দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে কেনাকাটা। উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পাকেরহাট ও উপজেলা সদরের বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে এবারের ঈদ বাজারে ক্রেতাদের মধ্যে আনন্দের পাশাপাশি অসন্তোষও দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে পোশাক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার কারণে।
রবিবার (২৩ মার্চ) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইদের কেনাকাটা করতে আসছেন অনেকেই। সকাল থেকে শুরু করে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ক্রেতাদের ভীড়। তবে দাম কেনাকাটা করতে এসে দাম নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পোশাক, কসমেটিকস ও অন্যান্য ঈদের পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। কৃষিনির্ভর এ উপজেলায় কৃষি পণ্যের দাম কম থাকায় মানুষের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ নেই, যা ঈদের কেনাকাটায় প্রভাব ফেলছে।
পাকেরহাটে পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি পণ্যের দাম আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। শিশুদের পোশাক, কসমেটিকস, এমনকি সাধারণ কাপড়ের দামও অনেক চড়া। ঈদে পরিবারের সবাইকে কিছু দিতে চাই, কিন্তু সেই হিসেবে বাজেট মিলছে না।
ইদের কেনাকাটা করতে বলেন, একই ব্র্যান্ডের পোশাক গত বছর যে পোশাক ৬০০ টাকায় কিনেছি, এবার সেটার দাম ৯০০ টাকা। যার ফলে ইচ্ছা থাকলেও অনেক কিছু কেনা সম্ভব হচ্ছে না ।
অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকেই পোশাকের দাম বেড়ে আসছে, ফলে তারা কম দামে বিক্রি করতে পারছেন না।
পাকেরহাট 'মেহেদী ফ্যাশন অ্যান্ড বিয়ে সাজঘর’-এর স্বত্বাধিকারী মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা নিজেরাও বিপদে আছি। পাইকারি বাজারে আগের তুলনায় কাপড়ের দাম অনেক বেড়েছে। ফলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে লাভ খুব বেশি হচ্ছে না, বরং ক্রেতাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে ক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারেন, সেজন্য উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের তদারকি প্রয়োজন বলছেন সচেতন সমাজের প্রতিনিধিরা।
কবি ও সংগঠক রাগিব বিকে চৌধুরী বলেন, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাজারে ভিড় বাড়ছে। তবে দাম বৃদ্ধির কারণে অনেকেই তাদের কেনাকাটার বাজেট কমাতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পাশাপাশি পাইকারি বাজারেও দাম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, বাজারে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। কোনো বিক্রেতা অতিরিক্ত মূল্য নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।