ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বুধবার ● ১৯ মার্চ ২০২৫ ৫ চৈত্র ১৪৩১
ই-পেপার বুধবার ● ১৯ মার্চ ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় উপাসনালয়ে অভিবাসী গ্রেপ্তার বন্ধে আদালতে মামলা
কৌশলী ইমা, নিউ ইয়র্ক থেকে
প্রকাশ: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৪৩ এএম  (ভিজিটর : ১১৫)

যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় উপাসনালয়ে অভিবাসী গ্রেপ্তার অভিযান বন্ধে ফেডারেল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এ মামলাটি দায়ের করেন লাখ লাখ আমেরিকানদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রায় দুই ডজন খ্রিস্টান ও ইহুদি সংগঠন। এর মধ্যে এপিসকোপাল চার্চ, ইউনিয়ন ফর রিফর্ম জুডাইজম, মেনোনাইট এবং ইউনিটারিয়ান ইউনিভার্সালিস্টরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তারা ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। অভিবাসন এজেন্টদের উপাসনালয়ে (গির্জা, মন্দির, উপাসনাগার) গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে মানুষের স্বাধীনতা বিনষ্ট হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াশিংটনের মার্কিন জেলা আদালতে দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে যে এই নতুন নীতি অভিযানের ভয় সৃষ্টি করছে। যার ফলে উপাসনালয়ে যোগদানের হার কমছে এবং গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে এই নীতি ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করছে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের ধর্মীয় সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে।
এপিসকোপাল চার্চের প্রধান বিশপ, শান রোয়ে বলেন আমাদের মধ্যে অভিবাসী, শরণার্থী, এবং বৈধ-অবৈধভাবে বসবাসকারী উভয় ধরনের মানুষ রয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই মামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে, মার্কিন বিচার বিভাগ  ডিওজে) শুক্রবার একটি স্মারকলিপি দাখিল করেছে। সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে এই মামলার ভিত্তি ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য ক্ষতির অনুমানমূলক আশঙ্কার ওপর নির্ভরশীল, যা একটি নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য যথেষ্ট নয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে যে দীর্ঘদিন ধরে উপাসনালয়ে অভিবাসন আইন প্রয়োগ করা হয়েছে এবং জানুয়ারিতে ঘোষিত নতুন নীতিতে কেবল এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যে মাঠ পর্যায়ের এজেন্টরা সাধারণ জ্ঞান ও বিবেচনা অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়কের অনুমোদন ছাড়াই অভিযান চালাতে পারবে।
মামলাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে, যার মধ্যে ১০ লক্ষের বেশি রিফর্ম জুডাইসম অনুসারী, ১.৫ মিলিয়ন এপিসকোপালিয়ান, ১.১ মিলিয়ন প্রেসবাইটেরিয়ান চার্চ (ইউএসএ)-এর সদস্য এবং ১.৫ মিলিয়ন আফ্রিকান মেথডিস্ট এপিসকোপাল চার্চের সদস্য অন্তর্ভুক্ত।
অন্য বাদীদের মধ্যে রয়েছেন খ্রিস্টান চার্চ (ডিসাইপ্লস অব ক্রাইস্ট), চার্চ অফ দ্য ব্রেদ্রেন, টেক্সাসের হিস্পানিক ব্যাপটিস্ট সংঘ, কোয়েকারদের ফ্রেন্ডস জেনারেল কনফারেন্স, ইউনাইটেড মেথডিস্ট চার্চ এবং ইউনাইটেড চার্চ অব ক্রাইস্ট-এর আঞ্চলিক শাখাগুলো।
মামলার প্রধান আইনজীবী কেলসি করক্রান বলেন,মামলার বিশাল পরিসর প্রশাসনের পক্ষে উপেক্ষা করা কঠিন হবে। যিনি জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর কনস্টিটিউশনাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড প্রোটেকশনের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
বাদীরা মামলায় যোগ দিয়েছেন কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থ, শিক্ষা এবং ঐতিহ্য 'শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী এবং অভিবাসীদেরকে গ্রহণ ও সেবা করার ধর্মীয় দায়িত্ব' নির্ধারণ করেছে, তা তারা বৈধ নথিপত্রধারী হোক বা না হোক।
ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির পরিবর্তনের আগে, অভিবাসন কর্মকর্তাদের সাধারণত উপাসনালয় বা স্কুল ও হাসপাতালের মতো "সংবেদনশীল স্থানে" অভিযান চালাতে বিচারিক পরোয়ানা বা বিশেষ অনুমতি প্রয়োজন হতো। কিন্তু নতুন নীতির কারণে "এখন যেকোনো জায়গায়, যেকোনো সময় অভিযান চালানো যেতে পারে," বলেন করক্রান।
তিনি একটি সাম্প্রতিক ঘটনার উল্লেখ করেন যেখানে একজন হন্ডুরান ব্যক্তি আটলান্টার একটি গির্জার বাইরে গ্রেপ্তার হন, যখন ভেতরে প্রার্থনা চলছিল।
মামলার এক বাদী বলেন আমরা যদি আতঙ্কে থাকি, তাহলে স্বাধীনভাবে উপাসনা করতে পারবো না। আমরা এই মামলার মাধ্যমে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পালনের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে চাই এবং যীশুর আদেশ অনুযায়ী আমাদের প্রতিবেশীদের ভালোবাসতে চাই।
নতুন মামলাটি পূর্বে দায়ের করা ২৭ জানুয়ারির কোয়েকার মামলার যুক্তিগুলোর পুনরাবৃত্তি ও সম্প্রসারণ করেছে। পূর্ববর্তী মামলাটি বর্তমানে মেরিল্যান্ডের মার্কিন জেলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে অনেক উপাসনালয়ে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র, আশ্রয়প্রদান ও অন্যান্য সহায়তামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যা এখন অভিবাসন নীতির কারণে ব্যাহত হচ্ছে।
লাতিনো খ্রিস্টান ন্যাশনাল নেটওয়ার্কের প্রেসিডেন্ট রেভ. কার্লোস মালাভে বলেন, আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষ সরকারের ওপর আস্থাহীনতায় ভুগছে। তারা দোকানে যেতে ভয় পাচ্ছে, গির্জায় যেতে এড়িয়ে চলছে। অনেক গির্জা এখন অনলাইন সেবা প্রদান করছে কারণ পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
অন্যদিকে, অনেক রক্ষণশীল ধর্মীয় নেতা ও আইন বিশেষজ্ঞরা নতুন নীতির সমর্থন করছেন।
লিবার্টি কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা ম্যাট স্টেভার বলেন,উপাসনালয় হলো উপাসনার জন্য, অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নয়। অপরাধীরা উপাসনালয়ে প্রবেশ করলেই আইন থেকে রক্ষা পাবে না। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয় নয়।
বোস্টন কলেজের অধ্যাপক ক্যাথলিন ক্যাভেনি বলেন, উপাসনালয়গুলো সাধারণ ভবন নয়—এগুলো যেন দূতাবাসের মতো। আমি বিশ্বাস করি, গির্জাগুলো এক চিরন্তন রাষ্ট্রের অংশ।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]