ই-পেপার বাংলা কনভার্টার মঙ্গলবার ● ১৩ মে ২০২৫ ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার মঙ্গলবার ● ১৩ মে ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




আজ বিশ্ব আবাসন দিবস
সারাদেশে আবাসন সংকট নিরসনের অগ্রগতি নেই
সাইদুল ইসলাম :
প্রকাশ: সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৫২ পিএম আপডেট: ০৭.১০.২০২৪ ১:৪৮ পিএম  (ভিজিটর : ২৭০)
আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) বিশ্ব আবাসন দিবস। এ দিবসটি কেন্দ্র করে প্রতি বছর জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বেসরকারি আবাসন কর্তৃপক্ষ নানা অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। এবছরের প্রতিপাদ্য তরুণদের সম্পৃক্ত করি, উন্নত নগর গড়ি। কিন্তু ঢাকাসহ সারাদেশে আবাসন সংকট নিরসনে তেমন কোন অগ্রগতি না থাকায় এ দিবসটি পালন করে কোন লাভ হচ্ছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ সংকট নিরসনে আগের সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও মাঝ পথে থেমে আছে অনেক প্রকল্পের কাজ।

বিশ্বজুড়ে সব মানুষের নিরাপদ ও মানসম্মত বাসস্থান নিশ্চিতের সচেতনতা বাড়াতে ১৯৮৬ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে বিশ্ব আবাসন দিবস পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরের অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার সারা বিশ্বে দিবসটি পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু দিবস পালন করলেই হবে না আবাসন সংকট সমাধানে মন্ত্রণালয়কে জোড়ালো ভূমিকা পালন করতে হবে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে গ্রামে আবাসনের পরিবেশ অনেকটা ভালো অবস্থানে রয়েছে।  আগের মতো মানুষ আর ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে না। এখন ঝুপড়ির পরিবর্তে সেখানে গড়ে উঠছে টিনের ও পাকা ঘর। এভাবে ধীরে ধীরে গ্রামীণ আবাসন ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তবে তার উল্টো চিত্র ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহরগুলোতে। বিশেষ করে শহরের দরিদ্ররা চরম আবাসন সংকটে রয়েছে। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা জমি। আর দুষ্প্রাপ্য এসব জমির দামও আকাশছোঁয়া। ফলে জমির ওপর কোনো ধরনের অধিকার স্থাপন করতে পারে না দরিদ্র শহরবাসী। আর মধ্যবিত্তদের জন্যও আবাসন বড় সমস্যা। যারা ভাড়া বাড়িতে থেকে চাকরি করেন তাদের বেতনের এক-তৃতীয়াংশই ব্যয় হয়ে যায় ভাড়া পরিশোধে। ফলে প্রতি বছরে আবাসন দিবস পালনের পাশাপাশি আবাসন সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেয়ায় আহবান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দিনে দিনে শহরমুখী জনস্রোত বাড়ছে। গ্রামে নিজস্ব আবাসনের ব্যবস্থা থাকা স্বত্ত্বেও অনেকে কাজের সন্ধানে ও আর্থসামাজিক বিভিন্ন সুবিধা যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, যোগাযোগ ব্যাবস্থা, অবকাঠামোগত সুবিধা ইত্যাদি পেতে শহরমুখী হচ্ছে। এছাড়াও কর্মস্থলের কারণে অনেককেই শহরমুখী হতে হয়। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যা ছিলো প্রায় ৪০.৭%, যা ১৯৭৩ সালে ছিলো ৮.৬%। বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ শহর যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৩ হাজারেরও বেশি লোক বাস করে। জনসংখ্যার বিচারে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এভাবে দ্রুত নগরায়ন বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগনকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রতি বছর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বিশ্ব বসতি দিবস উদযাপন করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোকে উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্য ইতিমধ্যে সুদূরপ্রসারী বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে এই মন্ত্রণালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৯৭ থেকে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র ব্যারাক, ফ্ল্যাট, বিভিন্ন প্রকার ঘর মোট ৫ লক্ষ ৭ হাজার ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার মাধ্যমে তাদেরকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সরকার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শহরের বস্তিবাসী ও স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাটে বসবাসের ব্যবস্থা করছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকায় বস্তিবাসী ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এক হাজার একটি ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে ৩০০টি ফ্ল্যাট এরই মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবুও রাজধানীসহ সারাদেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত্বদের পাশাপাশি কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সংকট রয়েছে এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে এ সংকট নিরসনে আগের সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও মাঝ পথে থেমে গেছে অনেক প্রকল্পের কাজ। 

জানা গেছে, আবাসন সংকট নিরসনে মধ্যেবিত্ত্বদের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (এনএইচএ) একের পর এক আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করছে। কিন্তু প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের তেমন অগ্রগতি নেই। নানা জটিলতায় অধিকাংশ প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন করতে পারেনি বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, রাজধানী ও এর বাহিরের বিভিন্ন স্থানে বছরের পর বছর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে এনএইচএর শত শত একর জমি। ২০০৪ সালে তৎকালীন সরকারের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এসব জমি উন্নয়ন করে দেশে বিদ্যমান আবাসন সমস্যা সমাধান কিংবা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশত প্রকল্প বাস্তবায়নের আনুসঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুই একটি ছাড়া কোন প্রকল্পই বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে আবাসন সংকটও দূর হচ্ছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  জাতীয় গৃহায়ণের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ নুরুল বাসির বলেন, সব আবাসন প্রকল্পের অবস্থা একই সেটা বলা যাবে না তবে নানা জটিলতায় কয়েকটি প্রকল্পের কাজ হয়তো ধীর গতি থাকতে পারে।  আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত সব প্রকল্পের কাজ শেষ করতে কাজ চলছে। 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]