প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪, ৬:২৬ পিএম (ভিজিটর : ১৮৩)
রাজধানী ঢাকার মিরপুরে মাত্র ২৫ একর জায়গা নিয়ে সরকারি বাঙলা কলেজের অবস্থান। কলেজটি ১৯৬২ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়। ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকে ধারণ করে বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার্থে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এটি।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ৬২ পেরিয়ে ৬৩ বছরে পদার্পণ করেছে ইতিহাস ঐতিহ্যের এই কলেজটি। কলেজটিতে উচ্চমাধ্যমিকসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে কলেজটিতে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
বাঙলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম এই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৫ সালে কলেজটিকে সরকারিকরণ করা হয় এবং ১৯৯৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে কলেজটির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হতে কলেজটির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।
১৯৬৪ সালে বাঙলা কলেজ মিরপুরে স্থানান্তরিত হয়। এর আগে প্রতিষ্ঠাকালীন বছরে এর ক্লাস হতো নবকুমার ইনস্টিটিউটে রাতের শিফটে। ‘বাঙলা কলেজ’ স্থাপনের উদ্যোগকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য ‘বাঙলা কলেজ প্রস্তুতি কমিটি’ গঠন করা হয়।১৯৬১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে কমিটির প্রথম সভা হয়। পরবর্তী সভাগুলো ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং ১৮ জুন একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারির সভায় আবুল কাসেম উত্থাপিত প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। প্রস্তাবটি ছিল- ‘বাঙলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে অবিলম্বে ঢাকায় একটি বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হউক’। অবশেষে ১৯৬২ সনের ৪ মার্চ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অবস্থিত রাইটার্স গিল্ড ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় ‘বাঙলা কলেজ’ প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত হয়। অধিকাংশ সভায় সভাপতিত্ব করেন ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রশাসনিক ভবনের নিচের রুমগুলোকে টর্চারসেল হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এখানে আটকে রেখে মেয়েদের ধর্ষণ করা হতো, ধর্ষণের পরে হত্যা করে সামনে থাকা জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হতো। অধ্যক্ষের বাসভবনের যাওয়ার রাস্তার গাব গাছ ও বাসভবনের আশেপাশে থাকা আমগাছের শিকড়ের উপর মানুষ জবাই করা হতো।
বর্তমানে বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান এবং উপাধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক মিটুল চৌধুরী দায়িত্ব পালন করছেন। প্রায় ২৫ একর জায়গার ওপর নির্মিত বাঙলা কলেজে ১৯টি বিভাগ রয়েছে। কলেজটিতে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেমন- একাডেমিক ভবন, গ্রন্থাগার, ল্যাব, আবাসিক হল, বাস, মসজিদ, অডিটোরিয়াম, সুবিশাল খেলার মাঠ ইত্যাদি। এছাড়া কলেজে রয়েছে সুবিশাল একটি পুকুর ও অনেকগুলো ফুলের বাগান যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধন করে।