
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট-অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ সে সময় বিপ্লবের সময় থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র দুর্বৃত্তদের হাতে ছিল, তখন পুলিশ অসংগঠিত ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে, কিন্তু একটা পর্যায়ে তা আবার খারাপ হতে শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে সরকার একটা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। যা এখনো চলমান আছে। কিন্তু ডেভিল হান্ট চলমান অবস্থায় রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ফের অবনতি হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুন রাহাজানি বেড়ে যাওয়াতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ‘অলআউট অ্যাকশন’ নামে ঢাকায় একটা বিশেষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখা ডিবি এই অভিযান পরিচালনা করবে। অভিযানে মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আউট করা বা দূর করা। উদ্দেশ্য খুবই ভালো, আমরা এই অভিযানের সাফল্য কমান করছি। তবে অভিযানের সাফল্য নিয়ে কিছুটা সংশয় থেকেই যাচ্ছে। ডিবি একটি সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠান, তারা আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে অবশ্যই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক ১ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে এই নতুন অভিযানের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অলআউট অ্যাকশানে যাচ্ছে ডিবি। তাছাড়া ছোট-বড় অপরাধীদেরও ছাড়া হবে না। অপরাধীর ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করছে ডিবি। রোজায় মানুষের কর্মকান্ড বেড়ে যায়, বিশেষ করে আর্থিক লেনদেন হয় বেশি। শপিংমল, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ভিড় বাড়ে। স্টেশন, টার্মিনাল প্রভৃতি এলাকায় মানুষের উপস্থিতি বাড়ে। এসব জায়গায় কেউ যাতে অপরাধ করতে না পারে সেজন্য আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, কেউ সাদা পোশাকে তল্লাশি করতে চাইলে আমাদের জানান। অপরাধীর তথ্য দিয়ে আমাদের সহায়তা করুন।’
রাজধানী ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে ডিবি প্রধানের বক্তব্য বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি) একটা ডিএমপির শক্তিশালী শাখা। এতে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত লোকবল আছে। অতীতে এই প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছিল। এখন ডিবির সেই শক্তিকে যদি অপরাধ দমনে কাজে লাগানো হয় তা অবশ্যই ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা মনে করি। আমরা আশা করি বাকি রমজান এবং ঈদের আগে পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে, যাতে ডিবির অবদান থাকবে।