প্রকাশ: শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম (ভিজিটর : ৮৬)

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে খুব ভালো কোনো খবর পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র নারী ক্রীড়াবিদদের কিছু সাফল্য জাতিকে আনন্দ দিতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে নারী ক্রিকেট দলের এশিয়ান ট্রফি বিজয় আর ২০২৪ সালে নারী ফুটবল দলের সাফট্রফি বিজয়ে জাতি আপ্লুত হয়। দেশে যখন পুরুষ ফুটবল দল এবং পুরুষ ক্রিকেট দল ক্রমাগতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে তখন নারীরা আশার আলো দেখাচ্ছেন, নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন স্বগর্বে। কিন্তু সেই নারী ফুটবলাারররা এখন সংকটে পড়েছেন। প্রথমত তারা বিদেশি কোচ বাটলারের রোষানলে পড়েছেন, দ্বিতীয়ত সাফজয়ী ফুটবল দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার সুমাইয়াকে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ব্যাপারে সুমাইয়া নিজেই ফেসবুকে বিবৃতি দিয়েছে। অন্যদিকে সাম্প্রতি জয়পুরহাটের তিলকপুর ও আক্কেলপুর উপজেলায় নারী ফুটবলারদের খেলায় বাধা দেয়া হয় এবং খেলা ভন্ডুল করা হয়। সব মিলিয়ে ক্রীড়া ক্ষেত্রে নারীদের যে অগ্রগতি তা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাফজয়ী নারী ফুটবলাররা পরিশ্রম করে জয়ী নারী ফুটবলার পরিশ্রম করে দেশের জন্য বিরল সামান বয়ে এনেছেন তাদের কেউ ধর্ষণ এবং হত্যার হুমকি দেবে সেটা মোটেই গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা আশা করব সরকার এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।
এমনিতে বাংলাদেশ দু’বার সাফজয়ী নারী ফুটবল বেশ কিছুদিন ধরে সংকটে আছে। দলের সিনিয়র সদস্যরা অনুশীলনে অংশ নিচ্ছেন না। কোচ বাটলারের সাথে মতভেদের কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বাটলার সিনিয়রদের সরিয়ে নতুনদের সুযোগ দিতে তৎপর। এটা কোনো বড় সমস্যা নয়। ক্রিকেটে হাতুরু সিংহেরও এই সমস্যা ছিল। এই সমস্যার কারণে সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে তার সাথে বাটলারের সাথে সমস্যার কোনো সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না। সুমাইয়া তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন,‘ বাবা-মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ফুটবলার হয়েছিলাম। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে ফুটবলার হয়েছি তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। আমাকে ধর্ষণ এবং হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।’
বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা হয়তো তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য ফুটবল খেলে থাকেন। কিন্তু তারা যখন পরিশ্রম করে দলকে জেতান তাতে তাদের স্বপ্নপূরণ হয় ঠিকই, কিন্তু সেই সাথে পুরো দেশের স্বপ্নপূরণ হয়। পুরো জাতি আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। খেলার মাঠে তারা শুধু খেলোয়াড় নয়। পুরো দেশের প্রতীকে পরিণত হন। তারা দেশের সম্পদ। ধর্ষণ এবং হত্যার হুমকি গুরুতর অপরাধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত হবে দুর্বৃত্তদের ধরে আইনে সোপর্দ করা। আপাতত জাতীয় নারী দলের সব সদস্যকে প্রটেকশন দেয়া হোক।