গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম।
তিনি বলেছেন, এই অন্তরবর্তীকালীন সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ এবং ইন্টেলিজেন্স যদি শনিবার রাতের মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার না করতে পারে, তাহলে আমাদের তাঁদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। শনিবার দুপুরে গাজীপুরের রাজবাড়ি মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এসময় তিনি উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, এই অভ্যুত্থানে খুনি শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যে দুই-তিনটি জেলা রণক্ষেত্র হয়েছিল, যে দুই-তিনটি জেলার ছাত্র-জনতা বুক পেতে দিয়ে, রক্ত দিয়ে অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে সেই জেলাগুলোর মধ্যে একটি গাজীপুর।
এই অভ্যুত্থানের যারা সহযোদ্ধা, তাঁরা তখনও বুক পেতে দিয়েছিল, এখনও জীবন দিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, খুনি জাহাঙ্গীরের দোসররা যদি গাজীপুরে আবার উৎপাত করতে চায়, তাহলে এই ছাত্র-জনতা তাঁদের আর ছাড় দেবে না। গেল শুক্রবার আমাদের অনেক সহযোদ্ধাকে তাঁরা রক্তাক্ত করেছে, জীবননাশের হুমকি দিয়েছে।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্য বলেন, যে ছাত্র-জনতা রক্ত আর জীবন দিয়ে আপনাদের সরকারে বসিয়েছে, তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে?
তিনি শুক্রবারের ঘটনায় পুলিশের সমালোচনা করে সারজিস বলেন, যে পুলিশ প্রশাসন নতুন করে ওই চেয়ারগুলোতে বসেছে, তাঁরা এখনও কেন বাংলা সিনেমার মতো ঘটনা ঘটার পর রাজপথে আসে? আমরা কেন এখনও দুই ঘণ্টা ধরে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাঁদের মাঠে আনতে পারি না? এখনও যদি সরকার কিংবা পুলিশ মনে করে যে, তাঁরা ৯টা-৫টা অফিস করবে, তাহলে তাদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলছি।
সারজিস আলম নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করে বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে দিয়ে এই নতুন বাংলাদেশ মুক্ত করেছে। তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। খুনি হাসিনার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এখনও গাজীপুরে ঘুরে বেরাচ্ছে। এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার যোদ্ধাদের হুমকি দিচ্ছে, তাঁদের আজ রাতের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুট হওয়ার সময় মহল্লাবাসীর হামলায় কয়েকজন আহত হন।