ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শুক্রবার ● ১১ জুলাই ২০২৫ ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
ই-পেপার শুক্রবার ● ১১ জুলাই ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা
ভোরের ডাক রিপোর্ট:
প্রকাশ: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ৭:২১ পিএম  (ভিজিটর : ৮৭)
জ্বালানি খাতে আমদানিনির্ভর দেশ বাংলাদেশ। ফলে বৈশি^ক যে কোনো সংকটেই বাংলাদেশের জ্বালানি খাত প্রভাবিত হয়। করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের দাম বৃদ্ধি যে কোনো ইস্যুতেই বাংলাদেশের জ্বালানি খাত টালমাটাল হয়ে পড়ে। এবারও দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। 

যদি এ যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হয়, তবে আমদানিনির্ভর বাংলাদেশের বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে, সেটি বাংলাদেশের জন্য একটি ধাক্কা, আরেকটি শঙ্কার কারণ হরমুজ প্রণালি বন্ধে ইরানের হুমকি, যে প্রণালি দিয়ে বাংলাদেশ তেল ও গ্যাস আমদানি করে থাকে। জ্বালানি সংকটে পরিবহন ছাড়াও বিদ্যুৎ ও শিল্পে প্রভাব পড়তে পারে। বেড়ে যেতে পারে বিদ্যুৎ বিপর্যয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্যাস সংকটে থাকা বাংলাদেশে তেলের মজুদ আছে জুলাই পর্যন্ত। সংঘাত না থামলে এবং ইরান যদি সত্যিই এমন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে, তাহলে কী হবে, তা জানা নেই বাংলাদেশ সরকারের। অন্যদিকে গ্যাসবাহী জাহাজ আসে প্রতি সপ্তাহে। এক সপ্তাহ না এলেই দেখা দেয় সমস্যা। জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এ জন্যই এই যুদ্ধকে ‘বাংলাদেশের জন্যও দুঃসংবাদ’ বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যে তেল মজুদ আছে, তা দিয়ে আর মাস দেড়েক চলা যাবে। 

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসি বছরে যে ৮০ লাখ টনের বেশি জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে, তার ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। জ্বালানিবাহী ট্যাংকার জাহাজগুলো হরমুজ প্রণালি পাড়ি দিয়েই আসে। বাংলাদেশ বছরে যে ৫ থেকে ৬ মিলিয়ন টন তরল গ্যাস বা এলএনজি আমদানি করে, সেটিও এই প্রণালি দিয়ে আসে। বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের এক-পঞ্চমাংশ এই প্রণালি দিয়ে হয়। 

ইরান (উত্তরে) এবং ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (দক্ষিণে) এর মাঝখানে অবস্থিত এই প্রণালি মধ্যপ্রাচ্যের তেল-গ্যাস রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ করিডোর হিসেবে কাজ করে। যেকোনো সময়ে প্রণালিতে ডজনখানেক তেলবাহী ট্যাংকার ঢুকছে বা বের হচ্ছে এবং এখান থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি সরবরাহ হয়। 

এ ব্যাপারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন বলেন, যুদ্ধ যদি স্বল্পমেয়াদি হয়, আর আমাদের যে মজুদের সক্ষমতা, তাতে সংকটে পড়ব না। তবে ইরাক-ইরান যুদ্ধের মতো দীর্ঘমেয়াদি লড়াই হলে যথেষ্ট আশঙ্কার কারণ আছে। সে সময় সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বাংলাদেশ যেহেতু আমদানিনির্ভর দেশ; যুদ্ধ চলমান থাকলে একই ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) বিপণন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ায় বাংলাদেশেও আগামী মাস থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্যদ্রব্যের দাম লিটারে ৪-৫ টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে। হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এবং বাংলাদেশসহ অনেক আমদানিনির্ভর দেশে জ্বালানি সংকট দেখা দেবে। বিশ্ববাজারে ইতোমধ্যে তেলের দাম উর্ধ্বমুখী। একদিনের ব্যবধানে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৭৮ দশমিক ৫ ডলার ছুঁয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ উত্তেজনা দীর্ঘ স্থায়ী হলে তেলের দাম ১০০ থেকে ১৩০ ডলারে যেতে পারে।

জানা যায়, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র ও গভীর হয়েছে। গতকাল সোমবার চতুর্থ দিনে গড়িয়ে সংঘাত। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় বিশ^জুড়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়েছে তেলের দাম। হামলার ভিডিওতে দেখা গেছে, সোমবার সকালে স্থানীয় সময়, ইসরায়েলের উপক‚লীয় শহর হাইফায় বিস্ফোরণ দেখা গেছে। 

ইসরায়েল জানিয়েছে ইরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করার পর বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অবকাঠামোতে আগুন লেগেছে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হাইফার একটি তেল শোধনাগারের আশপাশের এলাকায় আঘাত হেনেছে। এই সংঘাত এই অঞ্চল থেকে তেল রপ্তানিতে বিঘœ ঘটার আশঙ্কা বাড়িয়েছে। বিশ্লেষকেরাও একটি বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা করছেন। ফলে বিশ্বের তেল সরবরাহের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পথ, হরমুজ প্রণালি দিয়ে তেলের প্রবাহ বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য অনুসরণ করে মাসিক গড় দামের ভিত্তিতে তেলের দাম নির্ধারণ করি। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি। যদি হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়, তবে লোহিত সাগর ও আরব সাগর ব্যবহার করে বিকল্প পরিবহন রুট বেছে নিতে হবে, যা জাহাজ ভাড়া ও পরিবহন খরচ বাড়াবে।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]