সংবাদ সম্মেলনে ড. আসিফ নজরুল
প্রকাশ: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:০০ এএম (ভিজিটর : ১৩০)

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। গতকাল মঙ্গলবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয় সংস্কারের উদ্যোগ নেবে না আইন মন্ত্রণালয়। আসিফ নজরুল আরও বলেন, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচার এবং নির্বাচনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক বা মতবিরোধ নেই। বিচার বিচারের গতিতে চলবে। নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে জাতীয় ঐকমতের ভিত্তিতে। ড. আসিফ নজরুল বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি গায়েবি ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক হামলা প্রত্যাহার করা হবে। পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে করা সব মামলাও প্রত্যাহার করা হবে। তিনি বলেন, দেশের ২৫টি জেলায় আড়াই হাজার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বা গায়েবি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব মামলায় লাখ লাখ মানুষ আসামি। তিনি আরও বলেন, গায়েবি মামলা চিহ্নিত করতে আমরা চারটি ভাগে ভাগ করেছি। মামলাগুলো পুলিশ করেছি কিনা সেটা আমলে নেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এসব মামলার বেশিরভাগের প্রবণতা ছিল- বিস্ফোরক আইনে মামলা, অস্ত্র আইনে মামলা, পুলিশের ওপর হামলার মামলা। তৃতীয় প্রবণতা হলো- এসব মামলায় অনেক আসামি থাকে অর্থাৎ অজ্ঞাতনামা আসামি থাকে। সবশেষ যে প্রবণতাকে আমলে নেয়া হয়েছে, বিরোধী দলীদের কোনো বড় সমাবেশের আগে-পরে এবং গত তিন ভুয়া নির্বাচনের আগে-পরে করা মামলা। এসব প্রবণতাকে আমলে নিয়ে আমরা ২৫০০ মামলা চিহ্নিত করেছি। আশা করছি ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহার হয়ে যাবে। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে করা সব মামলাও প্রত্যাহার করা হবে বলে জানান তিনি। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে সাইবার সিকিউরিটি আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। উচ্চ আদালতে এর আগে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে বিচারক নিয়োগ হবে দক্ষতার ভিত্তিতে এবং দল নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে। বিচারক নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫ গেজেট নোটিফিকেশন হয়েছে। এদিকে, বিয়ে সম্পাদনে আরোপিত কর (ট্যাক্স) বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আইন উপদেষ্টা বলেন, বিয়ে সম্পাদনে আরোপিত একটি কর ছিল, আইন মন্ত্রণালয় এ অযৌক্তিক কর বাতিল করেছে। তিনি বলেন, ‘বিয়ের ফরমে লেখা থাকত বিবাহিতা নাকি কুমারী। এটা একটা মেয়ের জন্য অমার্যাদাকর শব্দ। সেটা আমরা অবিবাহিতা করে ফেলেছি। এমন ছোট ছোট অনেক কাজ করেছি। আরও অনেক কাজ করার চিন্তা আছে।’ এ সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিয়ের ট্যাক্সে আজকে সাইন করলাম। আপনি ট্যাক্স ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন।’ উল্লেখ্য, সিটি করপোরেশন মডেল ট্যাক্স তফসিল ২০১৬ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বিয়ের ওপর বিভিন্ন করের হারের বিধান করে। এক্ষেত্রে করের টাকা পরিশোধ করতে হবে পাত্র পক্ষকে। তপশিলের ১৫২ ধারায় বলা হয়েছে, প্রথম বিবাহ বা প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে বিবাহের জন্য একজন পুরুষকে বিয়ের পিড়িতে বসার আগে ১০০ টাকা ফি দিতে হবে। প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে ৫ হাজার টাকা, প্রথম দুই স্ত্রীর জীবদ্দশায় তৃতীয় বিয়ের জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। তপশিল অনুযায়ী, চতুর্থ বিয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ বা নিঃসন্তান হলে এই নিয়ম কার্যকর হবে না। তবে, সেক্ষেত্রে ২০০ টাকা দিতে হবে।