ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ই-পেপার শনিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Select Year: 
শিরোনাম:




হাতিরঝিল থেকে খাবার পানি উৎপাদন
৯ বছরেও প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি
সাইদুল ইসলাম :
প্রকাশ: শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪, ২:১১ পিএম  (ভিজিটর : ৮১)
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে খাবার পানি উৎপাদনের (ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প) উদ্যোগ নিয়েছিল ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু গত নয় বছরেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নয় হয়নি। কবে নাগাদ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে তাও বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে নানা জটিলতায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলেও কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এর আশপাশের বাসিন্দাদের পানির চাহিদা মিটিয়ে পর্যায়ক্রমে নগরীর অন্যান্য স্থানের পানি সরবরাহ করা যাবে বলেও জানিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার এ প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ১১০ একর জমি এবং প্রাথমিকভাবে ১৫ শ’ কোটি টাকা। ফলে ওয়াসা আরো আগেই জমি অধিগ্রহণের জন্য গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রণালয় এবং টাকার ডোনার খোঁজার জন্য ইকোনমিক রিলেশন ডিভিশনের (ইআরডি) মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে প্রকল্পটি আটকে আছে। মূলত বনশ্রীর পূর্বপ্রান্তে দাশেরকান্দি এলাকায় এ ট্রিটমেন্ট প্রকল্প নেয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকেই হাতিরঝিলের পানি শোধন করে আশপাশের বাসিন্দাদের সরবরাহের কথা ছিল। 

২০১৫ সালে প্রকল্পটি গ্রহণের পর ২০১৬ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একজন বিশিষ্ট নগর পরিকল্পনাবিদ অস্ট্রেলিয়া সফর করে এসে এ বিষয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এর পর থেকেই পরিকল্পনা শুরু করে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এতে হাতিরঝিলের নোংরা পানিকে শোধিত করে খাবার পানিতে পরিণত করা এবং তা ওয়াসার মাধ্যমে প্রথমে হাতিরঝিলের আশপাশ এবং পর্যায়ক্রমে গোটা ঢাকায় সরবরাহের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। হাতিরঝিল সম্পর্কিত যৌথ কমিটির আগামী বৈঠকে এ পরিকল্পনা নিয়ে একটি প্রজেক্ট প্রোফাইল উপস্থাপনের কথাও ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি স্থবির হয়ে আছে। এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, নগরবাসীর জন্য ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। মূলত গত সরকারের আমলে এমন একাধিক লোক দেখানো প্রকল্প নেয়া হয়েছে কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। এটি যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হওয়া দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করা হবে। আশাকরি নগরবাসীর স্বার্থে শিগগিরই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

এদিকে, নকশা ও পরিকল্পনায় বড় ধরনের ত্রুটির কারণে কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাতিরঝিল এখন নানা সঙ্কটে রয়েছে। বিশেষ করে ঝিলের পানি প্রায় কালো ও নোংরা হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে ভ্রমনকারীরা চরম বিপাকে রয়েছে। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ সমস্যা নিরসন হবে। এ বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য তারা ওই সময় এ প্রকল্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অনেকটা ভুলেই গিয়েছিলেন। ফলে নকশায় কোনো ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বা বর্জ্য নিষ্কাশনের পথ দেখানো ছিল না। প্রকল্পের কনসালট্যান্ট প্রকৌশলী ইকবাল হাবিব বলেন, সে সময় আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। আমাদের পরামর্শ ছিল বর্জ্য পানি শোধনের জন্য একটি সোলার অ্যাকুয়াটিক ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের। এই প্ল্যান্ট সূর্য থেকে শক্তি সংগ্রহ করে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্জ্য পানি শোধন করত। কিন্তু তখন কেউ তা আমলে আনেনি। ফলে হাতিরঝিলের পানি এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি উদ্বোধন হয় হাতিরঝিল প্রকল্প। দৃষ্টিনন্দন এ প্রকল্পের সুবাদে পাল্টে যায় মধ্য ঢাকার চেহারা। টঙ্গী ডাইভারশন ও রামপুরা রোডের মধ্যে সংযোগ হওয়ায় বহুলাংশে যানজট কমে যায় এ অঞ্চলের। সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী হয় এর উভয় পাশের বাসিন্দারা বিশেষ করে বাড়ির মালিকরা। রাতারাতি তারা বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে কথা হয় এক বাড়ির মালিকের সাথে। তিনি একটি পাঁচতলা বাড়ির মালিক। তিনি জানান, হাতিরঝিল চালু হওয়ায় তার বাড়ির ফ্ল্যাটের চাহিদা বেড়ে যায়। তিনি প্রতি ফ্ল্যাটের ভাড়া এখন পর্যন্ত গড়ে ছয়  থেকেআট হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন। কিন্তু পানির দুর্গন্ধে এখন অনেকেই বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, এখানে ভ্রমণকারীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। আগে যেখানে দেখা যেত উপচে পড়া ভিড়, সেখানে এখন চলাচলের সুবিধার্থেই লোকজনকে এ সড়কে আসতে দেখা যায়। কেউ ঘুরতে এলেও নাকে-মুখে কাপড় চেপে কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যেতে বাধ্য হয়। লেকের পানিতে প্রচুর ভাসমান আবর্জনা দেখা গেছে। পানি বিষাক্ত হয়ে যাওয়ায় লেকের মাছও মরে গেছে বলে জানান এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলেন, কিছুদিন আগে লেকের পানিতে মশার বিস্তার ঘটেছিল। তখন মশার কামড়ে ও পানির চরম দুর্গন্ধে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। তবে এখন আগের চেয়ে দুর্গন্ধ ও মশা কিছুটা কমেছে। তারা অবিলম্বে এ লেক স্বাস্থ্য সম্মত করার দাবি জানান। 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]