প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩:০৫ পিএম (ভিজিটর : ১০৫)
প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের জুনে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে কাজ তো শেষ হয়নি এখনো ৫৮ শতাংশ কাজ বাকি। অর্থাৎ কাজ হয়েছে মাত্র ৪২ শতাংশ। মূলত অর্থবরাদ্দের অভাবে প্রকল্পের কাজ প্রত্যাশিত গতিতে এগোয়নি। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি। কারণ দেড় হাজার কোটি ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়বে ১০ লাখ টন। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুব রহমান। তিনি এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বরাদ্দ অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজের গতি কিছুটা কমেছে। তবে প্রকল্পর কাজ চলমান আছে।’ প্রকল্পের কাজ চলমান থাকা ভালো কথা, কিন্তু বরাদ্দ না পেলে তা কীভাবে চলমান থাকবে বোধগম্য নয়। অবশ্যই বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং তা ২০২৬ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। কারণ এক বছর পিছালেই দেশের ১০ লাখ টন অতিরিক্ত কাদ্য শস্য প্রাপ্তি হবে না। সুতরাং বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, তিস্তা সেচ প্রকল্পের পরিধি বাড়ানোর অংশ হিসেবে ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘তিস্তাত সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সাম্প্রসারণ প্রকল্প পাস হয়। এরপর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় পুনর্বাসন ও সাম্প্রসারণ প্রকল্প পাস হয়। কমান্ড এলাকার ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের পানি পৌঁছে দিতে ৭৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি সেচ ক্যানেল নির্মাণে কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে শুরুর পর থেকে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়াতে প্রকল্পের কাজে শ্লথগতি দেখা দেয়। প্রতিবেশী দেশ একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহারের পর যে পরিমাণ পানি পাওয়া যাচ্ছে তার পূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
দেশের অর্থ সংকট চলছে এটা ঠিক। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অর্থ সাশ্রয়ের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে সরকার। তবে অত্যাবশকীয় উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার মতো তাও খারাপ অবস্থা মনে হয় বাংলাদেশে হয়নি। তবে ধরণা করা যেতে পারে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে পূর্বাপর ঘটনা প্রবাহের কারণে হয়তো বিগত সরকার ধীরেচলো নীতি অবলম্ব করেছিল। চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল। ভারতে আপত্তির কারণে তা পিছিয়ে যায়। পরে ভারত এই প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী হয়। সে ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিলে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে ওই প্রকল্প করবে বলে কথা হয়। এসব কারণে হয়ত এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কৌশল নেয়া হয়। কিন্তু এটা তো এখন বেশ পরিষ্কার, আপাতত ওই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো সম্ভাবনা নেই। সুতরাং সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পকে গুরুত্ব দেয়া হোক, অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হোক।