প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪, ২:১৩ পিএম (ভিজিটর : ১১৩৪)
বাংলাদেশের এক উজ্জ্বল লোকসঙ্গীত শিল্পীর নাম সুজন রাজা। সঙ্গীত জগতে এক প্রিয় ও পরিচিত নাম। সঙ্গীত সাধনায় তিনি নিজেকে নিবিষ্ট করেছিলেন ছোট বেলা থেকেই। দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবেসে গেয়েছেন একের পর এক গান। ওরে ও রিকশাওয়ালা, আমার সাথে যাবিনি ঢাকায়, ভাঙা মনটা, কে যাও তুমি, যা পাখি উড়ে যা সহ হাসান মতিউর রহমানের লেখা ও সুরে একক ও ডুয়েট অসংখ্য জনপ্রিয় গানে দর্শক মাতিয়েছেন সুজন রাজা। কণ্ঠশিল্পী মমতাজের সঙ্গে গেয়েছেন বহু ডুয়েট গান করেছেন। প্রায় তিন যুগ ধরে বাংলার লালিত লোক সংগীতকে তিনি বুকে ধারণ করে দেশে বিদেশে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন হৃদয় ছঁয়ে যাওয়া সব গান।
পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই সংগীতে তালিম নেন প্রখ্যাত সঙ্গীত সাধক ওস্তাদ সায়েদুল ইসলাম এর কাছে। শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নেন ওস্তাদ ফজলুল হক, পরিতোষ ব্যানার্জি এবং পাকিস্তানের প্রখ্যাত সঙ্গীত সাধক পন্ডিত মাকসুদ এহেমার এর কাছে। বাংলার লোকসংগীতের রানী কানন বালা সরকার এর কাছেও সংগীতের তালিম নেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত সুজন রাজা নৌকা প্রতীকের পক্ষে গেয়েছেন স্বরচিত বহু নির্বাচনী গান। তার অডিও অ্যালবাম যার শিরোনাম ‘বাংলার নৌকা’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিন শত এমপির নাম নিয়ে গান লিখে ও সুরারোপ করি তিনি সারাদেশে ঝড় তুলেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান লিখে, কণ্ঠ দিয়ে হাজার হাজার লোকের মাঝে আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন বাদল এর নেতৃত্বে সংগীত পরিবেশন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এই সৈনিক জনতার মঞ্চসহ রাজপথে সকল আন্দোলনে গান গেয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেছেন। লোকসংগীতের অন্যতম প্রবাদ পুরুষ হাসান মতিউর রহমানের তত্ত্বাবধানে ফোক সাম্রাজ্ঞী খ্যাত মমতাজ বেগমের প্রথম ডুয়েট অ্যালবাম ‘বাল্যবন্ধু’ অডিও বাজারে ঝড় তোলে। শুরু হয় একের পর এক অডিও অ্যালবাম, চির সাথী, ভালোবাসার বিয়া, মনিহার, নিতা ইত্যাদি।
বাংলা গানের জন্য নিবেদিত সুজন রাজা জানান, গানই জীবন গানই তার প্রাণ। গান ছাড়া তার কোনো পেশা নেই। আমৃত্যু তিনি গান গেয়ে মানুষের পাশে থাকতে চান। তার গানে রয়েছে প্রেম-ভালোবাসা, আধ্যাত্মিকতা, পরপারের কথা। তিনি চান মানুষের মধ্যে হিংসা হানাহানির পরিবর্তে মনুষ্যত্বের জাগরণ ঘটুক। তিনি খানিকটা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের বাংলা গানের বিশাল ভান্ডার রয়েছে। দেশের সঙ্গীত শিল্পীদের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। বাংলা গানের কদর হওয়া উচিত। নাগরিক হিসেবে আমাদের সে বিষয়টা খেয়াল রাখা উচিত। যে জাতি তার ইতিহাস জানেনা ইতিহাস একদিক তাদের ভুলে যায়। সুজন রাজা নতুন শিল্পীদের গানের জন্য আরো সাধনা করার তাগিদ দেন।
সুজন রাজা ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা শেখ মহম্মদ ইয়াসিন মুন্সী মাতা স্বর্ণা বেগম। চার বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে সুজন রাজা তৃতীয় । তিনি স্ত্রী দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক ।