প্রকাশ: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪, ৫:৪০ পিএম আপডেট: ০৬.১০.২০২৪ ৫:৪২ পিএম (ভিজিটর : ১২৭)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অভ্যত্থান পরবর্তি ছাত্র রাজনীতির নতুন রূপরেখা তৈরিতে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ পরিবর্তন করার প্রস্তাব এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ নির্দলীয় প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে। তারা বলেন, ডাকসুর সংবিদানে আনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নির্বাচিত নেতাকর্মীদের উপর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ করার মতো সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা ডাকসুর সংবিদানের এসব সীমাবদ্ধতাই ছাত্র রাজনীতির সংকট এবং ক্ষমতসীনদের সৈরাচারী ভূমিকায় নিয়ে যায়।
শনিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষসহ ক্রিয়াশীল সকল ছাত্ররাজনৈতিক দলের একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে আয়োজিত “ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ: সংস্কারের রূপরেখা” শীর্ষক অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীরা এমন প্রস্তাব রাখেন। প্রথম পর্বের এই নীতি নির্ধরনী প্রোগ্রাম আয়োজন করেন সোশাল সাইন্স ইন প্রক্সিস।
প্রক্সিস ডায়ালডের প্রথম পর্বে ছাত্র দলের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মলি্লক ওয়াসি উদ্দিন তামী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার, ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমনুল হক। ইসলামী ছাত্র শিবিরের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হোসাইন আহমেদ জুরায়ের এবং নির্দলীয় প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আব্দুল্লাহ। বিপ্লবি ছাত্র মৈত্রি প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রিয়াদ, বিপ্লবি ছাত্র-যুব আন্দোলনের পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় সংগঠক নাইম উদ্দীন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়েনের পক্ষে দলটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু। এছাড়া নির্দলীয় প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিশিতা জামান নিহা ও তানজিনা তাম্মিম হাফসা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ ও সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে নির্দলীয় প্রতিনিধি আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আব্দুল্লাহ বলেন, আমি ডাকসুর অধ্যাদেশটা পুরো পড়েছি। এখানে এতো পরিমাণ গোজামিলে ভরা যে তারা বলার অধিকার রাখে না। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির নতুন বন্দোবস্তের জন্য নতুন সংবিদান প্রণয়ন না করা হলে ক্যাম্পাসে সকল রাজনৈতিক দলের যে সহ অবস্থানের কথা আমরা বলি তা কখনও সম্ভব হবে না।
তিনি আরো বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ কোন সমাধান নয়। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ ফজলুল হক মুসলিম হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে তোফাজ্জল হত্যাকান্ড। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে যে বিষয়টা দাড়াবে তা হলে, রাজনীতির দলগুলো সাধারণ শিক্ষার্থী মোড়কে নানা অপকর্ম করার বৈধতা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়েনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, আমরা ১৮ সালের ডাকসু নির্বাচন দেখেছি। কিভাবে কি হয়েছে সব চোখের সামনেই দেখা। টানা আট ঘন্টা দাড়িয়ে থেকেও আমি ভোট দিতে পারিনি। তারপর যখন আমরা কতিপয় কয়েকজন নেতা পেলাম; যখনই তাদের কাছে সমস্য নিযে যাই তারা আমাদের বলেন, এটা তাদের হাতে নেই। সিস্টেম যখন নির্বাচিত প্রতিনিধির হাত বেঁধে দেয় তখন এই ডাকসু দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেশি স্বপ্ন দেখা বোকামী ছাড়া কিছু না। এই অধ্যাদেশের পরিবর্তনই কেবল নতুন রাজনীতির বন্দোবস্ত করতে পারে।
অনুষ্ঠান শেষে স্রোতাদের জন্য বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের কাছে বিশেষ প্রশ্নউত্তর পর্ব রাখা হয়।