প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:২৯ এএম (ভিজিটর : ৫৪)

গত ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর তারা রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম প্রথম বিএনপি-জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দলই সরকারের এই কর্মসূচিতে সমর্থন এবং সংস্কারের জন্য যৌক্তিক সময় দেয়ার কথা বলেছেন। সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন এখনো সবগুলো দলেরই আছে। তবে এর সময় নিয়ে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। বিএনপি দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে গত ২-৩ মাস ধরে। ইদানীং তাদের কোনো কোনো নেতা দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার কথাও বলছেন। জামায়াত প্রথম প্রথম সংস্কার কর্মসূচিতে জোর দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নিয়ে অতটা তাগিত ছিল না। কিন্তু ইদানীং জামায়াতেরও কোনো কোনো নেতা চলতি বচরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছেন। বেশ কটা ছোট দলও একইভাবে কথা বলছেন। তবে এগুলো তাদের রাজনৈতিক অবস্থানের কথা। কিন্তু সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরার যে কথা বলেছে সেটা বিশেষভাবে ভাবার বিষয়। দেশসেরা অর্থনীতিবিদরা সিপিডির গবেষণা কর্মে সঙ্গে জড়িত। তারা অর্থনেতিক বিষয়েই কথা বলে থাকেন। তবে মাঝেমধ্যে রাজনৈতিক বিষয়েও কথা বলেন, সেই রাজনৈতিক বিষয়ের সাথে অর্থনীতির সম্পর্ক থাকে। তারা গণতন্ত্রের ফেরার যে তাগাদা দিয়েছেন তার সঙ্গেও অর্থনীতির সম্পর্ক আছে। সিডিপির মন্তব্য আমলে নেয়ার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাব।
গত ২৯ জানুয়ারি সিডিপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মিডিয়া ব্রিফিংকালে সংস্থার সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজকুর রহমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দ্রুত গণতন্ত্রে উত্তরণের তাগিদ দেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের মধ্যে বৈপরীত্য নেই। উভয়ই সামন্তরালভাবে চলবে। তবে যত দ্রুত সম্ভব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।’ ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৪-২৫ : সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবোত্তরকালে দায়িত্ব নেয়া সরকারের প্রধান দুই চ্যালেঞ্জ ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার। ধীরে ধীরে হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এক ধরনের স্থিতিশীলতা এসেছে। অর্থনৈতিক বিষয় ঠিক করার জন্য দেশসেরা অর্থনীতিবিদরাই দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি-বাণিজ্য ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি বিনিয়োগ পুঁজিবাজার প্রভৃতি ইতিবাচক ধারার ফেরেনি। দেশে নির্বাচিত সরকার না হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আস্থা পাবে বলে অনেকের ধারণা। কিন্তু দেশবাসী সংস্করও চায়। সুতরাং আমরা বলব সংস্কার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করুন। দ্রুতই সংস্কার কার্যক্রম সমাপ্ত করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিতে হবে।