ই-পেপার শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম: মোবাইল ইন্টারনেট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামীকাল : পলক       মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ও ফেসবুক চালুর বিষয়ে যা জানা গেলো       নেপালে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৮       আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সব নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী       খুলেছে অফিস-আদালত, গণপরিবহন সংকটে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি        বান্দরবানে কেএনএফের দুই সদস্য নিহত       লাখাইয়ে রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরীতে ব্যস্ত কৃষক      




ভাঙ্গায় মেহেদির রং মুছতে না মুছতে ভেঙ্গে গেল রাজকীয় বিয়ে
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) সংবাদদাতা
Published : Wednesday, 3 April, 2024 at 1:49 PM
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শিল্পপতির মাদকাসক্ত ছেলের ফুটপাত ব্যবসায়ীর মেয়ের বিয়ে হয়। স্ত্রীকে মাদক সেবনে বাধ্য করতে মারধর করা হতো।  অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী এক মাসের মাথায় পুলিশের সহায়তায় নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে ‍আসে। পরে স্বামী মাদক সেবন করে শ্বশুরবাড়িতে হামলা করে। ‍এ ঘটনায় স্বামীকে মাদকসহ আটক করে পুলিশ।

এমন ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙ্গা উপজেলার পৌরসভাধীন চৌধুরীকান্দা সদরদী গ্রামে।  

এ ঘটনায় টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। শিল্পপতি  মাদকাসক্ত ছেলের  নাম দীপ সাহা(২০), তার পিতা ভাঙ্গা বাজারের সাহা বস্ত্রালয় ও রাসু প্রিন্ট  শাড়ির স্বত্বাধিকারী রবিন সাহা। আর কনে প্রিয়ন্তী সাহা(১৯) তার বাবা ভাঙ্গা বাজারের ফুটপাতের ব্যবসায়ী (হলুদ মরিচের) কুমারেশ সাহা। গ্রামের বাড়ি চৌধুরীকান্দা সদরদী।

কুমার সাহা বিষয়টি বুধবার অবহিত করেন সাংবাদিকদের।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এই হিন্দু সম্প্রদায়ের নব দম্পতির বিবাহ হয় সিনেমা স্টাইলে রাজকীয়ভাবে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে আশীর্বাদ হয়। রবিন সাহার একমাত্র ছেলে দীপকে বিয়ে করাতে মেয়ের বাবাকে বাড়ি গাড়ি চাকরি আরো অনেক লোভ লালসা দেখিয়ে  গরিবের মেয়ে প্রিয়ন্তীর সঙ্গে বিবাহ দেন। ছেলেকে মাদকাসক্ত থেকে ফেরাতে। রবিন সাহা প্রায় দুই'শ ভরি স্বর্ণ অলংকার দিয়ে আশীর্বাদ সহ বিবাহ সম্পন্ন করেন। দীপের বিবাহের মার্কেট করেছেন সিঙ্গাপুর থেকে পারিবারিক সূত্র থেকে জানাযায়। ভাঙ্গায় এত বড় ব্যয়বহুল বিবাহ ভাঙ্গাবাসী আর দ্বিতীয়টি দেখেননি বলে ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান।

 মনে হয়েছে রাজ পরিবারের বিবাহ অনুষ্ঠান। দীপের বাবা রবিন সাহা ছেলেকে ভালো করার জন্য বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজার হাজার আত্মীয়-স্বজন, ব্যবসায়ী,রাজনৈতিক অরাজনৈতিক  ব্যক্তিদের আতিথেয়তা করিয়েছেন বিনা উপহার নিয়ে।  ব্যবসায়ীরা জানান এই বিবাহে খরচ হয়েছে সম্ভাব্য পাঁচ কোটি টাকার উপরে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলে ধুম ধাম রাজকীয়ভাবে আয়োজন। ভাঙ্গায় প্রশাসন সহ কোন দপ্তরে বাদ পড়েনি বিবাহের চিঠি।

ছেলে দীপ নববধূকে নিয়ে হানিমুনে বের হন কক্সবাজার, সিলেট সহ অনেক জায়গায়। হোটেলে বসে ও বিভিন্ন স্পটে  প্রিয়ন্তীকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে  মাদক সেবনে প্রিয়ন্তীকে জোর জবরদস্তি করেন। প্রিয়ন্তী না পান করলে তার ওপর নির্যাতন চালান দীপ।  প্রিয়ন্তী গরিব হলেও সে খুব মেধাবী ছাত্রী। মদ্যপ সেবন না করলেই  তার উপর করা হয় মারধর, টয়লেটে আটকে রাখা সহ নানা অত্যাচার। পরে প্রিয়ন্তীর বাবা কুমারেশ সাহা থানায় অভিযোগ দিয়ে দীপের বাড়ি থেকে  প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করেন।  মেহেদির রং শুকাতে না শুকাতেই রাজকীয় বিয়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল এমনি মন্তব্য করেন অনেকে। প্রিয়ন্তী বাবার বাসায় থাকার পর দীপ প্রিয়ন্তীকে পেতে মদ্যপ অবস্থায় শশুর বাড়ি গিয়ে হামলা চালায় এবং গুলি করে মারার হুমকি দেয়। এ সময় প্রিয়ন্তের বাবা পুলিশকে খবর দিলে তারা মাদকসহ দীপকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

এ বিষয়ে প্রিয়ন্তীর চাচা ঝন্টু সাহা জানান, গরিবের কপালে সুখ সয়না, প্রিয়ন্তীরা দুই ভাই বোন, প্রিয়ন্তি খুব মেধাবী ছাত্রী, ওর ভাই ময়মনসিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র। আমরা কোনভাবেই রাজি ছিলাম না এই বিয়েতে।

 ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী বিনয় সহ কয়েকজন ব্যবসায়ীরা আমার ভাইকে বাড়ি গাড়ি চাকরি বিবাহের সমস্ত খরচ এসব লোভ দেখিয়ে  বিবাহ করতে বাধ্য করেছেন। আমার ভাতিজি প্রিয়ন্তীকে মাদক সেবন করতে জোর করতো, না খেলেই মারধর করত। আমার ভাতিজি মুখে নিলেই বমি করে অসুস্থ হয়ে যেত। সহ্য করতে না পেরে ওর কাছ থেকে ফিরে এসেছে। এমন মাদকাসক্ত জামাইয়ের নিকট আর দিবো না, প্রিয়ন্তীও আর যাবে না। আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছে দীপের পরিবার। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এদিকে রবিন সাহার বক্তব্য নেওয়ার জন্য  একাধিকবার যোগাযোগ করেও  তাকে পাওয়া যায়নি।  

এ ঘটনায় ভাংগা থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন আল রশিদ জানান, দীপ তার স্ত্রীকে দিয়ে মাদক সেবনে বাধ্যকরা সহ বিভিন্ন  অনৈতিক কর্মকাণ্ড জোর করে করাতে বাধ্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে দীপকে তার শ্বশুরবাড়িতে হামলা করার সময় চার বোতল ফেনসিডিলসহ তাকে আটক করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে মাদকেরও একটি মামলা হয়েছে।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স: ৪১০৫২২৪৫, ৪১০৫২২৪৬, ০১৭৭৫-৩৭১১৬৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন: ৪১০৫২২৫৮
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পিএবিএক্স: ৪১০৫২২৪৫, ৪১০৫২২৪৬, ০১৭৭৫-৩৭১১৬৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন: ৪১০৫২২৫৮
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected]