ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ই-পেপার শনিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Select Year: 
শিরোনাম:




সিলেট বিএনপিতে মাথাছাড়া দিচ্ছে ‘কোন্দল’
সিলেট সংবাদদাতা
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৫:০৫ পিএম  (ভিজিটর : ৪৬৫)
সিলেটে আবারও বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথাছাড়া দিয়ে উঠছে। এনিয়ে সিলেটে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ ঝাড়ছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলের কাউন্সিলে অংশ নেয়া বিজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে কমিটি করায়  প্রকাশ্যেই চলে আসছে সে বিরোধ। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দফায় দফায় বৈঠক করছেন বিভিন্ন স্থানে। তারা বলছেন সিলেট বিএনপির এক শীর্ষ নেতা ব্যাক্তিস্বার্থেই আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগীদের যেমন কমিটিতে স্থান দিয়েছেন তেমনি দলের ত্যাগীদের কমিটিতে রাখেননি। এতে দল চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে পদপ্রাপ্ত নেতারা বলছেন, সবকিছুর সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কমিটি এসেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে. গত বছর ১০ মার্চ সিলেট মহানগর বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন মহানগর সভাপতি পদে নাসিম হোসেইন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ইমদাদ হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হন। এরপর হঠাৎ করেই সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেইন দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব প্রদান করে কেন্দ্র। এরপর বিগত সম্মেলনের প্রায় দেড় বছর পর গত ৫ নভেম্বর সিলেট মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এ কমিটিতে সভাপতি পদে সাবেক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান লোদী (কয়েস লোদী) কে সভাপতি করা হয়। সাধারণ সম্পাদক থেকেছেন ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।

সিলেট মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ হবার পর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়েন নেতাকর্মীরা। বিগত কাউন্সিলে  যারা প্রতিদ্বিন্ধিতা করে অল্প ভোটের ব্যবধানে হারেন তাদেরকে সদস্যও রাখা হয়নি মহানগর কমিটিতে। প্রাক্তন নগরপিতা এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আরিফুল হক চৌধুরী, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিগত মহানগর কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিন্ধিতাকারী রেজাউল করিম নাচন, সাবেক ছাত্রনেতা মামুন ইবনে রাজ্জাক রাসেলসহ অনেকেরই স্থান হয়নি ঘোষিত কমিটিতে। কাউন্সিলে নাচন ৬২৩ ভোট পেয়েছিলেন। এছাড়া কমিটিতে স্থান পাননি বিগত আন্দোলনের সম্মুখসারির নেতা সালেহ আহমদ খসরুও। হুমায়ুন আহমদ মাসুক, আব্দুস সাত্তার মামুন, আসাদুল হক আসাদসহ বহু নেতাকে বাদ দেয়ার খবর এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বহু নেতাকর্মী।

সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাবেক মেধাবী ছাত্রনেতা আসাদুল হক আসাদ কমিটি ঘোষণার পর ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সংবাদপত্রে কাউন্সিল সংক্রান্ত সব জরুরী তথ্য সরবরাহ করতেন। এতে তিনি লিখেছেন- আমি দলের একজন ক্ষুদ্র কর্মী। ২০০৩ সালে প্রথম এমসি কলেজ ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক নির্বাচিত হই। তারপর দীর্ঘ ১৪ বছর পর সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের চরম বিতর্কিত কমিটি গঠিত হয় এবং সেই থেকে সিলেটে জাতীয়তাবাদী দলের সাংগঠনিক ভিত ও মেরুদন্ড ভেঙে যাওয়ার যাত্রা শুরু। তারপর থেকে প্রায় প্রতিটি কমিটি গঠন ছিল চরম বিতর্কিত। যার কারণে  দলীয় নেতা-কর্মীরা তাদের সাংগঠনিক পরিচয় গর্বের সাথে প্রকাশ করতে দ্বিধাগ্রস্ত  থাকতো ও কুণ্ঠাবোধ করতো।

আমি এমসি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে উঠে আসা একজন রাজনৈতিক কর্মী। ছাত্রদলের রাজনীতি করা সত্ত্বেও আমি ম্যাথম্যাটিকসে অনার্স ও মাস্টার্স করি। ২০১৪ সালে বিদ্রোহী ছাত্র আন্দোলনে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের চরম অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল। তারপরও আমি যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হই। জিয়া শিশু কিশোর সংগঠন ( জিশিস), সিলেট জেলা এবং মহানগর জিয়া পরিষদ, সিলেটের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করি। কিন্তু সিলেটের সিংহপুরুষ ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর সিলেট বিএনপির সাংগঠনিক ভিত ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ সত্যিকারের অনেক সাহসী ও যোগ্য নেতা তার অথবা তাদের অবমূল্যায়নের কারণে তারা আজ দেশের বাইরে। 

অথচ যারা সিলেট জেলাসহ নবগঠিত মহানগর কমিটিতে শক্তিশালী পদধারী হয়েছেন, তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নেই। না আছে তাদের কোনো ত্যাগ, মেধা ও অবদান। তবে তারা অনেকেই অবৈধ আয়ের ভালো উৎস তৈরি করতে পারবেন এবং শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে সহযোগিতা করতে পারবেন। যা বিএনপির রাজনীতিতে ভাইটাল পোস্টে আসার বিশেষ সুবিধা। 

এই জন্য মানুষ অনেক সময় ডাকাতদের পছন্দ করে। কিন্তু মুখোশধারী দলের সাংগঠনিক ভিত নষ্টকারী ও সত্যিকারের নেতৃত্ব নির্মূলকারীদের অপছন্দ করে। একসময় যা ঘৃণায় রূপ নেয়।

সাবেক এই ছাত্রনেতা শেষাংশে আরও লিখেন - আমি কাউন্সিলের পর নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেখেই মহানগর বিএনপির রাজনীতি করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। এমনকি শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে তা জানিয়েও দেই। তাই নবগঠিত মহানগর কমিটিতে আমার কোনো প্রত্যাশা ছিল না। তাই আমার কোনো দুঃখবোধও নেই। তবে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে দালাল ও মুখোশধারী মানুষ থেকে দলকে মুক্ত করতে হবে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

শুধু আসাদ নন,অসংখ্য নেতাকর্মী এভাবে গত ক’দিন থেকে ফেসবুকে ঝড় তুলেছেন। আর সিনিয়র নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। গতরাতেও নগরের একটি হোটেলে এনিয়ে সিনিয়র কয়েকজন নেতা বৈঠক করেছেন। তারা প্রতিবাদের ভাষা এবং কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে সূত্র জানায়। যাবতীয় অভিযোগ দলের চেয়ারপার্সন, মহাসচিবসহ উর্ধ্বতন মহলে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতারা।

এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী ড্যাব আয়োজিত  বিপ্লব ও সংহতি দিবসের এক আলোচনা সভায় বলেছেন,পকেট কমিটি দিয়ে রাজনীতি করলে তা মেনে নেয়া হবেনা। রাজনীতিতে মাঠের কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।  ব্যবসায়ী আমলা আওয়ামীলীগের দোসরদের কে পূর্নবাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।  যা খুবই দুঃখজনক। জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীরা পনেরো বছর রক্ত দিয়েছে এর মৃল্যায়ন হতে হবে।

এ বিষয়ে মহানহর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান লোদী ভোরের ডাক কে বলেন, আমি স্বীকার করছি ত্যাগী কিছু নেতাকর্মীর নাম কমিটি তে আসেনি অনেকেই আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন পর্যায়ক্রমে তারা মূল্যায়ন পাবেন।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]