জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৩-২৪ সেশনের সপ্তাহব্যাপী ভর্তি পরীক্ষায় শেরপুর জেলা থেকে আগত ভর্তিচ্ছুদের সেবায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে শেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি৷
সেবামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভর্তিচ্ছু এবং তাদের অভিভাবকদের সহায়তার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে অস্থায়ী 'তথ্য সহায়তা কেন্দ্র' স্থাপন করা হয়। সেখানে শেরপুর জেলা থেকে আগত ভর্তি পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়। ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষার কেন্দ্র খুঁজে দেয়া, প্রয়োজন বিবেচনা করে দূরবর্তী পরীক্ষা কেন্দ্রে বাইকসেবা দিয়ে দ্রুত পৌছে দেয়া, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিনামূল্যে মোবাইল, মানিব্যাগ, স্মার্টওয়াচ, ব্যাগ সংরক্ষণ এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া একাধিক ইউনিটে আবেদনকারীদের মধ্যে যাদের রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থানের প্রয়োজন হয়েছে তাদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে তারা৷
ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পর্কে শেরপুরের কামারেরচর থেকে আগত এক অভিভাবক জানান, "আমি আমার মেয়েকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য এসেছি। এখানে এসে শেরপুর জেলার ছাত্রছাত্রীদের পেলাম। তারা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাদের বিশ্রামের জায়গা করে দিয়েছে, সকল ধরণের সহযোগিতা করছে, মনে হচ্ছে আমরা যেন শেরপুরেই আছি।"
শেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাশুকুর রহমান ফাহিম জানান, "গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে ভরপুর আমাদের ছোট্ট-সবুজ শেরপুর জেলা। সেখান থেকে আগত ভর্তিচ্ছুদের জন্য প্রতি বছরের মত এবারও আমরা বুথ স্থাপনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করেছি। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা নানা ধরণের মানসিক চাপের মাঝে থাকে। নিজের জেলার মানুষ পেয়ে তারা অত্যন্ত আপনবোধ করেন৷ আমরা আমাদের ক্ষুদ্র সহায়তার মাধ্যমে তাদের মানসিক চাপ মুক্ত করার চেষ্টা করেছি।"
ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, "সপ্তাহব্যাপী ভর্তি পরীক্ষার প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত আমরা 'তথ্য সহায়তা কেন্দ্র' পরিচালনা করেছি। প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৫০০ শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা সেবা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া যাদের রাতে থাকার প্রয়োজন হয়েছে, তাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছি। আমরা ভর্তিচ্ছুদের তালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী বিভিন্ন ইউনিটে মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ভবিষ্যতে শেরপুর জেলা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স প্রাপ্তির সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি।"
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়স্থ শেরপুরের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। এছাড়া প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষার সময় আগত শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ 'তথ্য সহায়তা বুথ' স্থাপনের মাধ্যমে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও সব ধরণের সহায়তা প্রদান করে থাকে এই ছাত্রকল্যাণ সংসদ।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত মোট ৫ দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচদিনে বিভিন্ন শিফটে এ, বি, সি-১, সি, ডি, ই ইউনিট এবং ইন্সটিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) পরীক্ষায় আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৮৫১ জন। ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক ৯২২টি করে মোট আসন সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৪৪টি। সে হিসেবে প্রায় প্রতিটি আসনের বিপরীতে ১০৮ জন করে ভর্তিচ্ছু প্রতিযোগিতা করে।