ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ৬ মাঘ ১৪৩১
ই-পেপার রবিবার ● ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




মানহীন বই মুদ্রণে তিন ছাপাখানাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিল এনসিটিবি
নানা অনিয়ম-ত্রুটির কারণে ৮০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:০০ পিএম  (ভিজিটর : ১৬২)
বিগত বছরগুলোতে মানহীন বই ছাপানোর সঙ্গে জড়িত মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট এবারও সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে। নিম্নমানের বই ছাপিয়ে সরকারি অর্থ লুটপাটের মহোৎসব সামনে আসলেও উপর মহলের তদবিরে বিগত দিনগুলোতে এরা পার পেয়ে যেত। তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, এ বছরের নতুন বই ছাপানোর মান খারাপ হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সরকারি এই সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যে নিম্নমানের কাগজ, বাঁধাইয়ে ত্রুটিসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে তিনটি ছাপাখানার ৮০ হাজারের বেশি পাঠ্যবই বাতিল করেছে। বাতিল করা বইগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান কয়েকদিন আগে সচিবালয়ে বলেন, বইয়ের মান ও বাঁধাই অবশ্যই ভালো করতে হবে। সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে এবার কঠোর অবস্থানে। বিগত সময় অনেকেই বিশেষ কারণে ছাড় পেলেও এবার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের শর্ত মানবে না, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, নিম্নমানের পাঠ্যবই ছাপিয়ে গত এক যুগে লুটপাট করা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা! এর মধ্যে শুধু ২০২৩ সালেই ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪৯ টাকার অনিয়ম পেয়েছে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। বইয়ের মান ও আকার কমিয়ে এবং নিউজপ্রিন্টে ছাপিয়ে লোপাট করা হয় ২৪৫ কোটি টাকা, আর অযাচিত বিল, অতিরিক্ত সম্মানী, আয়কর কর্তন না করা, অগ্রিম সমন্বয় না করাসহ নানা কারণ দেখিয়ে আরও প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এবারও সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। 
এনসিটিবি সূত্র বলছে, গত ১০ ডিসেম্বর পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ইন্সপেকশন ও মনিটরিং টিম কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অবস্থিত ফরাজী প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্সে পাঠ্যবই ছাপার কাজ পরিদর্শেনে যায়। এসময় নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেন তারা। পরে নিম্নমানের কাগজে ছাপা ৩০ হাজার বই বাতিল করা হয়। পুনরায় টেন্ডারের শর্ত মেনে তাদের ভালো কাগজে বই ছাপার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ইন্সপেকশন ও মনিটরিং টিমের সদস্যরা জানিয়েছেন, টেন্ডারেরর শর্তানুযায়ী ফরাজী প্রেস কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর মানেনি। তাছাড়া তাদের ছাপা বইয়ের কাগজের উজ্জ্বলতাও কম। এতে শিশুদের চোখের সমস্যা হতে পারে। শর্ত না মেনে বই নিম্নমানের কাগজে ছাপায় তাদের শোকজ করা হবে। 
এর আগে নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপানোয় হাতেনাতে ধরা পড়েছে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস ও কর্ণফুলী আর্ট প্রেস। গত ৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর চৌমুহনীতে অবস্থিত এ দুটি ছাপাখানায় গিয়েও প্রাথমিকের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপার বিষয়টি হাতেনাতে ধরেছেন এনসিটিবি কর্মকর্তারা। এ কারণে দুটি ছাপাখানার ৫০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল করা হয়। এনসিটিবি সূত্র জানায়, অগ্রণী ও কর্ণফুলী প্রেস দুটির মালিক একই ব্যক্তি। কয়েকবছর ধরে প্রতিষ্ঠান দুটি এভাবে নিম্নমানের কাগজে বই ছেপেছে।  ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম, পিয়ন পানি জাহাঙ্গীর, চাঁদপুর পুরানবাজার কলেজের রতন মজুমদারের সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ করে পার পেয়ে গেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তারা এনসিটিবির কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে টেন্ডারে সর্বনিম্ন দর দিয়ে বই ছাপার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। তাদের ছাপাখানার দিকে নজরদারি বাড়িয়েছে এনসিটিবি।
এনসিটিবির পরিদর্শন টিমের সদস্যরা জানান, অগ্রণী ও কর্ণফুলী ছাপাখানায় ৫০ হাজার পাঠ্যবইয়ে নানা অনিয়ম ও ত্রুটি পাওয়া গেছে। সব বইয়ের কাগজ নিম্নমানের। কিছু বইয়ের বাইন্ডিং ঠিক নেই। কাগজের বাস্টিং ফ্যাক্টর কম, বইয়ের সামনের ও পেছনের মলাট খুলে যাচ্ছে। তাছাড়া রাজধানীর মাতুয়াইলে অবস্থিত আরও কয়েকটি ছাপাখানা পরিদর্শন করে অনিয়ম পাওয়া বই বাতিল করা হয়েছে। আর সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ভাই আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও মুদ্রণশিল্প সমিতির বর্তমান চেয়ারম্যান রাব্বানী জব্বারের ছাপাখানা আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্ক করা হয়েছে। সূত্র আরও জানিয়েছে, চলতি মাসজুড়ে ছাপাখানা পরিদর্শন অব্যাহত থাকবে।







সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]