প্রকাশ: রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:০০ এএম (ভিজিটর : ৭৯)
ঢাকা মহানগরের ভয়াবহ যানজট নিরসনে বিগত সরকারের সময় ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চিটাগাংরোডের কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার উড়ার সড়ক (এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। যার বিমানবন্দর থেকে কারওয়ান বাজারের এফডিসি পর্যন্ত ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। ২০২৩ সালে ২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন। তাতে ওই অংশের বিমানবন্দরগামীদের যাওয়া-আসা অনেক গতিশীল হয়ে যায়। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। শুধুমাত্র হাতিরঝিল এলাকায় টুকটাক কাজ চলতে থাকে। মূলত অংশীদারদের মধ্যে দ্বন্দ্বে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে সিঙ্গাপুরে মামলা পর্যন্ত হয়। সেই মামলায় থাই কোম্পানি ইতালি থাই সম্প্রতি হেরে গেছে। অপর অংশীদার চীনের শেনডং জিতে গেছে। সুতরাং এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ইতালি থাই বাদ পড়েছে। সংকট কেটে গেল, আশা করা যায় এখন এক্সপ্রেসওয়ের বাকি অংশের কাজ শুরু হবে এবং শেষও হবে। যত দ্রুত তা হয় সেটাই ভালো।
রাজধানীর যানজট নিরসনে বিগত সরকার বেশ কিছু মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) ঢাকা এলিভেটড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। থাইল্যান্ডের ইতালি থাই, চীনের শেনডং ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন, যথাক্রমে ৫১, ৩৪ এবং ১৫ শতাংশ মালিকানায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি। ইতালি থাই মামলায় হেরে যাওয়াতে এখন শেনডংয়ের শেয়ার ৩৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ালো ৮৫ শতাংশে। আর সিনোহাইড্রোর ১৫ শতাংশই থাকছে।
কোম্পানি যেই থাক সেটা আমাদের জন্য বিশেষ বিবেচ্য নয়। আমাদের কাজটা হওয়া দরকার। বিশ্বে এমনকি উপমহাদেশেও মহানগরে এক্সপ্রেসওয়ে, উড়াল সেতু বা ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে সেই আশির দশক থেকে। কিন্তু আমাদের ঢাকা মহানগরের উন্নয়নে সব সময়ই মনোযোগের অভাব ছিল। ফলে রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি আর মোটরসাইকেল ঢাকা জট পাকিয়ে গেছে। এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রো পুরোপুরি চালু হলেও মাত্র ২৫ শতাংশ যানজট কমবে। পুরোপুরি সুফল পেতে এগুলোর পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থার সংস্কার করার অভিমত তাদের। ঢাকা মহানগরের যে অবস্থা তাতে আপাতত ২৫ শতাংশই কমুক যানজট। শেনডং এবং সিনোহাইড্রো তাদের সক্ষমতা দেখাক। দ্রুত এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হোক সেটাই প্রত্যাশা।