ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ই-পেপার শনিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Select Year: 
শিরোনাম:




তিন মাসেও জুলাই বিপ্লব নিয়ে নেই দৃশ্যমান কর্মকাণ্ড
ঢাবি সংবাদদাতা
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ৬:২২ পিএম  (ভিজিটর : ১৬২)
জুলাই বিপ্লবের তিন মাসের বেশি সময় ফেরিয়ে গেলেও বিপ্লব নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কোন বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে তৎপর হতে দেখা যায়নি। বিপ্লব-উত্তর বিগত সরকারের মদদপুষ্ট প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হলেও প্রশাসনের এমন কর্মকান্ডে হতাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সমন্বয়করা বলছেন, প্রশাসনের অনীহা আর নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বেখেয়াল বলেই এমন কার্যকলাপ।

গতমাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিপ্লবের মর্যাদা রক্ষায় ‘জুলাই বিপ্লব কর্নার’ স্থাপনসহ বিপ্লবকে উপজীব্য করে একটি একাডেমিক সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এখনও আলোর মুখ দেখেনি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিপ্লব নিয়ে বর্তমান প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের যে প্রত্যাশা তারা তা পূরণ করতে ব্যর্থ। তবে প্রশাসন বলছে ভিন্ন কথা। বিপ্লবকে স্বরণীয় এবং এর চেতনাকে সমুন্নত রাখতে গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন প্রশাসন।      

বিপ্লব পরবর্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব কমই বিপ্লব কেন্দ্রীক সভা-সেমিনার লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি এবং বিভিন্ন বিভাগ-ইনিস্টিটিউটের উদ্যোগে বিপ্লব নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক কয়েকটা সেমিনার এবং ডকুমেন্টরি পদর্শন করা হলেও তা ছিল যৎসামান্য। উল্টো দিকে পুরো সময়টাতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া মেটাতে ব্যস্ত ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গদের কার্যকলাপ নিয়ে।

বৈষম্য বিরোধীা ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে প্রশাসন এসেছে ছাত্ররা চেয়েছে তারা যেন বিপ্লবের স্প্রিটকে ধারণ করে তা জনগণের মনে প্রাণবন্ত করে রাখার জন্য যে বিপ্লবি কাজ করা দরকার তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ রাষ্ট্রীয় প্রশাসন কেহুই জনগণের সেই আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে নাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুরুতেই যতই বলেছে যে বিপ্লবের যে আশাআকাঙ্খা যে চেতনা তা তারা বিভিন্ন জায়গায় প্রস্ফূটিত করবেন। কিন্তু সেই আশাটা আমাদের ব্যাহত হয়েছে। শুরুতে তাদের জায়গা থেকে অনেক প্রতিশ্রুতি আমরা শুনেছি।  কিন্তু সেই কার্যক্রমগুলো মন্থর গতিতে এগোচ্ছে। বিপ্লব পরবর্তি যে প্রশাসন তাদের কাজ শুধুমাত্র ছোটখাটো কাজগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না। এতো ছাত্রজনতা জীবন দিয়েছে তাদের যে আকুতি তা যুগযুগ ধারে মানুষের মধ্যে প্রতিফলিত হবে। এর একটা চিহ্ন থাকবে। সেই চিহ্ন আমাদের বারবার উদ্বুদ্ধ করবে। ছাত্রজনতাকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিবে যে, শহীদরা একটা চেতনা ও প্রত্যাশা নিয়ে জীবন দিয়েছিলো। নতুন একটা ব্যবস্থা তৈরি করা, নতুন পরিবেশ তৈরি করার জন্য তারা জীবন দিয়েছিলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা রাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন বলেন তারা তার প্রতিফলন ঘটাতে পারে নাই।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেওয়াল লিখনগুলো বারবার মুছে ফেলা হচ্ছে। এখানে একটা কুচক্রি মহল রয়েছে এবং তাদের একটা দুরভিসন্ধি রয়েছে।  এটা কাজটা আরো বেগবান হলো যখন প্রশাসনের যারা রয়েছেন তাদের এসব বিষয়ে অনীহা প্রকাশ পায়। কিংবা তাদের যে উদ্যেশ্য নিয়ে কাজ করার কথা বা তারা তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বেখেয়াল সেই যে বেখায়ালীপনার ফলে কুচক্রি মহল তাদের তৎফরতা বৃদ্ধি করেছে। তারা কুচক্রি মহলকে সুযোগ করে দিচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুতফা বলেন, জুলাই স্মৃতি রক্ষায় কি করছে তা খুব বেশি চোখে পড়ছে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯শত শিক্ষক যার মধ্যে খুব কমই জুলাই বিপ্লবের সাথে জড়িত ছিলো। কেউ কেউ পাঁচ আগস্ট যুক্ত হয়েছেন যখন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো যে সরকার পড়ে যাচ্ছে। বিগত ১৫ বছরে যে সব শিক্ষক বিভিন্ন জায়গায় পুরো ব্যবস্থার সুফল নিয়েছে তাদেরকেও বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে। বরংচ যারা গত সরকারের সময় নানাভাবে নির্যাতিত নিপিড়িত ছিলো এবং জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো তাদেরকে এরকম স্মৃতি রক্ষার কাজে বা কমিটিতে আমরা দেখি নাই। তাছাড়া এখনও যথেষ্ট সময় হয়নি। সামনে বিষয়গুলো আরো স্পষ্ট হবে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, জুলাই বিপ্লবকে সামনে রেখে আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। বিভিন্ন ধাপে আমরা পরিকল্পনাগুলোর কথা চিন্তু করছি। আমরা দুটা কমিটি করেছি। একটা কাজ করবে একাডেমিক আলোচনা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রিচার্স পেপার নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আরেকটা কাজ আমরা চিন্তু করেছি একটা কর্নার করা। এখন এটা কি ধরণের কর্নার করা হবে? এখানে কি কি থাকবে? 

বিভিন্ন জন থেকে আইডিয়া জেনারেট করো আমার এগুলো করবো। এটা আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এরে  সাথে যারা সংশিষ্ট রয়েছে তারা এ নিয়ে আইডিয়া জেনারেট করবে। পরে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বসবো এবং বাস্তবায়ন করবো।


তিনি আরো বলেন, এটাতো আসলে একমাস বা পনেরো দিনে করে দেওয়ার বিষয় না। এটা নিয়ে কিছু চিন্তাভাবনা দরকার। তাছাড়া এর পাশাপাশি আরো দুয়েকটা আইডিয়া নিয়ে নতুন কিছু করা যায় কি না এ নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আপাতত এ ‍দুটো বিষয়ে পরিকল্পনা হয়েছে এবং এটা নিয়ে কাজ হবে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। প্রয়োজন হলে আমরা এই কমিটির সাব কমিটি তৈরি করবো।     

 

 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]