ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বুধবার ● ১৮ জুন ২০২৫ ৪ আষাঢ় ১৪৩২
ই-পেপার বুধবার ● ১৮ জুন ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




জারুল ফুলে ছেয়ে গেছে তেঁতুলিয়া, হাতছানি দিয়ে ডাকছে পথচারীদের
পঞ্চগড় সংবাদদাতা
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫, ৩:১৭ পিএম  (ভিজিটর : ৯৫)
ষড়ঋতুর এই দেশে ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন সজ্জায় সাজে প্রকৃতি। বর্তমানে গ্রীষ্মের এই ঋতুতে ফল-ফুলের ব্যাপক সমারোহ সর্বউত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়ায়। সেই সঙ্গে গ্রীষ্মের এই ঋতুতে প্রকৃতির নজরকাড়া আরেক সৌন্দর্য দৃষ্টিনন্দন জারুল ফুল। প্রকৃতির এমনই এক সৌন্দর্য ধারণ করে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার আনাচে কানাচে ছেয়ে গেছে জারুল ফুল। রয়েছে অসংখ্য জারুল গাছ। যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে পথচারীদের।

জারুল গাছ এখন বেগুনি রংয়ের ফুলে প্রকৃতিতে এক অপার সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তুলেছে। ফুলপ্রেমিদের কেউ কেউ জারুলকে বসিয়েছেন একেবারে রানির আসনে, ইংরেজিতে ওর নাম দিয়েছেন  ÔQueens FlowerÕ, ভারতীয়দের কাছে জারুলের পরিচয়  Pride of India রূপে। জারুলের ইংরেজি নাম   Giant crepe-myrtle, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম  Lagerstroemia speciosa ও গোত্র  Lythraceae  নামের শেষাংশ স্পেসিওসা অর্থ সুন্দর। যথার্থ সে নামের অর্থ। সৌন্দর্য ছাড়াও জারুলের আছে ঔষধি গুণ। ফিলিপিনসের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ৬৯টি ঔষধি গাছের মধ্যে জারুলকে ঠাঁই দিয়েছে। ভিয়েতনামে জারুলের কচি পাতা সবজি হিসেবে খাওয়া হয় এবং এর বয়স্ক বা পুরোনো পাতা ও পরিপক্ক ফল রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ নেশা উদ্রেককারী। ভারতে মহারাষ্ট্রে রাজ্য ফুলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে জারুলকে। তবে বাংলাদেশসহ চীন, মালয়েশিয়া প্রভূতি অঞ্চলে এই বৃক্ষের দেখা মিলে।

জারুল ফুলগুলোকে দেখে তাই মনে হয় কবি নজরুল লিখেছিলেন: ‘জারুল ফুল পারুল ফুল ফুটল রে, আসলো কে?’ সত্যিই তো কে এল? জারুল আর পারুল, দুটোই বৈশাখে ফোটে। কবির চোখে যেন কিছুই এড়ায় না। যে পারুল বাংলায় দুষ্প্রাপ্য, সেই পারুল ফুলেরও কবি দেখা পেয়েছেন বৈশাখে। এই বৈশাখেই মাঠ ভরে থাকে সবুজ ধানেরগাছ, শীষে ধরে হলদে রং। কবি সেই ধান খেতকে কল্পনা করেছেন সবুজ শাড়িরূপে, আর সে শাড়ির পাড় বানিয়েছেন জারুল ফুল দিয়ে: ‘সবুজ শাড়ির ধানি আঁচল জারুল ফুলে বেগুনি পাড়, উড়িয়ে কে ঐ আসল রে ভাই আকাশ-বীণায় বাজিয়ে তার!’ ঝড় কাব্যে মুকুলের উদ্বোধন কবিতায় জারুল ফুলের এ চিত্রকল্পটি আমাদের আন্দোলিত করে।

গ্রীষ্মের শুরু থেকে এই ফুল শরৎ পর্যন্ত দেখা যায়। ফুল শেষে গাছে বীজ হয় ও বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। এই গাছ সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিটার উঁচু হয়। গাছটির নানা ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে। তবে নানা কারণে প্রকৃতি থেকে বিলীন হওয়ার পথে এই গাছ।

প্রকৃতির এমনই এক সৌন্দর্য ধারণ করে উপজেলার তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় মহাসড়কের দু’ধারে, তেঁতুলিয়া নামফলকের চারপাশ, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো নামক এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় জারুল ফুল। যার বেগুনি ফুলের সৌন্দর্য প্রতিটি পথচারীর নজর কাড়ে। তবে গাছটি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার এমনটিও জানিয়েছেন অনেকেই।

এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া বন বিভাগের বিট অফিসার নুরুল হুদা বলেন, এই বৃক্ষটি বর্ষা মৌসুমের আগে গ্রীষ্মের এক নান্দনিক প্রকৃতির উপহার। গ্রামবাংলার নান্দনিকতা অরূপ শোভা। এটি একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন গাছও। নয়নাভিরাম এই গাছের বিস্তৃতি আমাদের দেশকে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তোলে। তিনি বলেন, বন বিভাগ থেকে ন্যাচারাল ভাবে এই বৃক্ষ রোপন করা হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাগানগুলোতেও এই গাছ রয়েছেন। এই জারুল যেমন সৌন্দর্য ছড়ায় তেমনি এর মূল্যও অনেক।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]