প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ৪:২৭ পিএম (ভিজিটর : ১৪৯)
চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে এমনিতেই রোজা রেখে বাইরে বের হওয়া মানুষের কষ্টের শেষ থাকে না। তারমধ্যে সপ্তাহের প্রতিদিনই থাকে যানজট। আর এ যানজট কখনো কখনো তীব্রতর হচ্ছে। গতকাল সোমবারও তীব্র যাজটের কবলে পড়েছে রোজাদাররা। রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত এবং আরেকজন আহত হওয়ার ঘটনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী ও মহাখালী অংশ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পোশাকশ্রমিকরা। এতে পুরো ঢাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সিমাহীন দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমনিতেই রাজধানীর সড়কের তুলানায় বেশি সংখ্যক গাড়ি চলাচল করছে। তারমধ্যে ফুটপাত ও সড়কের একটি অংশজুড়ে হকাররা নানা ব্যবসা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তারমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষরা প্রতিদিনই নানা অযুহাতে সড়ক অবরোধ করে আসছে। রমজানেও তা অব্যাহত রয়েছে। ফলে তীব্র যানজটের কবলে পড়ছে রোজাদাররা। গতকাল সোমবার বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত এবং আরেকজন আহতের ঘটনায় তেমনিভাবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী ও মহাখালী অংশ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পোশাকশ্রমিকরা। এতে ওই এলাকার সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি যানজট ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতেও। বিশেষ করে ইসিবি চত্বর, মাটিকাটা, শ্যাওড়া, খিলক্ষেত, বিমানবন্দরসহ আশপাশের প্রতিটি সড়কে যানবাহনের তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কাজে বের হওয়া মানুষরা। গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর ইসিবি চত্বর, মাটিকাটা থেকে ফ্লাইওভার হয়ে রেডিসন ব্লু হোটেল পর্যন্ত পুরো সড়কেই গাড়ির তীব্র চাপ ছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যেসব গাড়ি অবরোধের কারণে সামনে যেতে পারেনি সেগুলো ফ্লাইওভার দিয়ে মিরপুরের দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলেও অনেকে আবার বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করেন। আর ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখ, উপরে এবং শেষপ্রান্ত পর্যন্ত উভয় পাশের সড়কেই অনেক সময় ধরে গাড়ি থেমে ছিল। আর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী থেকে বিমানবন্দর ছাড়িয়ে উত্তরার জসিমউদ্দীন পর্যন্ত যান চলাচল স্থবির ছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোজা রেখে বাইরে বের হওয়া মানুষজন। দীর্ঘসময় বাসে বসে থাকার পর অনেককে হেঁটে গন্তব্যে পেঁছেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দিনের পর দিন নানা অযুহাতে এভাবে সড়ক অবরোধ বা সড়ক ও ফুটপাত দখল করে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা করা কোন মতে ঠিক না। যারাই সড়ক অবরোধ বা দখল করে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করবে তাদের আইনে আওতায় আনা প্রয়োজন। না হয় এভাবে ঢাকায় চলাচল করা সম্ভব না। ভুক্তভোগীরা বলছেন, রোজায় এমনিই নানা ভোগান্তি থাকে। তারমধ্যে যানজটের কারণে বাসা থেকে অফিস বা হাসপাতাল বা প্রয়োজনে কোন জায়গাতেই সময়মতো পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। আর এরজন্য যারা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন বা বা দখল করে নানা কার্যক্রম চালাচ্ছে তারাই দায়ী। ফলে আর যাতে কেউ সড়ক অবরোধ বা দখল করতে না পারে সেজন্য কঠোর আইন করার দাবি জানিয়েছেন রাজধানীবাসী। সড়ক দখল বা অবরোধ বন্ধে কঠোন আইন করার দাবি জানিয়েছেন চাকরিজীবী আমিনুল হক। তিনি বলেন, প্রতিনিই সড়ক দখল করে আন্দোলন করছে কেউ না কেউ। আবার হকাররা সড়ক ও ফুটপাত দখল করে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করায় আমরা তীব্র যানজটের কবলে পড়ছি। ফলে এথেকে মুক্তি পেতে কঠোর আইন করার বিকল্প নেই। এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসের জন্য বের হয়েছিলাম। ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেও খিলক্ষেত পার হওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেটে এখন বাসায় ফিরে যাচ্ছি। এভাবে আর চলতে পারেন না। বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল সরকার বলেন, তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের অবরোধের কারণে গতকাল তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের আমরা বারবার আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছি তারা এই ঘটনার বিচার পাবে। এবং এক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করা হবে। সকাল থেকে তাদের আমরা বুঝিয়ে আসছি কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনছেন না। তারা উল্টো পুলিশের প্রতি মারমুখি আচরণ করেছেন। মূলত বনানীতে রাস্তা বন্ধ থাকার কারণেই সারা ঢাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।