ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ২৩ মার্চ ২০২৫ ৯ চৈত্র ১৪৩১
ই-পেপার রবিবার ● ২৩ মার্চ ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




ফের সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের, তীব্র যানজট
সোহরাওয়ার্দী কলেজ সংবাদদাতা
প্রকাশ: বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ১:৫০ পিএম  (ভিজিটর : ৩৭৫)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি 'সাত কলেজ সংস্কার' কমিশন বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠনের দাবিতে ফের সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনের মতো পূর্বঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড কর্মসূচির পালন করছেন তারা।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজ শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ নিয়ে সায়েন্সল্যাব অবরোধ করেন। যতক্ষণ পর্যন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় সায়েন্সল্যাব মোড়ে শিক্ষার্থীরা বসে পড়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। যার ফলে সায়েন্সল্যাব মোড় সংলগ্ন শাহবাগ, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আজিমপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়া, নীলক্ষেত, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজধানীর অন্যান্য সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় পুরো ঢাকা শহরের সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ জনগণ। 

সড়ক অবরোধ করে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ‘অধিভুক্তি নাকি মুক্তি, মুক্তি, মুক্তি’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, মানি না, মানব না’, ‘আর নয় দাসত্ব, হতে চাই স্বতন্ত্র’, ‘ঢাবির জায়গায় ঢাবি থাক, সাত কলেজ মুক্তিপাক’, ‘নিপীড়ন নাকি অধিকার, অধিকার, অধিকার', 'শিক্ষা না বাণিজ্য, শিক্ষা, শিক্ষা, শিক্ষা না সিন্ডিকেট,  সিন্ডিকেট, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, কমিটি বাতিল কর, কমিশন গঠন কর' শিক্ষা নিয়ে প্রসহন, চলবে না, চলবে না, শিক্ষা না ব্যবসা, শিক্ষা শিক্ষা’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের মুখপাত্র  ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, এই মুহূর্তে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়া ৭ কলেজের সংকট সমাধান করা সম্ভব নয়। গতকালও আমরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু সে বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কোনো নজর দেয়নি। যে কারণে আমরা আজ আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন চলবে।

এর আগে, গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের সমস্যার চিত্র তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা। এরপর একই দাবি জানিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ও ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। একই স্মারকলিপি কলেজগুলোর অধ্যক্ষদেরও দেওয়া হয়। এরপর গত ২২ অক্টোবর সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা রাজধানীর নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলে। বিকেলে সায়েন্সল্যাব মোড়ে কর্মসূচি থেকে ৩ দফা দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সেদিনের মতো কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিকে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই কমিটির প্রত্যাখ্যান করেছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ১. অনতিবিলম্বে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করতে হবে। ২. এই কমিশন বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে ৩০ দিনের মধ্যে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করবেন। ৩. স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কোনো সেশনজট তৈরি হতে পারবে না। যতদিন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন না হবে ততদিন সেশনজট যেন না হয় সেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। তবে  শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অধিভুক্তির আগে ও পরে কলেজেগুলোতে শিক্ষার মানের কোন উন্নতি হয়নি। এ সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত। ফলে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল, তা আট বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বিপরীতে এসব কলেজে শিক্ষার পরিবেশে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। শিক্ষার মানের উন্নতির পরিবর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈষম্যমূলক বিভিন্ন নীতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার যথাযথ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা আরো জানিয়েছে, বর্তমানে সাত কলেজে মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের পরিবেশের অভাব, মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, অবকাঠামোগত সংকট, ল্যাব ও গবেষণার সংকট, শ্রেণিকক্ষের অপ্রতুলতা, আবাসন ও পরিবহন সমস্যা, একাডেমিক ক্যালেন্ডার ও সিলেবাস না থাকা, পরীক্ষা ও পরীক্ষার ফলাফল যথাসময়ে প্রকাশ না করা সহ অসংখ্য সংকটে জর্জরিত। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাতটি কলেজকে নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বা স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানান তারা।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]