ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শুক্রবার ● ১১ জুলাই ২০২৫ ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
ই-পেপার শুক্রবার ● ১১ জুলাই ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




২৮ জুন জাতীয় পার্টির সম্মেলন
জি.এম কাদের বাদ, ব্যারিস্টার আনিস চেয়ারম্যান, হাওলাদার মহাসচিব
ভোরের ডাক রিপোর্ট :
প্রকাশ: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ৫:০২ পিএম আপডেট: ১৬.০৬.২০২৫ ৭:৩১ পিএম  (ভিজিটর : ১১৯৬)
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের জাতীয় রাজনীতিতে অনেকটা কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে জাতীয় পার্টি। এর মধ্যে এনসিপি, গণ অধিবকার পরিষদসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে। এই প্রেক্ষাপটেও দলটির চেয়ারম্যান জি.এম কাদের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা শুরু করেন। 

এছাড়া জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রনেতাদের নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক সংগঠন এনসিপির নেতাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন তিনি ও তার অনুসারী নেতারা। এতে দেশের জুলাই আন্দোলনের পক্ষের সমর্থকদের পাশাপাশি নিজ দলের সিনিয়র নেতারাও জি.এম কাদেরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে দলে একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করার অভিযোগে তার প্রতি ক্ষুদ্ধ ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতা শুরু করে দলটির মাঠ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মী সমর্থক।

এই প্রেক্ষাপটে আগামী ২৮ জুন জাতীয় পার্টির দশম সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। সম্মেলনে দলের বর্তমান চেয়ারম্যান এরশাদের ছোট ভাই জি.এম কাদের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সিনিয়র কো. চেয়ারম্যান ও জাপার প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহুমুদ। এছাড়া মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার।

এই দুই শীষ নেতার প্যানেলে কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টুর মতো প্রভাবশালী নেতারা যুক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় মান অভিমানে জাপা ছেড়ে চলে যাওয়া, বা অন্যদলে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীরাও ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে আবারো জাপার পতাকাতলে সমবেত হচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। 

এই প্রক্রিয়ায় সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা ভোরের ডাককে নিশ্চিত করেছেন, আগামী ২৮ জুন ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউন করে সম্মেলনের মাধ্যমে জি.এম কাদেরকে বাদ দিয়ে জাপার নতুন চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব হচ্ছেন এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। 

জানা গেছে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ও সরকার প্রধান ড. ইউনূস ও বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার ও পতিত আওয়ামী লীগের সাথে যোগাযোগের অভিযোগের পাশাপাশি দলে জি.এম কাদেরের একনায়কত্ব, অহমিকায় ফুঁসে উঠেছেন সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কর্মী সমর্থকরা। এছাড়া জি.এম কাদের ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে উঠেছে মনোনয়ন বানিজ্য সহ টাকার বিনিময়ে পদ পদবী দেওয়ার অভিযোগ। 

ফলে দীর্ঘদিন ধরে দলের অভ্যন্তরে জি.এম কাদেরের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ছিল জাপার সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের। তবে বহিষ্কারের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে জি.এম কাদেরের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেন না। এবার সম্মেলনকে ঘিরে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে জি.এম কাদেরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মী। 

এ ব্যাপারে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বক্তব্য মূল্যায়িত হতে হবে জানিয়ে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমি যৌথ নেতৃত্বে বিশ্বাস করি। দলকে জনগণের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বক্তব্য মূল্যায়িত হতে হবে।

এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, তাকে (জি.এম কাদের) আমরা অনুরোধ করেছিলাম সবাইকে নিয়ে দলটাকে ঐক্যবদ্ধ করতে। সিনিয়র নেতার সাথে আলোচনা করে তিনি বক্তব্য বা সিদ্ধান্ত নিলে দল সমৃদ্ধ হতো। কিন্তু জি.এম কাদের আমাদের কথা তো শুনলেনই না উল্টো বললেন, দল সবার মতামতে চলবে না। আমার একক সিদ্ধান্তেই দল চলবে।

জানা গেছে, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চট্টগ্রামের সন্তান হলেও দেশের জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবেও তার সুপরিচিতি রয়েছে। বিএনপির মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে পদার্পণ হলেও এরশাদ সরকারের সময় শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন সফলতার সঙ্গে। 

এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও তিনি বন ও পরিবেশমন্ত্রী, পানিসম্পদমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। সর্বশেষ সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্বও পালন করেছেন। ক্লিন ইমেজের জাতীয় নেতা হিসেবে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে সম্মানের চোখে দেখেন। 

অপরদিকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই করেছেন এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। বৃহত্তর বরিশালের সন্তান রুহুল আমিন হাওলাদার শুরুতে যুক্ত ছিলেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে। পরে এরশাদ সরকারের সময় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন একাধিক মন্ত্রণালয়ে। একাধিক বারের সংসদ সদস্য তিনি। জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে সফল মহাসচিব হিসেবে দলটির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে রয়েছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]