ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ৬ মাঘ ১৪৩১
ই-পেপার রবিবার ● ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




রাজনৈতিক সহিংসতা ও দুর্যোগে আতঙ্কগ্রস্ত প্রাথমিকের ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৪:২৪ পিএম  (ভিজিটর : ১০১)
স্কুলে যেতে চায় না ৩৬.৯ ভাগ, পড়ালেখায় অমনোযোগী ৩৬.৫ ভাগ

দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। এর বাইরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং করোনার দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব তো রয়েছেই। এসব কারণে প্রাথমিক স্তরের ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ শিশু ভীতি বা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণস্বাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের জরিপে এ তথ্য ওঠে এসেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মতামত অনুযায়ী, শিশুদের মধ্যে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ পড়ালেখায় অমনোযোগী, ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ স্কুলে না যাওয়ার প্রবণতা, ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ শিশুদের মানসিক ক্ষতি সাধন, ৭ দশমিক ৯ শতাংশ শিশুদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো দৃশ্যমান মানসিক পরিবর্তন হয়েছে। 
ফলাফল উপস্থাপন করেন টিচার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের (টি.ডি.আই) পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হক এবং গণস্বাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থাপক আব্দুর রউফ। দেশের আট বিভাগের সর্বমোট ২০৩টি সংগঠনের সহায়তার একটি সাধারণ প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মতামত সংগ্রহ করা, ১২টি ফোকাসগ্রুপ আলোচনা, ৩০ জন তথ্যাভিজ্ঞ ব্যক্তির মতামত সংগ্রহ এবং দুইটি বিভাগীয় ও দুইটি জাতীয় পর্যায়ের সভার মাধ্যমে এই গবেষণার উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 
গবেষণায় বলা হয়, রাজনৈতিক, প্রাকৃতিক ও সমাজিক এই অস্থিরতার কারণে শিশুদের মধ্যে আরও নানা মানসিক পরিবর্তনের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫.৮ শতাংশ শিশুমনে মানসিক অস্থিরতা/ট্রমা, ১৯.২ শতাংশ শিশু শিক্ষায় অমনোযোগী, ১৫.৩ শতাংশ শিশু উচ্ছৃঙ্খলতা, ৪.৪ শতাংশ শিক্ষাক্রমের বিরূপ প্রভাব, ১৩.৮ শতাংশ ডিভাইসে আসক্তি, ৬.৯ শতাংশ ভীত সন্ত্রস্ত থাকা, ২৩.২ শতাংশ আতঙ্কিত থাকা এবং ১৯.৭ শতাংশ শিশুমনে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। শিশু শিক্ষার্থীদের এই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করা, মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে রাখা এবং স্থানীয়ভাবে অনুষ্ঠিত খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করার জন্য অভিভাবকদের কাছে সুপারিশ করেছে গণস্বাক্ষরতা অভিযান। 
বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু সুপারিশ ওঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে। এগুলো হলো- বিদ্যালয়ে শিখন-সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে কমিউনিটির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা, শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ও খেলাধুলার সরঞ্জাম দেওয়া, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ক্লাব সংস্কৃতি গড়ে তোলা, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও চাহিদা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে সুসস্পর্ক বজায় রাখা। 
সরকারের করণীয় সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু সুরক্ষা আইন (২০১৩) যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা, পাশাপাশি শিক্ষক-প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ট্রমা কাউন্সেলিং কর্মসূচি আয়োজন করা, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসমস্যা নিরূপণের লক্ষ্যে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ব্যবহারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় পর্যাপ্ত সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। 
গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের সিনিয়র এডভাইজর ড. মুহাম্মদ মুসা। 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিধান রঞ্জন রায় বলেন, আমাদের সবকিছুই ‘ওভার সেন্ট্রালাইজড’। সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এটি প্রধান বাঁধা। কেননা আমাদের সমস্যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন স্কুলে বিভিন্ন রকম সমস্যা রয়েছে। এ কারণে এলাকাভিত্তিক সমস্যা সমাধানের দিকে মনোযোগী হতে হবে। তিনি বলেন, অনেক সময় এমন সব দাবি আসে, যেগুলো যৌক্তিক কিন্তু এখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। এ সময় তিনি স্কুলগুলো দৃষ্টিনন্দন করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান। 
সভাপতির বক্তব্যে রাশেদা কে. চৌধূরী বলেন, আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ‘ফ্লেক্সিবল স্কুল ক্যালেন্ডার’ নীতিমালার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এটি ফিরিয়ে আনতে হবে। স্কুল অনুমোদনেরও একটা নীতিমালা করা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, ১৫০ জন শিক্ষার্থী না হলে স্কুল অনুমোদন দেওয়া হবে না। এটিও চালু করতে হবে। 







সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]