প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪, ৬:৪৯ পিএম (ভিজিটর : ৩৫৩)
দেশের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, স্বচ্ছ রাজনীতি করে বলেই বারবার জামায়াতের ওপর আঘাত নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বড় মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মাদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসাইন, ইয়াছিন আরাফাত ও ড. মাওলানা আহসান হাবিব এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমূখ।
দেশ ও জাতির প্রেক্ষাপটে ৭ নভেম্বর একটি ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী শাসকচক্র আমাদেরকে আমাদের ইতিহাস জানার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ১৯৭৫ সালের জুনে আওয়ামী ফ্যাসীবাদী সরকার দেশের সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। রাষ্ট্রায়ত্ব মাত্র ৪ টি পত্রিকা বাদে সকল গণমাধ্যমের ডিক্লারেশন বাতিল করে গণমানুষের কন্ঠরোধ করা হয়েছিল।
জামায়াত দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, জনগণের জানমাল আমাদের কাছে পবিত্র আমানত। আমরা দেশ ও জাতির স্বার্থে সব সময় দায়িত্বশীল আচরণ করে এসেছি। কিন্তু আমরা এদেশে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত- নিপীড়িত রাজনৈতিক দল। স্বাধীনতার পর আমাদেরকে দু’দফা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা বরাবরই পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করে এসেছি। তারপরও আমাদেরকে নিষিদ্ধ হতে হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, ‘গরম ভাতে বিড়াল বেজার’। মূলত, স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারই দেশে নেতিবাচক ও নির্মূলের রাজনীতির সূচনা করেছে। তারা আমাদের দিয়ে নাস্তা করারও ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিইনি।
জামায়াতের আমির বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ ও নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বিভক্ত হলে ষড়যন্ত্র হবে; আরও বড় বিপদ আসবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নয়। বিড়ালের মতো নয়, বাঘের মতো বাঁচবেন।
গত ৫ আগস্ট সেনাবাহিনী দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্নীতির ক্যানসার উপড়ে ফেলতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক দল ও নেতাদের রাজনৈতিক চরিত্র ঠিক করতে হবে। নেতারা দুর্নীতিবাজ না হলে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে। একদিকে জনগণকে অধিকার এনে দেবো, আবার সেই অধিকার পকেটে করে চুরি করবো, সেটা হবে না’ যোগ করেন জামায়াতের আমির।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ সময় অধিপত্যবাদী অপশক্তি আমাদের অর্জিত স্বাধীনতাকে কেড়ে নিয়ে দেশকে গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু বিপ্লবী ছাত্র-জনতা ও সশস্ত্র বাহিনী তাদের সে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। তারা এখনো আমাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। কিন্তু আবু সাঈদ ও মুগ্ধরা আমাদেরকে ভয়কে জয় করতে শিখেয়েছে। তিনি ৭ নভেম্বরের চেতনায় দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে আবারো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।