গেলো বছর দেশে ৩১০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষার্থী ৫৬.৫ শতাংশ, মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার্থী ৩১.৯ শতাংশ এবং উচ্চতর শিক্ষা স্তরের ১৫.৩ শতাংশ। এ ছাড়া আত্মহত্যাকারী শিক্ষাথীদের মধ্যে ২৮. ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী অভিমান করে আত্মহত্যার পথ বেচে নিয়েছেন বলে দাবি করেছে আঁচল ফাউন্ডেশন ।
গতকাল শনিবার ফাউন্ডেশনটি কতৃক আয়োজিত ‘২০২৪ সালে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা : সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, ২০২২ সালে দেশে আত্মহত্যাকারী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫৩২ জন এবং ২০২৩ সালে ৫১৩ জন। তবে ২০২৪ সালে ৩১০ জন আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীর মধ্যে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী রয়েছেন।
বয়সভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১৩-১৯ বছরে বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ের শুরু থেকে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালের মোট আত্মহত্যাকারী মানুষের প্রায় ৬৫.৭ শতাংশ এ বয়সসীমার। আত্মহত্যার তালিকায় এরপরই রয়েছে ২০-২৫ বয়সসীমা যুবক-যুবতীরা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর এই বয়সের আত্মহত্যা করেন প্রায় ২৪ শতাংশ । শিশুদের মধ্যেও আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা গেছে। ১-১২ বছর বয়সী শিশুর আত্মহত্যার তথ্য উঠে এসেছে, যা প্রায় ৭.৪ শতাংশ। সবচেয়ে কম রয়েছে ২৬-৩০ বছর বয়সসীমার মানুষ। এ বয়সের ২.৯ শতাংশের কাছাকাছি।
২০২৪ সালের প্রতিবেদন বলছে, ৩১০ জন আত্মহত্যাকারীর মধ্যে নারী প্রায় ৬১ শতাংশ। অন্যদিকে পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার হারও কম নয়, প্রায় ৩৮.৪ শতাংশ পুরুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের এবং ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে একজন করে আত্মহত্যা করেছেন, যা মোট সংখ্যার যথাক্রমে ০.৩ শতাংশ এবং ০.৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, এসএসসি বা সমমান অর্থাৎ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। ২০২৪ সালে আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে ৪৬.১ শতাংশ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী। এরপরই উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। এ হার ১৯.৪ শতাংশ। তাছাড়া, স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে।
তথ্যমতে, ২০২৪ সালে এ পর্যায়ে আত্মহত্যার হার ১৪.৬ শতাংশ। এ ছাড়া প্রাথমিক স্তরে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝেও আত্মহননের বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে। এই স্তরের ৭.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে স্নাকোত্তর ১.৯ শতাংশ, ডিপ্লোমা ০.৬ শতাংশ, সদ্য পড়াশোনা শেষ করা শিক্ষিত তবে বেকার ০.৬ শতাংশ ।
অনেক সময় এই অভিমান তাদের মানসিকভাবে এতটা বিপর্যস্ত করে তোলে যে, তারা আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২৪ সালে আত্মহত্যাকারী মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৮.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী অভিমানের কারণে এ পথ বেছে নিয়েছেন। এর মধ্যে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষার্থী ৫৬.৫ শতাংশ, মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার্থী ৩১.৯ শতাংশ এবং উচ্চতর শিক্ষা স্তরের ১৫.৩ শতাংশ।