ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বুধবার ● ১৯ মার্চ ২০২৫ ৫ চৈত্র ১৪৩১
ই-পেপার বুধবার ● ১৯ মার্চ ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




পাইকারি ও খুচরায় দ্রুত বাড়ছে দাম
বাজারে কর্পোরেট ছলচাতুরী: রোজার উত্তাপ
ভোরের ডাক রিপোর্ট
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৪৫ এএম  (ভিজিটর : ২০৪)

রমজান এলে ভোগ্যপণ্যের বাজারে ছোলা ও খেজুর নিয়ে ক্রেতাদের দুঃশ্চিন্তা বেড়েছে। এরমধ্যে খেজুরের বাজারে স্বস্তির সুবাতাস বইলেও অশান্ত ছোলার বাজার। ছোলার চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে পবিত্র রমজান মাসে। তাই এখন থেকেই বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। ইফতারির অতি প্রয়োজনীয় এ পণ্যের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ভোক্তাদের মধ্যে জেঁকে বসেছে রোজার টেনশন। গতবছরের চেয়ে এবার আমদানির পরিমাণ বেশি; তাও খোলাবাজারে ছোলার দাম বেশি। ক্রেতাদের দাবি, রমজানের বেচাকেনাতে সারাবছরের মুনাফা তুলে নেয় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তা মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। বিক্রেতারা বলছেন, কর্পোরেটের ইশারাতে দাম কমার সম্ভাবনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে আমদানিকারক কোম্পানিগুলো সরবরাহ কমিয়ে বাজারে সংকট তৈরি করে; দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বলছে, এবারের রোজায় দেশের মানুষকে ছোলা কিনতে হবে আগের চেয়ে অনেকটা বেশি দামে। কারণ দুটি- ছোলার আমদানি ব্যয় বেশি এবং সরবরাহ নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে। এছাড়া পবিত্র এই রমজান মাসকে সামনে রেখে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বাজার অস্থির করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তবে সরকার এ ব্যাপারে সরকার সতর্ক রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানির তথ্য যেমন থাকবে থাক বাজারে চিত্র ভিন্ন। বাজারের অবস্থা ভালো না। গতবছরের চেয়ে এ বছর ছোলার দাম ৫ থেকে ৬ টাকা বাড়তি রয়েছে। রমজানে ছোলার যে দাম কমবে তা বলা যাচ্ছে না। এবার অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি আফ্রিকার তাঞ্জানিয়া থেকে ছোলা বেশি আমদানি হচ্ছে। ডিউটি ফি-ও কম। সবঠিক থাকলেও তারা এলসি খুলতে পারছেন না। ডলার ক্রাইসিসের কারণে ব্যাংকগুলো সবাইকে এলসি খুলতে দিচ্ছে না। এলসি খুলতে পারলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের হাতে বাজারটা থাকত। তথ্যমতে, বর্তমানে পাইকারিতে ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১৮ টাকা। আর সেই ছোলা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। যদিও গত রমজানের সময় পাইকারিতে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা এবং খুচরায় ১০৫ থেকে ১০৮ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। রমজানের আগেই এভাবে ছোলার দাম বাড়তি হওয়ায় ব্যবসায়ী ও ভোক্তা উভয়কে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে খাতুনগঞ্জের তৈয়্যবিয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ও আমদানিকারক সোলায়মান বাদশা বলেন, এবার বিশ্ববাজারে ছোলার দাম কম। কিন্তু দেশে ছোলার দামতো বাড়তি। কমার সম্ভাবনা কতটুকু আছে তাও বলতে পারছি না। যতটুকু জানি-বড় লটে ছোলা এনেছে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। এরমধ্যে আকিজ, নাবিল, সিটি, একেএস সহ কয়েকটি শিল্প গ্রুপ ছোলা আমদানি করেছে। তাদের ইচ্ছায় দাম কমলে কমতে পারে। কিন্তু মনে হচ্ছে, এ কয়েকদিনে দাম আরও বাড়িয়ে তারপর তারা রমজানে ৮-দশ টাকা কমাতে পারে। এতে গতবারের তুলনায় দাম কমার সম্ভবনা হয়তো থাকবে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের জুলাই-অক্টোবরে ছোলা আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৬৮২ টন। অথচ গত বছরের একই সময়ে ১১ হাজার ৩৬৬ টন ছোলা আমদানি হয়েছিল। তথ্যমতে, দেশে বছরে ছোলার চাহিদা ২ লাখ টন। এর মধ্যে রোজার এক মাসেই প্রয়োজন হয় এক লাখ টনের মতো। রমজানের চাহিদা বিবেচনায় এবার আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত দরপত্র অনুসরণ করে ছোলা আমদানির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ১০ হাজার টন ছোলা ক্রয়ের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ১০১ কোটি ৯৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। যে ঘোষণা এসেছে, তাতেই প্রতি কেজি ছোলার দাম পড়বে ১০৯ টাকা ৩৯ পয়সা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে বাজারে যে ছোলাগুলো আছে সেগুলোর মজুদ শেষের পথে। এ সপ্তাহ পর আমদানি হওয়া ছোলা বাজারে ঢুকবে। সেই সঙ্গে বর্তমানে ছোলা যে দামে বিক্রি হচ্ছে; সেই দামে আর বিক্রি করা যাবে না। আমদানি হওয়া নতুন ছোলার দাম আরও বেড়ে যাবে। বলা যায়- বাজারে নতুন করে ছোলা ঢুকলেই হু হু করে দাম বেড়ে যাবে। কেননা এবারের খরচ বেশি। ছোলার পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে আড়তগুলোতে এখন যে ছোলা রয়েছে তা অস্ট্রেলিয়ান। মানভেদে প্রতিমণ ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫৫০ থেকে ৩ হাজার ৬৫০ টাকায়। প্রতিমণে ৩৭.৩২ কেজি হিসাবে প্রতিকেজির পাইকারি মূল্য ৯৫ টাকা (৯৫.১২ পয়সা) থেকে ৯৮ টাকা (৯৭.৮০ পয়সা) পড়ছে। তবে গত শনিবার থেকেই পণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করে। গেল সপ্তাহে পাইকারিতে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮৭ থেকে ৯৪ টাকায়। এর আগের সপ্তাহে ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা।
দামের শঙ্কা নিয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, বিগত সরকারের পতনের পরে তো তাদের সমর্থিত ব্যবসায়ীরা তো আত্মগোপনে চলে গেছে। সুতরাং বাজারে আগের সিন্ডিকেট তো ভেঙে গেছে। এ অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করাটা সরকারের জন্য সহজ হলেও তা করতে পারেনি। এক পক্ষের পালাবদলে অন্য পক্ষ এসে সুযোগ নিচ্ছে। তাদের দৌরাত্ম্যে লাগাম টানা সরকারের দায়িত্ব। ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলে তাদের মর্জি মতো সারাবছরের মুনাফা এক মাসে তুলে নিতে চাইবে। তাই সরকারের দায়িত্ব মাঠ প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা। রমজান চলাকালে লোক দেখানো কয়েকটা অভিযান না চালিয়ে প্রশাসন যদি আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করে তাহলে সাধারণ ক্রেতাদের ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]