ই-পেপার শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম: মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ও ফেসবুক চালুর বিষয়ে যা জানা গেলো       নেপালে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৮       আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সব নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী       খুলেছে অফিস-আদালত, গণপরিবহন সংকটে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি        বান্দরবানে কেএনএফের দুই সদস্য নিহত       লাখাইয়ে রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরীতে ব্যস্ত কৃষক       ভৈরবে কোটা আন্দোলনকারী ও র‌্যাব-পুলিশের সংঘর্ষ, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ       




দেশে ডায়াগনোসিসের অভাবে অপ্রতিরোধ্য এইডস
বায়েজীদ মুন্সী
Published : Friday, 19 January, 2024 at 5:26 PM, Update: 19.01.2024 5:29:36 PM
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে এইডস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সচেতনতাকেই একমাত্র প্রতিরোধক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই প্রথম টার্গেট এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা। কিন্তু বাংলাদেশে এইডস আক্রান্ত জনগোষ্ঠির বড় একটা অংশ রয়ে যাচ্ছে ডায়াগনোসিরে বাইরে। ঘুরে ফিরে এদের মাধ্যমেই অপ্রতিরোধ্য থেকে যাচ্ছে দূরারোগ্য এ ব্যাধিটি। 

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত এইডস শনাক্তের হার ৯৫ শতাংশ হলে সফলতা আসবে। আমাদের শনাক্তের হার এখন ৭৫ শতাংশ, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। বাকি ২৫ শতাংশ এই রোগ বহন করছে এবং তাদের থেকে ছড়াচ্ছে। যার ফলে এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এমনকি  দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মৃত্যুর  ঘটনাও ঘটেছে আগের বছরটিতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে এ বছর রেকর্ড সর্বোচ্চ এইডস রোগীর মৃত্যু ও শনাক্ত হয়েছে। ২০২৩ সালে নতুন করে এইডস রোগী পাওয়া গেছে ১ হাজার ২৭৬ জন। আর এই সময়ে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ২৬৬ জনের, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ। 

সূত্র জানায়, ১৯৮৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সবমিলিয়ে এইডস রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ৯৮৪ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮৬ জনের। এর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু হয় ২০২২ সালে, সেই সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৪৭ জন ও মৃত্যু হয়েছিল ২৩২ জনের। এর আগে, ২০২১ সালে দেশে এইডস শনাক্ত হয়েছিল ৭২৯ জনের, তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিলে ২০৫ জনের।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, এইডস নিয়ন্ত্রণে আমাদের প্রথম টার্গেট এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা। এইডস শনাক্তের হার ৯৫ শতাংশ হলে আমাদের সফলতা আসবে। আমাদের শনাক্তের হার এখন ৭৫ শতাংশ, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। বাকি ২৫ শতাংশ এই রোগ বহন করছে এবং তাদের থেকে ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, একজন রোগীকে শনাক্ত করে চিকিৎসার আওতায় আনতে পারাটাই হচ্ছে সফলতা। রোগী এই রোগ থেকে মুক্ত হবে সেটি বিষয় না। রোগী শনাক্ত হলেই এইডস ছড়ানো বন্ধ হবে।

ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিজের (এফডিএসআর) উপদেষ্টা ডা. আবদুর নূর তুষার বলেন, আমাদের বিজ্ঞাপনে মাদক নেওয়ার সিন দেখানো হয়। এসব না দেখানো উচিত। এসব দেখে অনেকে উৎসাহিত হয় এবং মাদক নেওয়ার কৌশল রপ্ত করে। তিনি বলেন, এইডস প্রতিরোধে অন্যের রক্ত গ্রহণ বা অঙ্গ প্রতিস্থাপনে আগে রক্তে এইচআইভি আছে কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে। ইনজেকশন নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবারই নতুন সুচ বা সিরিঞ্জ ব্যবহার করা, অনিরাপদ যৌন আচরণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত মায়ের সন্তান গ্রহণ বা সন্তানকে বুকের দুধ দেয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া, কোন যৌন রোগ থাকলে বিলম্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া, ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলা, অন্যের ব্যবহার করা ব্লেড ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন তিনি।

২০১৫ সালে ইউএনএইড নামের এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করে জাতিসংঘ। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল পরবর্তী ১৫ বছর, অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে এইডসমুক্ত করা। এইডস নির্মূল বিষয়ক জাতিসংঘের বৈশ্বিক প্রকল্প ইউএনএইডসের নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানিমা এক বিবৃতিতে জানান, বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো যদি প্রাণঘাতী রোগ এইডসের ওষুধ-টিকা আবিষ্কার ও বৈশ্বিক জনসচেতনতা খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করে, সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই বিশ্বকে চিরতরে এইডসের অভিশাপমুক্ত করা সম্ভব। তিনি বলেন, এইডস এখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু প্রতিরোধ অভিযান এখন যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে দাতারা এগিয়ে এলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই বৈশ্বিকভাবে আমরা এইডসকে বিদায় জানাতে পারব; আর যদি তা না হয়, সেক্ষেত্রে আরও কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হবে বিশ্বকে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, এইডস আক্রান্তদের রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ। সরকার বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। সরকার ডেভেলপমেন্ট পার্টনার ও এনজিওগুলো এইডস নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। তাও এই রোগ এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সার্জারির সময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বারবার ব্যবহার করা হয়, এ থেকেও এই রোগ ছড়ায়। জনস্বার্থ বিষয়ক বিজ্ঞাপন প্রচারে গণমাধ্যমে মূল্যহার কমানো বা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। 







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স: ৪১০৫২২৪৫, ৪১০৫২২৪৬, ০১৭৭৫-৩৭১১৬৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন: ৪১০৫২২৫৮
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পিএবিএক্স: ৪১০৫২২৪৫, ৪১০৫২২৪৬, ০১৭৭৫-৩৭১১৬৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন: ৪১০৫২২৫৮
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected]