ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ৬ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার শনিবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




ট্রাম্পের ট্রান্সজেন্ডার সামরিক নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে বাধা দিয়েছেন বিচারক
নিউ ইয়র্ক থেকে কৌশলী ইমা
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫, ১১:১৬ এএম  (ভিজিটর : ৮০)
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের খোলামেলাভাবে চাকরি করা নিষিদ্ধ করণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ কার্যকর করা স্থগিত করেছেন  ফেডারেল বিচারক। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য এ আদেশ দেন বিচারক। এটি প্রশাসনের ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সীমিত করার প্রচেষ্টায় একটি বড় আঘাত।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের জেলা বিচারক আনা রেয়েস তিনি প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ এবং অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তাদের ট্রাম্পের আদেশ কার্যকর করা বা নতুন কোনো নীতি চালু করা থেকে বিরত রেখেছেন। তিনি আরও বলেছেন যে মামলাকারীদের সামরিক মর্যাদা আদালতের পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে।
বিচারক তার আদেশে বলেছেন যে এটি ট্রাম্পের 'সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং প্রস্তুতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া' শীর্ষক আদেশ স্বাক্ষরিত হওয়ার আগে যে সামরিক নীতি ছিল সেই 'স্থিতাবস্থা বজায় রাখার' উদ্দেশ্যে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রশাসনকে আপিল করার সময় দেওয়ার জন্য শুক্রবার পর্যন্ত তার আদেশ কার্যকর হওয়া স্থগিত রেখেছেন।
রেয়েস তার রায়ে লিখেছেন 'আদালত জানে যে এই সিদ্ধান্ত জনসাধারণের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক ও আপিলের জন্ম দেবে'। এটি একটি স্বাস্থ্যকর গণতন্ত্রে উভয়ই ইতিবাচক ফলাফল।'
ছয়জন সক্রিয় সার্ভিস সদস্য এবং দুইজন সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী ব্যক্তি ২৭ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তারা যুক্তি দেন যে এটি তাদের সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন। এ ধরনের আরও দুটি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।
ট্রাম্পের আদেশে বলা হয়েছে যে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা সামরিক বাহিনীর কঠোর মানদণ্ড পূরণ করতে অক্ষম কারণ তারা সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী সক্ষমতাকে হ্রাস করে এবং ইউনিট সংহতির ক্ষতি করে। এটি অতীতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতায় ব্যবহৃত যুক্তির পুনরাবৃত্তি।
নির্বাহী আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে 'একজন পুরুষ যদি বলে যে সে একজন নারী এবং অন্যদেরকে এই মিথ্যাকে স্বীকার করতে বাধ্য করে, তাহলে এটি একটি সেনাসদস্যের প্রয়োজনীয় বিনয় ও আত্মত্যাগের গুণাবলীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।'
রেয়েস তার রায়ে লিখেছেন যে প্রেসিডেন্টের সামরিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করার ক্ষমতা ও দায়িত্ব রয়েছে, তবে সামরিক বাহিনীর নেতারা অতীতেও এই একই যুক্তি ব্যবহার করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, 'প্রথমে সংখ্যালঘুদের, তারপর যুদ্ধে নারীদের, তারপর সমকামীদের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করা হয়েছে।'  তিনি বলেন, তবে আজ আমাদের সামরিক বাহিনী আরও শক্তিশালী এবং আমাদের জাতি আরও নিরাপদ কারণ লক্ষ লক্ষ মানুষ (এবং অন্যান্য ব্যক্তিরাও) যারা এই বাধাগুলোর বিরুদ্ধে গিয়ে সেবা করছেন।
২০১৬ সালে পেন্টাগনের জন্য কমিশনকৃত র‌্যান্ড কর্পোরেশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের সামরিক বাহিনীতে সেবা করার অনুমতি দেওয়া ইউনিট সংহতি, কার্যকরী সক্ষমতা বা প্রস্তুতিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না।
বিচারক রেয়েস বেশ কয়েকটি শুনানির সময় ট্রাম্পের আদেশ ও হেগসেথের নীতি কার্যকর করার ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় (ডিওজে) আইনজীবীদের কঠোর জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
প্রতিরক্ষা বিভাগের ২৬ ফেব্রুয়ারির এক স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে যে 'যাদের বর্তমানে জেন্ডার ডিসফোরিয়ার ইতিহাস বা লক্ষণ রয়েছে, তারা সামরিক বাহিনীর জন্য অনুপযুক্ত।'  এছাড়াও পেন্টাগন কেবলমাত্র দুটি লিঙ্গ পুরুষ ও নারী – স্বীকৃতি দেয় এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যদের তাদের জৈবিক লিঙ্গ অনুযায়ী চাকরি করতে হবে বলে নির্দেশ দেয়।
রেয়েস মন্তব্য করেছেন যে জেন্ডার ডিসফোরিয়ার লক্ষণ যে কোনো কিছু হতে পারে-'ক্রস-ড্রেসিং' থেকে শুরু করে বিষণ্নতার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা পর্যন্ত, যা সামরিক বাহিনীর বহু সদস্যের মধ্যেও দেখা যায় যারা ট্রান্সজেন্ডার নন।
বিচারক বলেন, 'আমি কিভাবে বলতে পারি যে এই নীতি সীমিত, যখন এটি নিজেই প্রায় সমস্ত ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে?'
ন্যায়বিচার বিভাগের আইনজীবী জেসন মানিয়ন যুক্তি দেন যে বিচারকদের বর্তমান সামরিক নেতৃত্বকে সম্মান জানাতে হবে, অতীত প্রশাসনের সামরিক নেতৃত্বকে নয়।
যা তিনি বলেন, 'বিচারক প্রতিরক্ষা বিভাগের নীতির সমর্থনে ব্যবহৃত “বাছাইকৃত” গবেষণার সমালোচনা করেন। পুরোপুরি ভুলভাবে উপস্থাপিত।”
তার রায়ে রেয়েস লিখেছেন, 'হ্যাঁ, আদালত সামরিক বাহিনীর সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখাবে, কিন্তু অন্ধভাবে নয়।'
এর আগে এক শুনানির সময়, বিচারক রেয়েস বিচার বিভাগের আইনজীবী জেসন লিঞ্চকে লক্ষ্য করে বলেন যে ট্রাম্পের আদেশ "বিশুদ্ধ বিদ্বেষ" ছাড়া কিছুই নয় এবং এতে খুব সামান্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'আমি যদি বলি যে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন স্কুলের সব গ্র্যাজুয়েটরা আদালতে উপস্থিত হতে পারবে না কারণ তারা ‘মিথ্যাবাদী’ ও ‘অসত্‌ নৈতিক’ – তাহলে কি এটি বিদ্বেষ নয়?” এরপর বিচার বিভাগ বিচারক রেয়েসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ করে যে তিনি তাদের আইনজীবীকে ‘হেয়’ করেছেন।
এদিকে, সাতজন ট্রান্সজেন্ডার সার্ভিস সদস্য এবং দুইটি এলজিবিটিকিউ নাগরিক অধিকার সংগঠন ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন রাজ্যে আরেকটি মামলা করেছে।
রায়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেনিফার লেভি, যিনি মামলার বাদীদের পক্ষে আইনি সংগঠন অ্যাডভোকেট এবং ডিফেন্ডার- জিএলবিটিকিউ- এর পক্ষে  বলেছেন, 'আদালতের স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ এই নিষেধাজ্ঞার বৈষম্যমূলক চরিত্রকে প্রকাশ করে।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এই রায় আপিলে টিকে থাকবে।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]