প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:২৭ পিএম (ভিজিটর : ৮২)
বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো কিছু দিন পরপর ওষুধের দাম বাড়িয়ে আসছে। গত ১ বছরে ওষুধের দাম ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়ে গেছে। এর মধ্যে সম্প্রতি সরকার বিভিন্ন পণ্যের ভ্যাট বাড়িয়েছে। যার মধ্যে ওষুধও আছে। যদিও খুব একটা বেশি বাড়ানো হয়নি। ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এতে ও্যষুদের সদাম খুব একটা বাড়ার কথা নয়।
কিন্তু বাংলাদেশের প্রবণতা অনুযায়ী দেখা যায় সরকার দু’ পয়সা বাড়ালে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দেন ১০ পয়সা। এমনিতে বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে যেয়ে মানুষ শ্রেণিচ্যুত হচ্ছে। মধ্যবিত্ত¡ নিম্নবিত্ত হয়ে যাচ্ছে, নিম্নবিত্ত গরিব হয়ে যাচ্ছে। এরকম প্রেক্ষাপটে নতুন করে ভ্যাট না বাড়িয়ে কিভাবে ওষুধের দাম কমানো যায় সেই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা অন্তবর্তী সরকারকে অনুরোধ করছি।
প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় ওষুধের স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট বাড়িয়েছে সরকার। একই সময় ডলারের দাম আরো বেড়েছে। এতে আর এক দফা বাড়াতে পারে ওষুধের দাম। তবে ওষুধ প্রশাসন বলছে ‘রোগীর ওপর চাপ পড়ে এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। স্বল্প মূল্যে নিরাপদ ও টেকসই চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে চায় ওষুধ প্রশাসন।
ওষুধ প্রশাসন অদিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে মেডিকেল ডিভাইস ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের বৈঠক হয়েছে। সেকানে ভ্যাট বৃদ্ধি ও ডলারের দাম বাড়ার জন্য হার্টের স্টেন্ট (রিং)ও চোখের লেন্সের দাম বাড়ানোর দাবি জানায় ব্যবসায়ীরা। তবে বৈঠকে এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০২৩ সালে ৪৪ ধরনের হার্টের স্টেল্ট (রিং) এর দাম ২ হাজার থেকে ৫৬ হাজার পর্যন্ত কমিয়ে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেল সরকার। চোখের লেন্সের ক্ষেত্রেও এমনটা করা হয়েছিল।
মেডিকেল ডিভাইসের ক্ষেত্রে এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে মূল্য হার তা আজ হোক কাল হোক বাড়বেই। সেই সাথে সাধারণ ওষুধের দামও বাড়বে। যা সাধারণ মানুষের ওপর চাপ আরো বাড়াবে। বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবা খাত এক ধরনের লুটপাট ভিত্তিক খাতে পরিণত হয়েছে। মাসের প্রথমে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভরা ডাক্তারকে একটা মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে দেন। এরপর সারা মাস ডাক্তার কি ব্যবস্থাপত্র লিখল তা রোগীর কাছ থেকে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করে মোবাইলে একটা ছবি নিয়ে তা অফিসে জমা দেয়া এবং তার ভিত্তিতে ও প্রতিনিধির বেতন বাতা সুযোগ সুবিধা নির্ধারণ হয়।
এরকম অনৈতিক ব্যবস্থা বিশ্বে আর কোথাও আছে কিনা তা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রয়াত ওষুধজন ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী একদা বলেছিল যে ওষুধ মানুষ কিলছে ৭ টাকায়, তার উৎপাদনের খরচ ২০ পয়সা। এদেশে ওষুধ ব্যবসার নামে এক দরনের লুটপাট চলছে। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। বাংলাদেশ এতদিন এরকম চলেছে, বিপ্লবোত্তরকালেও সেরকমই চলবে তাহলে কেন এত মানুষ জীবন দিল। এটা নতুন বাংলাদেশ এখন আর লুটপাট চলা উচিত নয়। আমরা মনে করি ১৯৮২ সালে ওষুধনীতির আলোকে দেশে এখন একটা নতুন ওষুধনীতি হওয়া দরকার।