প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:৫৬ এএম (ভিজিটর : ১১৪)
একেবারে হঠাৎ করে নয়, কিছুটা আস্তে আস্তে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে হতে এখন বেশ খারাপ হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এতই খারাপ হয়ে পড়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রোববার। তবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে সমস্যার সমাধান হবে বলে আমাদের মনে হয় না। সমস্যার শেকড় অন্যত্র। অতীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড (ক্রসফায়ার) করা হয়েছে। বর্তমান সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড না করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এমনকি আটককৃতদের মানবাধিকার রক্ষায়ও সরকার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু কোনো অসুখে উচ্চ মাত্রার ওষুধে কাজ হয় না। এ ক্ষেত্রে আইনের মধ্যে থেকেই কঠোর হওয়া সম্ভব। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালকে অতি দ্রুত বিচার আদালতে রূপান্তর করে দুর্বৃত্তদের ধরে অতিদ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে পারলে হয়ত পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। এরকম কিছু ভাবা যেতে পারে।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর দেশে পুলিশ ছিল না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে সরকার সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু কিছুদিন পর তা আবার অবনতির দিকে যায়, যার প্রেক্ষিতে সরকার অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ নামে এক বিশেষ অভিযান শুরু করে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে। তাতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু ক’দিন পর আবার পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি উত্তরায় এক যুগলকে রামদা দিয়ে কোপানোর দৃশ্য ভাইরাল হলে জাতি স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। এরপর বনশ্রীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ২০০ ভরি সোনা লুট করা হয়। মোহাম্মদপুর রিকশা যাত্রী ২ নারীর ওপর হামলার দৃশ্য ভাইরাল হয়। এতসব ঘটনার প্রেক্ষিতে গত রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে দাবি করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করে মিছিল বের করেন। যার প্রেক্ষিতে পুলিশ প্রধান ঘোষণা করেছেন বিশেষ ৩টি ইউনিট কাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে যৌথবাহিনী টহল সন্ধ্যার পর জোরদার করা হয়েছে।
সরকারের প্রচেষ্টার অভাব নেই। কিন্তু বাংলাদেশ ৫৩ বছর ধরে চলেছে এক ধারায় এখন তা হুট করে পাল্টাতে গেলে তা কার্যকর হবে না। দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠো হতেই হবে। সেটা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড না করে, আসামিদের মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন না করেই কীভাবে করা যায় তা খুঁজে বের করতে হবে। সেটা অতিদ্রুত বিচারের মাধ্যমেই সম্ভব বলে আমরা মনে করছি।