বিগত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল বন্যায় কবলিত হয়ে পড়েছে।
সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সাহতা, আসমা, চিরাম ও রায়পুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে শত শত বাড়ি-ঘরে ও রোপিত ফসলী জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে করে আমন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ফসলী জমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে কৃষকদের মাথায় হাত। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের মাঠসহ ছোট ছোট রাস্তা তলিয়ে গেছে। ডুবু ডুবু করছে প্লাবিত ইউনিয়নের অনেক বাড়ি-ঘর ও পুকুর । এরই মধ্যে অনেকের পুকুর ডুবে চাষের মাছ ভেসে গেছে বানের পানিতে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, পাহাড়ী ঢলে কংস, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, কলমাকান্দার উব্দাখালি, গোমাই, বারহাট্টার ধনাইখালি, গোলামখালি দিয়ে উপচে পানি আসার কারণেই এ বন্যা।
আসমা ইউনিয়নের গোড়ল, গাভারকান্দা, হাওতলা, বাহিরকান্দা, ছয়গাও, রৌহা, সাহতা ইউনিয়নের নল্লা বোয়ালাজানা, সাহতা, দরুন সাহতা, গোদাডহর, জয়ডহর, সামানিয়াকান্দা, ডেমুরা, দক্ষিণ ডেমুরা, কদিমচাপারকোনা, চিরাম ইউনিয়নে চিরাম, বাদে চিরাম, খৈকোনা, হরিরামপুর, সাবাদিয়ারবাড়ী, পুটকিয়া, রায়পুর ইউনিয়নের কর্নপুর, রায়পুর, ফকিরের বাজার, ছিচড়াকান্দাসহ অন্যান্য আর অনেক গ্রামপ্লাবিত হয়েছে।
ডেমুরা গ্রামের বিপ্লব বিশ্বাস জানান, আমার ১৫০ শতাংশ জমি অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। সাহতা গ্রামের আক্কাছ মিয়া জানান, এ বছরের শুরুতে আমন ফলস রোপনের খুবই ভাল সময় ছিল। কিন্তু গত দুই দিনের বৃষ্টিতে ও ঢলে আমার রোপিত ৯০ শতাংশ ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গিয়ে আমার মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
রৌহা গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, ছয়গাও মৌজায় ১০০ শতাংশ জমিতে চিনি সাইল ধানের চারা রোপন করেছিলাম। ধানও অনেক ভালো হয়েছিল। কিন্তু দূর্ভাগ্য ক্রমে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, এ বন্যায় আসমা ইউনিয়নের উত্তরাঞ্চলের গ্রাম গুলির অনেক পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে ও রোপিত আমন ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এভাবেই বন্যায় প্লাবিত অন্যান্য ইউনিয়নের কৃষকেরা তাদের আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধনের কথা ব্যক্ত করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি জানান, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়ে এলাকাগুলো আমি পরিদর্শন করেছি। চাহিবামাত্র যেকোনো সহায়তা দিতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছি।