ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শুক্রবার ● ১১ জুলাই ২০২৫ ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
ই-পেপার শুক্রবার ● ১১ জুলাই ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




চট্টগ্রামে ঝুলে আছে ২১ হাজার ৬০৩টি এনআইডি সংশোধনের আবেদন
চট্টগ্রাম ব্যুরো:
প্রকাশ: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ৫:৩২ পিএম  (ভিজিটর : ৭৭)
সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামের হাজার হাজার মানুষ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন। ছোটখাটো ভুলের জন্য খেসারত দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমানে চার ক্যাটাগরির ২১ হাজার ৬০৩টি আবেদন ঝুলে রয়েছে। এদিকে অভিযোগ রয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে ভোগান্তির সুযোগে দালালচক্র গড়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনে। অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে উল্টো ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

তবে চট্টগ্রামে ইসির কর্মকর্তারা বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু করার আগে এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে চায় নির্বাচন কমিশন। তারা বলেন, কারও এনআইডিতে মায়ের নামের স্থলে স্ত্রীর, কারও বা নিজের নামে অন্য নাম, কারও নামের অর্ধেক অন্য নামে ইত্যাদি। তা সংশোধনের আবেদন করেও দীর্ঘদিন ধরে কোন সমাধান পাননি। মাসের পর মাস ঘোরাঘুরি করে আসছেন।

এদিকে, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে ‘গ’ ক্যাটাগরি অর্থাৎ, অপেক্ষাকৃত জটিল ও পুরাতন আবেদনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত সোমবার এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করেন। 

আদেশে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদনসমূহ নিষ্পত্তির নিমিত্তে বিশেষ কার্যক্রম (ক্রাশ প্রোগ্রাম) পরিচালনার লক্ষ্যে ৬৪ জেলার সব সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ১০ অঞ্চলের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনিষ্পন্ন আবেদনসমূহ ৩০ জুনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে চার ক্যাটাগরির ২১ হাজার ৬০৩টি আবেদন ঝুলে রয়েছে। তবে গত ডিসেম্বর মাসে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৩ হাজার। চার ক্যাটাগরিতে এনআইডি সংশোধনের বিভিন্ন আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়। এর মধ্যে ‘ক’ ক্যাটাগরির আবেদন নিষ্পত্তি করা হয় উপজেলা ও থানা নির্বাচন কার্যালয়ে। ‘খ’ ক্যাটাগরি জেলা কার্যালয়, ‘গ’ ক্যাটাগরি আঞ্চলিক কার্যালয় ও ‘ঘ’ ক্যাটাগরির আবেদন ঢাকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে নিষ্পত্তি করা হয়।

দেখা যায়, জেলা কার্যালয়ে ৯ হাজার ৮৭১টি, উপজেলা-থানা কার্যালয়ে ১৩৯৭টি, আঞ্চলিক কার্যালয়ে (৫ জেলা) ৯ হাজার ৯২৮টি ও ঢাকা নির্বাচন কমিশনে ৪০৭টি আবেদন ঝুলে রয়েছে। এসব আবেদন সংশোধনের জন্য এখনও সিরিয়াল পড়েনি।

চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির উদ্দিন ভোরের ডাককে বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার সাড়ে ৫ মাসে ২১ হাজার ১৫৫টি আবেদন নিষ্পত্তি করেছি। বর্তমানে ১৩ হাজার ২৮৪টি আবেদন পেন্ডিং রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে তা শেষ করা হবে। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে গত মাস থেকে আমরা ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করেছি। একসঙ্গে সাতজন কর্মকর্তা সংশোধনে কাজ করছে।

জানা গেছে, বোয়ালখালীর বাসিন্দা রহিম উল্লাহ ভোটার হয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার এলাকায়। জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের বাংলা বানান ঠিক থাকলেও ইংরেজি বানানে ভুল রয়েছে। এ নিয়ে চার মাস ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাকে। তিনি বলেন, আমার চেয়ে ছেলে-মেয়েদের এনআইডি নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে বেশি। 

তাদের এনআইডিতে আমার নামের বাংলা ও ইংরেজি- দুটোতে বানান শুদ্ধ রয়েছে। এখন আমার এনআইডি নিয়ে সন্তানেরা ভোগান্তিতে পড়েছে। তিন মাস আগে সংশোধনের আবেদন করেছি। এখনও সংশোধন করতে পারিনি। ছোট ভুলের যেন বড় খেসারত দিতে হচ্ছে। শুধু বোয়ালখালীর রহিম উল্লাহ নন, হাজার হাজার মানুষ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন। ছোটখাটো ভুলের জন্য খেসারত দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।

 রাঙ্গুনিয়ার নুরুল আলম নামের এক ব্যক্তি বলেন, এনআইডিতে তার মা ইসলাম খাতুনের স্থানে স্ত্রী শাহীন আকতারের নাম উঠেছে। এটা সংশোধনের জন্য তিনি কয়েক বছর আগে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও কোন সুরাহা হয়নি।বাঁশখালীর সোলায়মান নামে এক ব্যক্তি বলেন, মায়ের এনআইডিতে দিলারা বেগমের স্থলে মোছাম্মৎ দিলারা লেখা রয়েছে। সংশোধন আবেদন করে এক বছর ধরে ঘুরছি। এখনও সংশোধন করতে পারিনি।

 জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসে চট্টগ্রাম জেলা ও আঞ্চলিক কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন সংক্রান্ত ৫৩ হাজার আবেদন ছিল। এর মধ্যে জেলা কার্যালয়ে ছিল ২৮ হাজার ৫১২টি। জেলার ২১ উপজেলা ও থানা কার্যালয়ে ছিল দুই হাজার ২৬৭টি। আর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২২ হাজার ৫১৩টি আবেদন অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ আরো বলেন, মিনিমাম কাগজপত্র জমা দিলেই ছোটখাটো ভুল সংশোধন করে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অফিসে আসতে হচ্ছে না। সবকিছু বিবেচনা করে সংশোধন আবেদন চলতি মাসের মধ্যে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার জন্য ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয়ার কথা তিনি জানান। 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]