প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:৫০ পিএম (ভিজিটর : ৬৫)
স্বর্ণ ও হীরা চোরাচালানের মাধ্যমে ৬৭৮ কোটি টাকারও বেশি অর্থপাচারের অভিযোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত সোমবার রাতে গুলশান থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করে সংস্থাটি।
আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডি।
সিআইডির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বৈধ আমদানির আড়ালে স্থানীয় বাজার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে লেনদেন করেছেন দিলীপ আগরওয়ালা। মামলায় তার বিরুদ্ধে ৬৭৮ কোটি ১৯ লাখ ১৪ হাজার ১৪ টাকা অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গেল বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের আর্থিক লেনদেন, ব্যাংক হিসাবসহ বিভিন্ন নথি যাচাই করতে গিয়ে অসংগতির খোঁজ পায়। তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে বৈধভাবে ৩৮ কোটি ৪৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকার স্বর্ণবার, অলংকার, লুজ ডায়মন্ড ও অন্যান্য সামগ্রী আমদানি করেছে।
সিআইডির দাবি, একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয়, বিনিময় বা পরিবর্তন পদ্ধতিতে ৬৭৮ কোটি টাকারও বেশি স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করেছে। তবে এসব পণ্যের উৎস বা সরবরাহকারীদের বৈধ নথিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন আগরওয়ালা। এতে ধারণা করা হচ্ছে, স্বর্ণ ও হীরাগুলো বৈধ পথে নয়, বরং চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে এসেছে। এ বিষয়ে সিআইডি বলছে, উৎসহীন বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহের প্রমাণই প্রাথমিকভাবে চোরাচালানের ইঙ্গিত দেয়। সংস্থাটি আরও জানায়, চোরাচালানের মাধ্যমে অর্জিত এসব সম্পদ রূপান্তর, হস্তান্তর বা ব্যবহারের ঘটনায় অর্থপাচারের ‘প্রাথমিক সত্যতা’ পাওয়া গেছে। এসব তথ্য-নথি যাচাই-বাছাই করে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মামলাটি দায়ের করে। এখন প্রয়োজনীয় নথি, ব্যাংক হিসাব ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে গুলশানে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে দিলীপ আগরওয়ালাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর আগে, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর বাড্ডায় হৃদয় আহমেদ নামে এক তরুণকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য আগরওয়ালাকে আসামি করা হয়। সেই মামলায়ও তিনি বিচারাধীন।
সিআইডি বলছে, দিলীপ আগরওয়ালা দীর্ঘদিন ধরে দেশে–বিদেশে স্বর্ণ ও হীরা ব্যবসার আড়ালে চোরাচালান ও অর্থপাচারের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। অনুসন্ধান শেষে প্রায় এক বছর পর তাদের হাতে পাওয়া তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অবশেষে মামলা করা হলো।