প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:১৬ পিএম (ভিজিটর : ৯০)

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার রাজধানী ঢাকার অধিবাসীদের একটা স্বাভাবিক দিনই শুরু হয়েছিল। কিন্তু একটু বেলা হলে যখন লোকজন অফিস আদালত, হাসপাতাল বা যে কোনো ধরনের কাজ কর্মে রাস্তায় বের হন, বেরিয়েই বিপদে পড়েন। বিশেষ করে যারা মধ্যবিত্তের দ্রুতগ্রামী বাহন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাতায়াত করেন। এদিন সকাল থেকেই সিএনজিচালকদের ধর্মঘট শুরু হয়। ফলে যানবাহন পেতে সমস্যা শুরু হয়। এরপর যারা বহু কষ্টে উবার বা অন্য কোনোভাবে ট্যাক্সি নিয়ে যাত্রা করেন, তারা কিছুটা গিয়েই যানজটে পড়েন। কারণ সিএনজি চালকরা শুধু ধর্মঘট করে ক্ষান্ত হননি, তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে একটা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল সারা রাজধানীজুড়ে। ক’দিন আগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরাও একই কাজ করেছিল। সিএনজিচালকরা অটোচালকদের মতোই দাবি আদায় করে সড়ক অবরোধ ওঠায় এবং আবার সিএনজি চালাতে শুরু করে। ধর্মঘট করা বাংলাদেশে সাংবিধানিক অধিকার, কিন্তু কথায় কথায় সড়ক অবরোধ করা মোটেই কোনো সাংবিধানিক অধিকার নয়। রাজধানবাসীকে এই হঠাৎ হঠাৎ দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী তথাকথিত আন্দোলন থেকে মুক্তি দেবে কে? অবশ্যই সেই দায়িত্ব সরকারের। সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে কীভাবে কোন পদ্ধতিতে রাজধানীবাসীকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়া যায়।
প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, রাজধানীতে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রীদের ভাড়া এবং চালকদের দৈনিক জমার অঙ্ক সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আছে। কিন্তু সেটা মান্য হচ্ছে না। সিএনজি মিটারে না চলে ইচ্ছেমতো ভাড়া নিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে। আবার চালকরা মালিকদের যে জমা দিয়ে থাকেন সেই হারও মানছেন না মালিকরা, এরকম পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সিএনজি খাতে নৈরাজ্য বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছিল। বিআরটি-এ মিটারে সিএনজি চালনোর নির্দেশনা দিয়েছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে সিএনজি মালিক চালকরা ধর্মঘটের ডাক দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করে।
রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা বদলাতে হবে। রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এসে তারা তাদের মতো এসব নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু নির্বাচন পর্যন্ত তো অন্তর্বর্তী সরাকর ক্ষমতায় আছে। যেহেতু সরকার বল প্রয়োগ করতে চাচ্ছে না, তারা একটা ঘোষণা দিতে পারে ‘যারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে তাদের দাবি দ্রুত মেনে নেয়া হবে। যারা অরাজকতা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ শুধু ঘোষণা নয় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের দাবিও মেনে নিতে হবে, তাহলে হয়ত পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।