ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ৬ মাঘ ১৪৩১
ই-পেপার রবিবার ● ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




শহরে মানুষ বাড়ছে দ্রুতগতিতে
কমছে কর্মসংস্থান, বাড়ছে বেকারত্ব
ভোরের ডাক রিপোর্ট
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪:০৯ পিএম আপডেট: ০৯.০১.২০২৫ ৪:১৬ পিএম  (ভিজিটর : ৯১)
২০৬০ সালে বাংলাদেশ হবে সবচেয়ে বেশি বয়সী জনসংখ্যার সপ্তম বৃহত্তম দেশ

দেশে মানুষের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েই চলেছে। এভাবে ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভাব ফেলছে সর্বত্র। ক্রমে তা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে কিছু মানুষ দেখা যায় খুবই সচেতন। আবার এক শ্রেণির মানুষ এ ব্যাপারে একেবারেই অসচেতন। পরিবার পরিকল্পনার ব্যাপারে সচেতনতা আগের চেয়ে বাড়লেও কিছু মানুষের মধ্যে এখনো নানা বিষয়ে সংশয় কাজ করছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে তেমনটা পরিলক্ষিত না হলেও সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে যখন দেখা হয়, তখন সেটা কতটা বিপজ্জনক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে ভবিষ্যতে এবং এই বৃদ্ধি কতটা বেগবান হচ্ছে; তা বোঝা যায়। এই জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে চাপ পড়ছে মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা) ওপর। কমছে কর্মসংস্থান, বাড়ছে বেকারত্ব। এতে দরিদ্র ও পর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। 
নগরে বসবাসের সুযোগ তৈরি, অর্থায়ন, নগর দারিদ্র্য, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষের কর্মসংস্থান- এসব বিষয় নগরায়ণের শর্ত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। তবে তার কথা; এসবের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে না। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর লভ্যাংশ অর্জনের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। জনসংখ্যার বিপুল অংশ তরুণ ও বেকার। এই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে। জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শূন্য থেকে ১৪ বছর ও ৬৪ বছরের ঊর্ধ্বে জনগোষ্ঠীকে নির্ভরশীল বলে ধরা হয়। আর ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বলে বিবেচিত। দেশে এখন ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়স্ক জনগোষ্ঠী ৬৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এটাকে জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জনে সহায়ক বলে বিবেচনা করা হয়। তবে এই সুবিধা ২০৩৫ থেকে ২০৩৭ সাল পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এখন দেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর ৬৫ বছরের ঊর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর হার ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ২০৫০ সালে ষাটোর্ধ্ব মানুষের হার দাঁড়াবে মোট জনসংখ্যার ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। আর তখন ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের হার দাঁড়াবে মোট জনসংখ্যার ২১ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ দেশে প্রায় ৩৮ শতাংশ মানুষ হবে ষাটোর্ধ্ব। ২০৬০ সালে বাংলাদেশ হবে সবচেয়ে বেশি বয়সী জনসংখ্যার সপ্তম বৃহত্তম দেশ।
ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার উদ্বেগজনক জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে আগামী সাত বছরের মধ্যে মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশের বেশি শহরে বসবাস করবে। ওই সময়ের মধ্যে দেশের জনসংখ্যা হবে ১৮ কোটি ৪০ লাখ। সেই হিসাবে ২০৩০ সালের মধ্যে ৮ কোটি ৩৯ লাখের বেশি মানুষ শহরে বসবাস করবে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৩১ দশমিক ৫১ শতাংশ মানুষ নগরে বাস করে। ২০৫০ সালে দেশের মোট জনসংখ্যার ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ নগরবাসী হবে। তিনি বলেন, দেশে দ্রুত নগরায়ণ হলেও বিপুল মানুষকে ধারণ করার জন্য নগরগুলো মোটেই প্রস্তুত নয়। আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ নানা পরিষেবায় নগরগুলো বেশ পিছিয়ে। এ অবস্থায় ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, নগরায়ণের সঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধির লাগাম টানা, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির সম্প্রসারণ, বেকারত্ব ও প্রজননহার কমানোর বিষয়গুলো জড়িত। এর সঙ্গে দরকার কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর লভ্যাংশকে কাজে লাগানো। কিন্তু বাংলাদেশে তা যথাযথভাবে হচ্ছে না। 
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৯৭১ সালে ৭ শতাংশ মানুষ নগরে বাস করত। ২০০১ সালে তা ২৩ দশমিক ১০ শতাংশ হয়। ২০২২ সালে ৩১ দশমিক ৫১ শতাংশে দাঁড়ায়। এ হিসাবে নাগরিক জনসংখ্যা এখন ৫ কোটি ২০ লাখ ১০ হাজার। ২০৪১ সালের মধ্যে নগরে জনসংখ্যার হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। নগরে বেপরোয়া লোকসংখ্যা বৃদ্ধি উদ্বেগজনক। নগরে নাগরিক সুবিধা তুলনামূলকভাবে বেশি। এটা গ্রাম থেকে মানুষের নগরে আসার একটি কারণ। কর্মসংস্থানের সুযোগ এর মধ্যে প্রধান। এ প্রসঙ্গে জনসংখ্যাবিদ ওবায়দুর রব বলেন, পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এই লিঙ্গানুপাত যদি আরও কমে, তবে বহুবিধ জনমিতিক প্রভাব দেখা যেতে পারে। এটা যেমন গ্রামে হবে; তেমনি শহরেও দেখা যাবে। সেখানে লৈঙ্গিক সমতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়টিকে আমলে নিয়ে ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারণ করাটাও জরুরি।
বিশেষ্ণরা বলছেন, আসলে পরিকল্পিত নগর বলতে বুঝায় একটি পরিকল্পিত জনবসতি, যার সবকিছু হবে পরিকল্পনা অনুযায়ী। পরিকল্পনা না থাকলে কিছু করা সম্ভব হবে না। রাজধানীতে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে। বিল্ডিং নির্মাণ করতে হবে অবশ্যই রাজউকের নকশা অনুসারে। ভবনের পাশে খালি স্থান না রেখে ইচ্ছামতো ভবন নির্মাণ করা যাবে না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সকল শহরকেও পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে। সুষম উন্নয়ন করতে হবে গ্রামেও। শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ কমাতে এর কোনো বিকল্প নেই।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]