প্রকাশ: শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৪:৫২ পিএম (ভিজিটর : ২৬৭)
বাংলাদেশ জলবায়ু জরুরি অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবন এবং উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র উল্ল্যেখযোগ্য ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। যারা সুন্দরবনের ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়না। প্রাকৃতিকভাবে সংবেদনশীল সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা দিন। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কবলে সুন্দরবনসহ উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি এবং জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু উষ্ণতা থেকে আমরা বাঁচতে চাই।
২২ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে মোংলা দক্ষিণ কাইনমারিতে ’জলবায়ু ন্যায্যতা এবং সুন্দরবন উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি ও জীবন-জীবিকা সুরক্ষা’ শীর্ষক গণসংলাপে বক্তারা একথা বলেন।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে এ গণসংলাপ’র আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার বিকেল ৩টায় গণসংলাপে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। এসময় বক্তৃতা করেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর কেন্দ্রিয় নেতা ইবনুল সাঈদ রানা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এসএম মাসুদ রানা, ধরা’র প্রচার সমন্বয়ক মামুন কবীর, উপজেলা জাইকা কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম।
গণসংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সংগঠক নারীনেত্রী কমলা সরকার। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপকূলের নারীনেত্রী চন্দ্রিকা মন্ডল, স্বপ্না বিশ্বাস, জেলে সমিতির নেতা বিদ্যুৎ মন্ডল, কনিকা মন্ডল, তৃষ্ণা সরকার, পরিবেশকর্মী হাছিব সরদার প্রমূখ।
গণসংলাপে পরিবেশ বিষয়ক পুঁথিপাঠ করেন গীতিকার ও গায়ক মোল্লা আল মামুন।
জেলে সমিতির নেতা বিদ্যুৎ মন্ডল বলেন, সুন্দরবনে এবং পশুর নদীতে আগের মতো মাছ পাইনা। জলবায়ু পরিবর্তন, নদী দূষণ এবং বিষ প্রয়োগে মাছ নিধনের ফলে মাছের এই আকাল দেখা দিয়েছে। সুন্দরবনে জেলেদের কাছ থেকে কতিপয় বনকর্মকর্তা-কর্মচারি অনৈতিক সুবিধা আদায় করে বলে জেলে নেতৃবৃন্দ গণসংলাপে অভিযোগ উত্থাপন করে বক্তৃতা করেন।
চন্দ্রিকা মন্ডল বলেন উপকূলে এখন স্বাভাবিক জোয়ারেই আমাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙ্গনে প্রতিনিয়ত জলবায়ু উদ্বাস্তুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গৃহিণী স্বপ্না বিশ্বাস বলেন উপকূলে খাবার পানির সংকটে আছি আমরা। আমাদের চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে কিন্তু খাবার পানি নেই। জ্বলোচ্ছাসে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চারিদিকে তালিয়ে যায়। লবণাক্তার ফলে ধানচাষ শুন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।
সভাপতির বক্তব্যে সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ বলেন সুন্দরবন বিনাশী সকল প্রকল্প বাতিল করতে হবে। বন্যপ্রাণী অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আ্ওতায় আনতে হবে। সুন্দরবনকে প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। উপকূলের ৭৩% মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। তাদের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। হাওড়ের ন্যায় সুন্দরবন উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির রূপান্তর ঘটাতে হবে।