ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বুধবার ● ১৮ জুন ২০২৫ ৪ আষাঢ় ১৪৩২
ই-পেপার বুধবার ● ১৮ জুন ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




শিক্ষা ক্যাডার ‘হাইভোল্টেজ’ নির্বাচন আজ
‘অন্তহীন বৈষম্য’ নিরসনের অঙ্গীকার
*রাষ্ট্রপতির নাম ও ছবি ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভোট প্রার্থনার অভিযোগ
নাজিউর রহমান সোহেল
প্রকাশ: শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪, ৭:৫১ পিএম আপডেট: ০৮.০৬.২০২৪ ১১:৫৪ পিএম  (ভিজিটর : ৮৫১)
সংখ্যার দিক দিয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার দেশের অন্যতম বড় ক্যাডার। পেশাজীবী এই ক্যাডারের সংগঠন ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ।  রোববার(৯ মে) সকাল ১০টা থেকে ভোগগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তাই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে এখন চলছে শেষ সময়ের হিসাব-নিকাশ। শিক্ষা ক্যাডারে অন্তহীন বৈষম্য দূরীকরণের অঙ্গীকার দিয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে শাহেদ-তানভীর-মোস্তাফিজ এর ‘গ’ প্যানেল। প্যানেলটি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে নির্বাচনে জয়লাভ করলে চারটি অগ্রাধিকারে ২০টি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে প্রচারণার শেষ সময়ে এসে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ‘খ’ নামের একটি প্যানেল। রাষ্ট্রপতির নাম ও ছবি ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভোট প্রার্থনার অভিযোগ উঠেছে এই প্যানেলটির বিরুদ্ধে। এই প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন মামুন-জিয়া-নাসির। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে তিনটি প্যানেল ও দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে ‘ক’ নামক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছে রুহুল কাদির-হুমায়রা-কামাল। এই প্যানেলের অনেকেই আওয়ামী বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে জড়িতের অভিযোগ রয়েছে। আর ‘খ’ নামক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন মামুন-জিয়া-নাসির। ‘মূলধারা ঐক্য প্যানেল’ নামে পরিচিত হলেও এই প্যানেলের কয়েকজন প্রার্থী বিগত সময়ে বিএনপির প্যানেল বলে পরিচিত প্যানেল থেকে নির্বাচন করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ‘গ’ নামক প্যানেলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন শাহেদ-তানভীর-মোস্তাফিজ। এটি প্যানেলটি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ও প্রগতিশীল রাজনীতির সমর্থক বলে পরিচিত।

জানা যায়, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির এই নির্বাচন নিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, তিনটি সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), নায়েম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরসহ (মাউশি) সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন শেষ হিসাব-নিকাশ চলছে। প্রার্থীরা ধরণ পাল্টে ভোটারদের সরাসরি ফোনে ভোট প্রার্থনা চাইছেন। 

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৩২৯টি সরকারি কলেজ এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তর মিলিয়ে ৩৫০ ইউনিটে ১৪ হাজার ২০০ জন ভোটার এই নির্বাচনে ভোট দেবেন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ৯৫টি পদের বিপরীতে এবার প্রার্থী হয়েছেন ২৩৩ জন। সারাদেশে প্রায় ৩০০ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, প্রচারণার শুরু থেকেই এখন পর্যন্ত ‘গ’ প্যানেলের শীর্ষ পদের প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনের তিন দিন আগে গত বুধবার এই প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মাউশির কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরীকে সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ পদে বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনেক সচেতন ভোটাররা বলছেন, ‘গ’ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থীকে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে বদলি করে শিক্ষা ক্যাডারের ইতিহাসে বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন। ‘গ’ প্যানেল সমর্থনকারীরা ব্যালটের মাধ্যমে শিক্ষা প্রশাসনের এই উদ্ভট সিদ্ধান্তের সমুচিত জবাব দিবেন বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।

এদিকে অন্তহীন বৈষম্যমূলক শিক্ষা ক্যাডারকে বাঁচানোর অঙ্গিকার করে গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে শাহেদ-তানভীর-মোস্তাফিজ এর ‘গ’ প্যানেল। প্যানেলটি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে চারটি অগ্রাধিকারে ২০টি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষা ক্যাডারে ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ ৩য় গ্রেডে উন্নীতকরণ, শিডিউলভুক্ত পদ মুক্তকরণ, এবং আনুপাতিক হারে ১ম ও ২য় গ্রেডসহ প্রয়োজনীয় পদসৃজনের উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি।

জানা গেছে, ‘ক’ প্যানেল থেকে গত নির্বাচনেও অধিকসংখ্যক প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। তাদের নেতৃত্বে ছিল সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসাইন মোল্লা। তবে এবার তিনি প্যানেলের সঙ্গে নেই। স্বতন্ত্র হিসেবে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে বিভক্তির কারণে এবার এই প্যানেলের অবস্থা বেশ নাজুক। শিক্ষা প্রশাসনের দপ্তরগুলোতে গিয়ে প্রচারণার চেয়ে ফেসবুকে প্রচারণায় তারা বেশি সক্রিয়। এছাড়া গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৯৫টি পদ থাকলেও তারা প্রার্থী দিয়েছেন ৪৯টি পদে। ক প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ড. আজম রুহুল কাদীর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।

আর ‘খ’ প্যানেলের কয়েকজন প্রার্থী বিগত সময়ে বিএনপির প্যানেল বলে পরিচিত প্যানেল থেকে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু এগুলোকে অপপ্রচার বলছেন প্যানেলের নেতারা। এই প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক মামুন উল হক কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার মূল প্রতিযোগিতা হবে ‘গ’ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী শাহেদুল খবির চৌধুরীর সঙ্গে। তবে এই প্যানেল ৯৫টি পদের মধ্যে নির্বাহী সদস্যের কয়েকটি পদে প্রার্থী দিতে পারেনি। অধ্যাপক মামুন উল হক জানিয়েছেন, প্রচারণার সময় অভ‚তপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। ভোটারদের ওপর আস্থা রাখতে চাই।

‘গ’ প্যানেলই একমাত্র পূর্ণ প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এবার এই প্যানেল থেকে শীর্ষপদগুলোসহ রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী বিজয়ী হবেন। প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী সমিতির বর্তমান সভাপতি। এ ছাড়া মাউশির পরিচালক হওয়ায় তার পরিচিতিও বেশ। তাই তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। 

শাহেদুল খবির চৌধুরী ভোরের ডাককে জানালেন, আমরা পূর্ণ প্যানেলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এবার বেশ কয়েকজন তরুণকে প্যানেলে রেখেছি। আশা করছি তারুণ্যের সহযোগিতা পাব। তিনি বলেন, আমাদের প্যানেলে যারা আছেন, তারা প্রগতিশীল রাজনীতির সমর্থক। আমাদের সরকারের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ রয়েছে, অন্য প্যানেলগুলোর সেটি নেই। আশা করি ভোটাররা এসব বিষয় বিবেচনা করবেন। এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাউশির সহকারী পরিচালক তানভীর হাসান। তরুণ বেশিরভাগ সদস্যের ভোট তানভীর হাসানের পক্ষে। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. তানভীর হাসান ভোরের ডাককে বলেন, আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। বিজয়ী হলে শিক্ষা ক্যাডারের অন্তহীন বৈষম্য দূর করা হবে আমাদের প্রধান কাজ। 

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি দেশের ক্যাডারগুলোর মধ্যে শীর্ষ পেশাজীবী সংগঠন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৭ সালে। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালের ২১ মার্চ। দুই বছর অন্তর অন্তর নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত ১৪ এপ্রিল পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]