ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ২৫ মে ২০২৫ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ই-পেপার রবিবার ● ২৫ মে ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




মার্কিন কোম্পানি স্টারলিংকের পর
এবার বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী চীনা জায়ান্ট টেনসেন্ট
এসএম শামসুজ্জোহা
প্রকাশ: শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫, ৬:৩০ পিএম  (ভিজিটর : ১১৬)
এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো গভীর হচ্ছে

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আগে থেকেই ভালো। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে তা আরও প্রসারিত হচ্ছে। চলতি মাসের শেষের দিকে ঢাকায় আসছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওয়ন। এই সফরে ১০০ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। এরমধ্যে চীনা বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, বাংলাদেশে এসেছে মার্কিন জায়ান্ট স্টারলিংক। এবার আমাদেও চায়নিজ জায়ান্ট টেনসেন্টের সঙ্গে অফিশিয়ালি বসার কথা রয়েছে। তারাও বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা তাদের দ্রুততম সময়ে পলিসি সাপোর্টের আশ্বাস দিয়েছি।
জানা যায়, চীনা বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি আগামী ৩১ মে ঢাকায় আসবে। তাদের এ সফর মূলত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-কেন্দ্রিক। প্রতিনিধিদলটি বাণিজ্য উপদেষ্টা, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে। সফরকালে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। বিভিন্ন বৈঠক ও আলাপে তারা মূলত বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাই করবেন। চীনের জন্য চট্টগ্রামে যে ইকোনমিক জোন (অর্থনৈতিক অঞ্চল) নির্দিষ্ট করা হয়েছে; তা পরিদর্শনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে চীনা প্রতিনিধিদলটির। বাংলাদেশের আমদানির তুলনায় রপ্তানির বাজার যেহেতু প্রসারিত নয়। তাই এই বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিজেদের পণ্য উৎপাদন করতে চাইছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বন্ধুত্ব প্রায় ৫০ বছরের। এ সময়কালে দেশটির প্রতি আস্থার ঘাটতি হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো গভীর হচ্ছে। চলতি বছরই দেশটিতে গুরুত্বপূর্ণ সফর করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টা। গেল মার্চে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকালে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, চীনের বিনিয়োগ আনার জন্য আগেও উদ্যোগ থাকলেও সেগুলো বেশি দূর আগায়নি; কিন্তু প্রফেসর ইউনূস বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বলেছেন খুব দ্রুত চীনের ইকোনমিক জোন নিয়ে কাজ করতে। তিনি আরও বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত আমাদের জানিয়েছেন, কয়েক ডজন চীনা বিনিয়োগকারী তাদের কাজ শুরু করার জন্য অপেক্ষা করছেন।’ তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিনিয়োগকারীরা আসছেন মানেই যে এখনই বিনিয়োগ করবেন এমন নয়। তারা দেশে এসে বিনিয়োগের সম্ভাবনা আগে যাচাই করবে তারপর বিনিয়োগ করবে। তারা সার্ভে করে দেখবে কোন খাতে কতটা বিনিয়োগ করা যায়। এখান থেকে তাদের লাভের সম্ভাবনা খুঁজবে। তারপর যদি বিনিয়োগ হয়, সেখানে কর্মসংস্থান তৈরি হবে যা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের রপ্তানির বাজার ছোট, এ কারণে চীনা বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে ১০০ বিনিয়োগকারী ঢাকায় আসছেন, তাদের দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে সেভাবে বিনিয়োগের পরিকল্পনা নেই। সূত্র বলছে, তারা ম্যানুফ্যাকচার করতেই বেশি আগ্রহী। ফলে তারা তাদের জন্য বরাদ্দ করা ইকোনমিক জোনে উন্নত পোশাক শিল্প ও কারখানা, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, ইলেকট্রনিক যানবাহন, হাসপাতাল-মেডিকেল সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিখাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগের কথা ভাবছে। এখান থেকে তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প চালু করবে, যাতে সৌরবিদ্যুৎ ও বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যায়। ইলেকট্রিক গাড়ি ও ব্যাটারি উৎপাদন করবে। যা পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহারে সহায়ক হবে। উন্নত টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্প গড়ে তুলবে। যা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হবে। 
এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা ও মেডিকেল সরঞ্জাম উৎপাদন করতে চাইছে ব্যবসায়ীরা, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ করা হবে। চীনের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে বলে জানিয়েছেন চায়না টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেশন ফর ফরেন ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশনের (সিটিইএক্সআইসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুয়াং লিয়ানশেং। হুয়াং লিয়ানশেং বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন পোশাক কারখানা পরিদর্শনকালে কর্মপরিবেশের উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখতে পেয়ে আমরা আনন্দিত। এখানকার শ্রমিকদের কাজের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্যমী মনোভাব প্রশংসনীয়। চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমই সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতার বলেন, বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের বিভিন্ন দিক ও আর্থসামাজিক খাতে শিল্পের অবদান অনেক। বাংলাদেশ কীভাবে পোশাকশিল্পের পরিবর্তিত বিশ্ববাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে উচ্চমূল্যের ওভেন ও কৃত্রিম তন্তুর পোশাক তৈরির দিকে ঝুঁঁকছে; তা উল্লেখ করেন। 
বিজিএমইএর নেতারা বাংলাদেশে উচ্চমূল্যের বস্ত্র ও সংযোগ শিল্পে চীনাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তারা বলেন, এতে উভয় দেশই লাভবান হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সংযোগ শিল্পে চীনা বিনিয়োগ সহায়ক হবে। জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিনিময়ের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের সহায়তাও প্রত্যাশা করেন তাঁরা।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]