগে, কালে কালে মনীষীরা মানবজাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পথ দেখিয়েছেন। এবার প্রফেসর ইউনূস দেখালেন, এখন বিশ্ববাসীর উচিত হবে তা অনুসরণ করা